সাবাস ক্রোড়পতি-ফেলে যাওয়া দেড় কোটি টাকার গাড়ির কাহিনী
দিনা করিম : প্রায় দেড় কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল একটি গাড়ি গোপনে সিলেটের শুল্ক গোয়েন্দা অফিসের সামনে ফেলে রেখে গেছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। সিলেট শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে গতরাত দুইটার দিকে গাড়ির মালিক তার লেক্সাস ২০০৭ মডেলের গাড়িটি রেখে যান।
গাড়ির মালিক গাড়িতে একটি চিঠিও রেখে গেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, তিনি ৪৯ বছর যাবত লন্ডন প্রবাসী এবং দীর্ঘদিন ধরে ফরেন ইনভেস্টর হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করছেন। ২০১১ সালে তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’(এমন সুবিধা যার মাধ্যমে দ্বৈত পাসপোর্টধারী এবং বিদেশী পাসপোর্টধারী ব্যক্তি শুল্ক পরিশোধ ছাড়া বিদেশ থেকে গাড়ি এনে এক বছরের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।)
সুবিধার আওতায় এক বছর মেয়াদের জন্য লেকসাস গাড়িটি বাংলাদেশে আনেন। তখন তার আশা ছিলো প্রতি বছর মেয়াদ শেষে গাড়িটি রি-নিউ করার সুযোগ পাবেন।কিন্তু কিন্তু সে সুযোগ না পাওয়ায় ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ হয়ে গাড়িটি শুল্ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।
এদিকে সিলেটের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, ‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধার আওতায় অনেক দ্বৈত এবং বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে গাড়ি এনে এক বছরের পরিবর্তে বছরের পর বছর ব্যবহার করছে। কিন্তু এক বছরের বেশি ব্যবহার করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
আর এটি যাচাই করতে সম্প্রতি বাংলাদেশের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ সম্প্রতি একটি অভিযান শুরু করেছে। আর এই অভিযানের ভয়েই ওই ব্যক্তি গাড়ি ফেলে গেছেন বলে ধারনা কর্মকর্তাদের।তবে শুল্ক বিভাগ জানিয়েছে, গাড়ি ফেলে যাওয়ার এই ঘটনাকে তারা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। শুল্ক বিভাগও গাড়িটি তাকে ফিরিয়ে দিতে চায়।
কেননা ওই ব্যক্তি সুযোগমতো শুল্ক পরিশোধ করবেন বলে চিঠিতে বলেছেন।তিনি চিঠিতে আশা প্রকাশ করেছেন, শুল্ক বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধের পর তিনি গাড়িটি ফেরত নেবেন।শুল্ক কমিশনার প্রভাত সিংহ বলেছেন, এই গাড়ির মালিককে তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করবেন।
তিনি বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। আমরা এ ঘটনাটিকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছি। সাধারণত কেউ এ ধরনের কাজ করে না।