• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সাবাব কাহিনী:কি নোয়াখালী রাজনীতি!


প্রকাশিত: ৬:২৩ পিএম, ২৪ জুন ১৮ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৮০ বার

 

 

25152398_1690347414351145_3075066807929066845_nবিশেষ প্রতিনিধি :  ফের চমক নোয়াখালীর এমপি একরামের! তিনি জাতিরকন্ঠকে বললেন, আমার ছেলে শাবাব আমাকে রাজনীতিতে সহায়তা করছে এটা সহ্য হচ্ছেনা কুচক্রিমহলের। ফলে ক’দিন আগে নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফেরা ছেলেটার পিছু নিয়ে ওকে এখন অপরাধী বানানোর পাঁয়তারা করছে। আসলে ওইদিন তো ও ছিলো সুবর্ণচরে। এলাকার সব মানুষ দেখেছে। আপনারও এসে এলাকার মানুষের কাছে শুনে যান।তারপর লিখুন..।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগেও নোয়াখালীর রাজনীতিতে চমক সৃষ্টি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী। তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য।  ২০০৪ সালের ২৩ জুলাই গোপন ব্যালটে বিপুল ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এই সপ্sabab-mp akram-www.jatirkhantha.com.bdরতিভ ও গণমুখী তরুণ নেতা একরাম চৌধুরী। সেবারই প্রথমবারের মতো এই পদে গোপন ব্যালটে নির্বাচন হয়।

তার ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে এলাকার আবাল বৃদ্ধবনিতা সংগঠনের কাজে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সংগঠনকে ধীরে ধীরে একটি দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে আসেন তিনি। ফলে ‘বিএনপির দুর্গ’ নামে পরিচিত নোয়াখালী হয়ে যায় আওয়ামী লীগের দুর্গ ।
স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের এরকম অর্জন আগে কখনো দেখা যায়নি।

সাধারণ মানুষের ধারণা, ওবায়দুল কাদেরের দিক-নির্দেশনায় একরাম চৌধুরীর গতিশীল নেতৃত্বের ফলেই এ সাফল্য ধরা দিয়েছে। ২০০৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বগ্রহণের পর প্রতিটি গ্রাম, পাড়া, মহল্লাসহ দুর্গম চরাঞ্চলে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে খোঁজখবর নিতে শুShabab-Karim-www.jatirkhantha.com.bdরু করেন তিনি। একই সঙ্গে চালাতে থাকেন দল পুনর্গঠনের কাজ। এতে নেতা-কর্মীরা উদ্দীপ্ত হন, তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় প্রাণচাঞ্চল্য।

জননেতা আবদুল মালেক উকিলের মৃত্যুর পর নোয়াখালী হয়ে ওঠে বিএনপির ঘাঁটি। সেই ঘাঁটিতে একরাম চৌধুরী হানা দিলেন, ধীরে ধীরে দলকে করলেন সক্রিয় ও সতেজ। নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার নেতৃত্বে কাজ করায় এখানে কোনো রকম গ্রুপিং সৃষ্টি হতে পারেনি।

এরই পরিণতিতে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দেখা গেল ২৪ বছর আগে নোয়াখালীতে আবদুল মালেক উকিলের হারানো সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার হয়েছে। ওই আসনেই নির্বাচিত হলেন একরাম চৌধুরী। এটাও তার এক চমক।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী জেলা শহরসহ পুরো নোয়াখালীকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত করে অনন্য নজির গড়েন।

Shabab-Karim-www.jatirkhantha.com.bd.00খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যখন জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালাচ্ছিল, তখনও তিনি রাস্তায় ওইসব সহিংসতা প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ওই সময়ে অনেক সংসদ সদস্যকে মাঠে খুঁজে পাওয়া না গেলেও একরামুল করিম চৌধুরী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মাঠে-ময়দানে থেকেছেন। সন্ত্রাসবিরোধী কার্যকলাপে সহায়তা হিসেবে নিজের টাকায় পুলিশকে ২টি গাড়ি কিনে দিয়েছেন।

ওই সময়ে দলের জেলা অফিস জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা জ্বালিয়ে দেয়। পরে, নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে দলীয় অফিসের জন্য দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ভবন নির্মাণ করে দেন একরাম চৌধুরী। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন উদ্যমে আবার কাজ শুরু করেন। তার প্রতিশ্রুত অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে থাকেন।

