সাত খুন-জান বাঁচাতে তারেক সাঈদের নানা ফন্দিফিকির
সাইফুল বারী মাসুম : সাত খুনের ঘটনায় করা একটি মামলা বাতিল চেয়ে সাবেক র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। ওই ঘটনায় নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পালের করা মামলার বিরুদ্ধে এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালতে তারেক সাঈদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান।ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান বলেন, “আদালত আবেদনের যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন।”
হাই কোর্ট খারিজ করে দিলেও এই আদেশের বিরুদ্ধে তারেক সাঈদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর মধ্যে আপিলের আবেদন জমা দিয়েছেন তার আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া।
তিনি বলেন, “কাল চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।”
হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এর আগে ৭ মার্চ এ আবেদন শুনতে ‘বিব্রত’ বোধ করলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চে পাঠান।
ওই দিন শুনানিতে গোলাম কিবরিয়া বলেন, “একই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলার দুটি চার্জশিটে অভিযোগ একই, তদন্ত কর্মকর্তা, সেকশন ও সাক্ষী একই। চার্জশিটের সিরিয়াল নম্বরও একই। একটি ঘটনায় একটি মামলা হতে পারে, একাধিক নয়।”
অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান বলেন, “তারেক সাঈদ মামলা থেকে অব্যাহতির দরখাস্ত দিলে নিম্ন আদালতে তা খারিজ হয়। এরপর সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এখন সাক্ষ্য চলছে। সোমবার সাক্ষ্যের দিন রয়েছে, আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এ পর্যায়ে মামলা বাতিল হতে পারে না।”
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।
এরপর নজরুল ও তার চার সহযোগীকে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি একটি এবং চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমকে হত্যার ঘটনায় বিজয় কুমার অন্য মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুই মামলারই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।