• শনিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সরকারি খলনায়ক এমপি সুবিদ আলী বেঈমান না মিরজাফর ?


প্রকাশিত: ১:১০ পিএম, ১৮ আগস্ট ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৪৬ বার

শফিক রহমান   :   এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়া বেঈমান না মিরজাফর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। MP-SUBID-ALI-BHUYAN-www.jatirkhantha.com.bdতাঁরা জাতিরকন্ঠকে বলেছেন, সুবিদ আলী ভূঁইয়া বিএনপির আমলে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বিএনপির মনোনয়ন চেয়েও পাননি।

২০০১ সালে কুমিল্লা-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। এরপর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০৮ সালে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।

subid ali-www.jatirkhantha.com.bd-কিন্তু সুবিদ আলী দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতার মর্যাদা রাখেননি। তাঁরা এখনও বিএনপি থেকে সুবিধা নিতে খুনী জিয়ার গুনগান গাচ্ছেন। এই ধরনের সুবিধাবাদীদের এখনই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান নেতাকর্মীরা।

অাওয়ামী লীগের চার সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান, নুরুল মজিদ হুমায়ুন, আবদুর রউফ ও নাভানা আক্তার জানান, সুবিদ আলীর মতো সুবিধা নিতে বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনে জামায়াত-শিবিরসহ অন্য মতাদর্শের অনেকেই ঢুকে পড়েছেন। এদের শনাক্ত করা উচিত।

এর আগে বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে তোপের মুখে পড়েন সরকারি দলের সুবিদ আলী ভূঁইয়া। এ সময় তাকে আওয়ামী লীগের আদর্শের পরিপন্থী বলে তীব্র ভর্ৎসনা করেন দলের অন্য সদস্যরা।

subed_ali mp-www.jatirkhantha.com.bdতারা বলেন, সুবিদ আলী ভূঁইয়ার মতো সুবিধা নিতে জামায়াত-শিবিরসহ ভিন্ন মতাদর্শের অনেকেই বর্তমানে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছেন।বুধবার সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে।বৈঠকে উপস্থিত থাকা সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক জাতিরকন্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সুবিদ আলীর সঙ্গে সংসদ সদস্যদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলেও বৈঠকের আরেকটি সূত্র জানায়।এ বিষয়ে জানতে সুবিদ আলী ভূঁইয়ার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।এছাড়া ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত ড. ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক প্রকাশনায় জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি লেখা হলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সূত্র জানায়, কমিটির বৈঠকে সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে তিনি (মানিক) জানতে চান, ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকাতে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর মতে, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় তাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। কিন্তু ইউজিসি তো এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইতে পারে।

তখন ইউজিসির চেয়ারম্যান কিছু বলার আগেই সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। এখানে কোনো ভুল নেই। এটা তিনি তার (সুবিদ আলী) বইতেও লিখেছেন।এরপরই শুরু হয় উত্তেজনা। এ সময়ে মুহিবুর রহমান মানিক ও নুরুল মজিদ হুমায়ুনের সঙ্গে সুবিদ আলীর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। অন্য সদস্যদের সমালোচনার মুখেও সুবিদ আলী তার অবস্থানে অনড় থাকেন। পরে সংসদীয়  কমিটির সভাপতি শওকত আলীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সূত্র জানায়, সুবিদ আলীর এ দাবির তীব্র বিরোধিতা করেন চার সংসদ সদস্য- মুহিবুর রহমান, নুরুল মজিদ হুমায়ুন, আবদুর রউফ ও নাভানা আক্তার। তারা সুবিদ আলীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি তো জিয়ারই সৈনিক। আপনার কুমিল্লা-১ আসনে বিএনপির বড় নেতা মোশাররফ হোসেন। যে কারণে বিএনপির মনোনয়ন পান না। তাই সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য আপনি এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছেন।

বৈঠকে সভাপতির উদ্দেশে ওই চার সংসদ সদস্য প্রায় একই সুরে বলেন, সুবিদ আলীর মতো সুবিধা নিতে বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনে জামায়াত-শিবিরসহ অন্য মতাদর্শের অনেকেই ঢুকে পড়েছেন। এদের শনাক্ত করা উচিত।জানা গেছে, বর্তমান সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী।

তিনি বিএনপির আমলে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বিএনপির মনোনয়ন চেয়েও পাননি। ২০০১ সালে কুমিল্লা-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। এরপর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।

নবম সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। এবার দশম সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি হন তিনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে সুবিদ আলী ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান  সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে ক্যাপ্টেন হিসেবে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হন। যেখানে জিয়াউর রহমানও ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে জিয়ার অধীনেই যুদ্ধ করেছিলেন সুবিদ আলী।