২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তাকে আবারও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। এরপর তিনি তার সব উপজেলা পর্যায়ে দলকে চাঙ্গা করতে থাকেন। তার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে এবারে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জেলার ৮ পৌরসভার প্রত্যেকটিতে এবং ১১০ ইউনিয়নের মধ্যে এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হওয়া সবকটিতে জয়লাভ করেন।
ষড়যন্ত্রের শুরু এখান থেকেই।

Shabab-Karim-www.jatirkhantha.com.bd.12নোয়াখালীর এই প্রিয় নেতা একরাম চৌধুরীকেই  এবার ফাঁপরে ফেলার চেষ্ঠা করা হচ্ছে তার একমাত্র ছেলে শাবাবকে নিয়ে। বলা হচ্ছে গাড়িচাপায় পথচারী নিহতের ঘটনায় এই এমপি পুত্র সাবাব দায়ী!কিন্তু গাড়িচাপায় পথচারী (সেলিম) নিহতের ঘটনায় আলোচনায় আসা এমপি পুত্র সাবাব চৌধুরী দাবি করেছেন, ওই দিন তিনি শুধু ঘটনা স্থলেই নয় ঢাকাতেই ছিলেন না। তার দাবি, একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ কারার উদ্দেশ্যে তাকে টার্গেটে পরিণত করছে। তারা তাকে এবং তার পরিবারকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৯ জুন) তিনি নোয়াখলীতে অবস্থান করছিলেন। প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ভিডিও ও স্থিরচিত্রও।
গত ১৯ জুন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহাখালী ফ্লাইওভারের কাছে সেলিম ব্যাপারী নামে এক পথচারী নিহতের ঘটনায় নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র সাবাব চৌধুরীকে জড়িয়ে সংবাদ আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

এ প্রসঙ্গে সাবাব বলেন, ১০ জুন থেকে আমি নোয়াখালীতে ছিলাম। ঘটনার দিন ১৯ জুন রাত ৯টা পর্যন্ত আমি নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আমার নামে উদ্বোধন করা একটি ঘাট পরিদর্শন করেছি। সেখানে হাজার হাজার মানুষ ছিল। তারা আমাকে দেখেছে। হাজার হাজার মানুষ সাক্ষী আছে, আমি তখন নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ছিলাম। এখানে লুকোচুরির কিছুই নাই। আমি বাবার একমাত্র ছেলে। আমি রাজনীতিতে সময় দিচ্ছি। তাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধংস করার জন্য এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।

Shabab-Karim-www.jatirkhantha.com.bd.22তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও কেউ তার বক্তব্য নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন: বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলেও কেউই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি, আমার বক্তব্য ছাড়াই সংবাদ পরিবেশন করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যে প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তিনি আমাকে চেনেন এবং আমাকে প্রায়ই গুলশান বনানীতে গাড়িসহ আড্ডা দিতে দেখেছেন, তা অবিশ্বাস্য।

কেননা, দীর্ঘদিন থেকে পড়াশুনার জন্য নিউজিল্যান্ড থাকার পর খুব অল্প সময় হলো তিনি দেশে এসেছেন। তাও ঢাকাতে তেমন একটা হয়নি। বাবা একরামের ইচ্ছায় রাজনীতিতে সময় দিতে অধিকাংশ সময় থাকছেন নোয়াখালীতেই।তারপরও যদি তাকে নিয়ে সন্দেহ থেকেই থাকে ওই দিন মহাখালীর আশে-পাশের রাস্তার সিসিটিভি’র ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

ঘটনাস্থলে একটি গাড়ির নাম্বার প্লেট পড়েছিলো যা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। পরে বিআরটিএ থেকে জানা যায়, গাড়িটি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী কামরুন্নাহার শিউলির নামে রেজিস্ট্রেশন করা।

কামরুন্নাহার শিউলি কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ওই দিন গাড়িটি চালিয়ে উত্তরা থেকে ধানমন্ডি আসছিলেন গাড়ি চালক নুরুল আলম। ওই ঘটনার পর থেকে গাড়ি চালক নুরুল আলম পলাতক রয়েছে।যেহেতু তাদের পরিবারে গাড়িতেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সেলিম ব্যাপারী’র (৪৫) মৃত্যু হয়েছে তাই নিহতের পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন সাবাব।

সাবাবের বাবা বলেন, আমি মানবতার পক্ষে ওই নিরীহ পরিবারটির জন্যে সর্বাত্মক সহযোগীতা করব। তারপরও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ওই গাড়িচালক যেহেতু পলাতক ও ধরা পড়লে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।