• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

সালাহউদ্দিনকে বাঁচাতে খোদ খালেদা জিয়ার তদবির-যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের চেষ্ঠা


প্রকাশিত: ২:৩২ পিএম, ১৯ মে ১৫ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৫৩ বার

sala------------ শিলং থেকে প্রদীপ কুমার শীল:  ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের চেষ্ঠা তদবির চালাচ্ছেন বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা।এজন্য তাঁরা ভারত সরকারের ওপর মহলে তদবির তদবির চালাচ্ছেন। তাঁদের টার্গেট রাজনৈতিক আশ্রয় মিললে পরে সালাহউদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হবে।এজন্য খোদ খালেদা জিয়া তদবির করছেন।

সালাহ উদ্দিনকে সিঙ্গাপুরে নিতে প্রস্তুতি-
বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আইনি পরামর্শ করছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। শিলং সিভিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই পরামর্শ করা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন হাসিন আহমেদ। মেঘালয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে বিভিন্ন আইনি সমস্যা মোকাবিলার জন্য রাজ্যটির হাইকোর্টের আইনজীবী এসপি মহন্তকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হাসিনা আহমেদ ও বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ওই আইনজীবীর সঙ্গে এরই মধ্যে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও জানিয়েছে শিলংয়ের গণমাধ্যমগুলো।

 

 

 

 

 

এদিকে গতকাল  সালাহ উদ্দিনকে গতকাল সকালে হাসপাতালের আসামিদের ওয়ার্ড থেকে সিটি স্ক্যানের জন্য হাসপাতালের মূল ভবনে নেওয়া হয়। ১৫ মিনিট পর তাঁকে আবার ওয়ার্ডে ফেরত নেওয়া হয়। দুই ভবনে যাওয়ার মাঝপথে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশি পাহারায় সিটি স্ক্যান করতে হেঁটে যাওয়ার সময় তাঁকে বেশ দুর্বল দেখাচ্ছিল। পুলিশের সহায়তা নিয়েই হাঁটছিলেন তিনি। তবে তাঁর শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।

১১ মে ভোর থেকে শিলংয়ে আটক থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকর্মীদের বললেন, ‘আমার চোখ তো বাঁধা ছিল। হাত বাঁধা ছিল। একটা লং জার্নি। মনে হয়, ১২-১৪ ঘণ্টা হবে। দুই ঘণ্টার হয়তো স্টপেজ ছিল। তারপর শিলং গলফ কোর্সের পাশে ওরা আমাকে ফেলে রেখে যায়। আমি তখন চোখ খুলে দেখেছি। কিছু লোককে বললাম, আমাকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাও অথবা পুলিশে খবর দাও। তারা পুলিশে কল করল। আমার হিস্ট্রি বলার পর তারা মনে করল, আমি বোধ হয় মেন্টাল পেশেন্ট।’
সালাহ উদ্দিন আহমদ বললেন,  দেশে তো এখন ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। এটা সরকারের উচিত হয়নি। আমি তো কোনো সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি নই। তো কেন এটা করা হয়েছে, আমি তো জানি না।—স্থানীয় লোকজনই কি আপনাকে থানায় নিয়ে গিয়েছিল?
আমি লোকজনের হেলপ চাই। তারাই ফোন করে পুলিশকে নিয়ে আসে। টহল পুলিশ আসে। তখন আমি তাদের সাথে গিয়েছি।
আমার অবস্থা ভালো না। শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। স্পাইনাল কর্ড ও ব্যাক পেইন হচ্ছে।

এদিকে গতকাল রাতে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে অবস্থিত সিভিল হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পর সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি তৃতীয় কোনো দেশে যেতে চান। প্রায় আড়াই মাস পর সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর দেখা হলো। হাসিনা আহমদ স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত সিভিল হাসপাতালে স্বামীর ওয়ার্ডে ছিলেন।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে হাসিনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ভারত সরকারের কাছে খুব কৃতজ্ঞ। সাথে এখানকার স্থানীয় প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও খুব বেশি কৃতজ্ঞ। কারণ, তারা আমার স্বামীকে আশ্রয় দিয়েছে এবং তাঁকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। আমার স্বামী খুব বেশি অসুস্থ। আমরা চেষ্টা করব ওনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

আইনগত বিষয় নিয়ে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে হাসিনা আহমদ বলেন, ‘উনি যেহেতু অসুস্থ, তাই ওনার সঙ্গে আজ খুব বেশি কথা বলতে পারিনি। সকালে আমি আবার আসব। ওনার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি ঠিক করব। কাল আসার সময় আইনজীবী নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’

হাসিনা আহমদ চলে যাওয়ার পর সালাহ উদ্দিনের চিকিৎসক হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ জি কে গোস্বামীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, আজ সকালে তাঁর সিটি স্ক্যান করার পর বিকেলে আরও কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে।তবে সালাহ উদ্দিন আহমদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোয় দেরি হতে পারে বলে জানা গেছে।

মেঘালয়ের ইংরেজি দৈনিক শিলং টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মেঘালয় পুলিশ চাইছে সালাহ উদ্দিনকে ফেরত পাঠাতে আইনি প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব শেষ হোক। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। তা ছাড়া, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সালাহ উদ্দিনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করবে বিএসএফ। তবে বিএসএফ জানায়, সালাহ উদ্দিনের ফেরতের বিষয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। মেঘালয়ের পুলিশপ্রধান রাজীব মেহতাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরই ভারতীয় পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে আদালতে হাজির করতে পারে।
মেহতা বলেন, আদালতই ফরেনার্স অ্যাক্ট লঙ্ঘন করার বিষয়ে বা তাঁকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। এখন আমাদের দায়িত্ব সালাহ উদ্দিনকে আদালতের সামনে হাজির করা। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো নির্দেশ আসে, সেটিও আমরা আদালতের সামনে তুলে ধরব।’