সাদা পোশাকধারীর কবলে আ.লীগ ছাত্রলীগ ও যুবদলের ৪ নেতা গুম
সরেজমিনে সাইফুল বারী মাসুম : : সাদা পোশাকধারীর কবলে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবদলের চার নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহীনির পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিখোঁজরা হলেন: সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডল, নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স, দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা।
গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহীনির পরিচয় দিয়ে তাদের তুলে নেয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখেছেন পুলিশের কেউ তাদের আটক কিংবা তুলে নিয়ে যায়নি। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
খোঁজ না পাওয়ায় চরম আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে পারছে না জেলার পুলিশ, র্যাব বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা জানিয়েছেন এমন পরিচয়ের কাউকেই তারা আটক করেননি। মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডলের বাবা গোলাম মোস্তফা বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে জিম সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের কৃষি ব্যাংক মোড় থেকে তার (টিভিএস এপাচি) মোটরসাইকেলে করে নলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়নের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দেন।
পথিমধ্যে লালবাজার নামক এলাকা থেকে তিনি সাদেকুল ইসলাম সাদেককে মোটরসাইকেলে তুলে নেয়। এরপর বিভিন্নস্থানে খোঁজখবর নিয়েও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
জীম মন্ডলের পরিবারের ধারণা সাদা পোশাকধারী কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহীনির লোকজন তাদের পথরোধ করে মোটরসাইকেলসহ দু’জনকে তুলে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনার পর থেকে তাদের দু’জনের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মাইদুল ইসলাম প্রিন্সের ভাই তরিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির পরিচয় দিয়ে কয়েকজন নলডাঙ্গা রেলগেট এলাকা থেকে প্রিন্সকে মোটরসাইকেলসহ তুলে নিয়ে যায়। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তার কোনো খোঁজ পায়নি।
শফিউল ইসলাম শাপলার বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার ১১টার দিকে নলডাঙ্গার কাচারী বাজার এলাকায় শাপলা অবস্থান করছিলো। এসময় হঠাৎ কয়েকজন তাকে কার্ড দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্য পরিচয় দেয়। পরে তারা তাকে তুলে নিয়ে যায়।
সাদুল্যাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ ইমরুল কায়েস বলেন, তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জেনেছেন।
বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহীনির কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কারো পরিবার কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। এসব পরিবারকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।