সরকার কি ৩৫ পয়সার কাঙ্গাল?
বিশেষ প্রতিনিধি : সরকার কি ৩৫ পয়সার কাঙ্গাল? তা না হলে কি এমন জরুরী হলো যে বিদ্যুতের দাম মাত্র ৩৫ পয়সা বাড়াতে হবে? অভিজ্ঞ মহল বলছেন, সামনে নির্বাচন, এই মূহুর্তে সরকারের উচিত জনকল্যানমুখী পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের আস্থা-ভালবাসা বজায় রাখা। কিন্তু সরকারের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি মহল শেখ হাসিনা’র ক্লিন ব্যক্তি ইমেজ, ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন, একটি খামার একটি বাড়ি, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোর মত বহুবিধ জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ ম্লান করে দিতে বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বাড়াচ্ছে।
এমনি সরকারের দোষ ধরতে বিরোধী শক্তিরা অস্থির থাকে। সেক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হরতাল ডেকে বামরা ‘বাহবা’ কুড়িয়ে সরকারকে গণবিরোধী সাজানোর পাঁয়তারা করছে। ওদিকে বিএনপি জোট’ও ইতিমধ্যে বগল দাবাচ্ছে। তারাও সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করতে পরিকল্পনা অাঁটছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় সংসদে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গৃহকর বৃদ্ধিসহ সব ধরনের মূল্য বৃদ্ধি রোধে সংসদ সদস্যগন শেখ হাসিনার দৃষ্ঠি আকর্ষন করেছিলেন।
নেত্রী’ও ওই সময় বিষয়টিকে পজেটিভ দৃষ্ঠিতে দেখেছেন। এরই মাঝে বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বাড়ানো হলো ?? এটা কি শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর পদক্ষেপ হলো? মানণীয় রাষ্ট্রনায়ক এবার আপনিই বিচার করুণ এবং জনকল্যাণে পদক্ষেপ নিন। মনে রাখবেন, আপনার দূরদর্শী রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা, জনগনের ভালবাসার আস্থা নস্যাত করার তৎপরতা এসব করছে। জনগন হয়তো ৩৫ পয়সা ঠিকই দেবে কিন্তু এর রেশ তুলবে..। ওদিকে নানা অপশক্তি’ও বসে নেই: কাজেই সাধু সাবধান!!
জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আধাবেলা হরতাল ডেকেছে দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক চন্দন সিদ্ধান্ত স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল আহ্বান করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চাভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো।
এর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের দাম ফের বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসি। গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা বাড়ানো ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে এই দর কার্যকর হবে।২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ বছরে খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে ৭ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। মাঝে দুই বছর বিরতি দিয়ে আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো।
সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি জানায়, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর নিট বিদ্যুৎ বিতরণ খরচ বৃদ্ধি বিবেচনায় সব বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ও কোম্পানির বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার ৩৫ পয়সা করে বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ এ বৃদ্ধির হার গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত সেপ্টেম্বরে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে শুনানির আয়োজন করে। সেখানে পাইকারিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৬ থেকে সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব আসে।
এর মধ্যে ডিপিডিসি গ্রাহক পর্যায়ে ৬.২৪ শতাংশ, ডেসকো ৬.৩৪ শতাংশ, ওজোপাডিকো ১০.৩৬ শতাংশ, আরইবি ১০.৭৫ শতাংশ এবং পিডিবি ১৪.৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়।বিইআরসি জানিয়েছে, বিদ্যুতের দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে সব শ্রেণির গ্রাহকের স্বার্থ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর আর্থিক প্রভাব, বিত্তহীন ও নিম্নবিত্তহীনসহ সব গ্রাহকের ওপর আর্থিক চাপ হ্রাস- সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে সমাবেশে এ হরতালের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছিল। ওই সমাবেশে নেতারা বলেছিলেন, কোনো অবস্থাতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা চলবে না।