• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

সমাজের সকল অশান্তি দূর করতে ইসলামকে গ্রহণ করতে হবে-পীর সাহেব চরমোনাই


প্রকাশিত: ৯:২৫ পিএম, ১৯ এপ্রিল ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২৩ বার

বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, মানুষের জীবনে চলার পথে এমন কোনো সমস্যা নেই, যার সমাধান ইসলাম দেয়নি। আল্লাহ যেহেতু মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তাই তার দেয়া নিয়মাবলী অনুযায়ী চললেই কেবল মানবজীবনে শান্তি আসতে পারে, এছাড়া যত মনগড়া মতবাদ বা আদর্শ রয়েছে এগুলোর মাধ্যমে শুধু অশান্তির দাবানলই জ্বলে উঠবে।111111111111111

যতদিন মানুষ ইসলাম ধারণ করে ছিল, ততদিন মুসলমান ছিল বিশ্বময় নেতৃত্বদানকারী জাতি। মুসলমানরা যখন ইসলাম ছেড়ে তাগুতের দিকে ধাবিত হচ্ছে তখনই তারা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হচ্ছে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার হচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছু আবিস্কার করার পূর্বে তার ব্যবহার সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। কিন্তু ১৪শত বছর পূর্বে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অনেক অনাবিস্কৃত বিষয়ে পবিত্র কুরআনে জানিয়ে দিয়েছেন। কোনো মানুষ যদি পরিপূর্ণ ইসলামী জীবনাচার মেনে চলে, সে পরিণত হয় একজন আদর্শ মানুষে। তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্র যদি ইসলাম অনুযায়ী পরিচালিত হয়, সেই রাষ্ট্রও হবে সর্বদিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে মডেল।

তিনি কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ইসলামে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হওয়ার জন্য নির্দেশ করেছেন। দ্বীনের কিছু অংশ মানলে এবং কিছু অংশ না মানলে সে পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারে না। তাই তিনি সকলকে দেশ ও জাতির স্বার্থে ইসলামের সুমহান আদর্শের ছায়াতলে সমবেত হবার জন্য আহবান জানান।

দেশের সামগ্রিক অবস্থার জন্য প্রচলিত সামাজিক অবস্থা ও মানব রচিত মতাদর্শকে দায়ী করে তিনি বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। তিনি শাসকদেরকে দেশ, জনগণ ও জনগণের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় কাজ করার আহবান জানান।

পীর সাহেব চরমোনাই সংবিধানের মুলনীতিতে সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, ইসলামী রাজনীতি করার অধিকার ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংবিধানে বহাল রাখার দাবী করেছেন। তিনি সম্প্রতি দেশব্যাপী ইভটিজিং-এর ব্যাপকতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্ষবরণের নামে অশ্লীলতার ছড়াছড়ির কারণে এবং ইসলাম যেখানে নারী-পুরুষের পোশাক-পরিচ্ছদ-এর ব্যপারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দিয়েছে সেখানে উচ্চ আদালত কর্তৃক মহিলাদের বোরকা পরার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইভটিজিং করতে বখাটেদের উসকে দিয়েছে। তিনি বলেন, টিভি, সিনেমা ও মিডিয়ায় নারীদেহকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার ও নগ্নতানির্ভর সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ না হলে ইভটিজিং বন্ধে কোনো আইন কাজে আসবে না।

দাওয়াতুন্নবী সা. উপলক্ষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের প্রথম দিনে প্রধান অতিথির বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) বাদ আছর থেকে মাহফিলের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আছর নামাযের আগেই হাজার হাজার উৎসুক ইসলামপ্রিয় জনতা মাহফিলস্থলে পৌঁছতে থাকে। মাগরিবের নামাজের সময় জনতার উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। রাত ৯.৩০ মিনিটে যখন আমীরুল মুজাহিদীন মঞ্চে উঠেন তখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিল ধারণের ঠাই ছিল না। আশ-পাশের রাস্তায় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সকলের কণ্ঠেই আল্লাহ আল্লাহ জিকিরে এক বেহেশতী পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরো তাফসীর পেশ করেন চরমোনাই কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী পীর সাহেব কারীমপুর, জামি’আ কারীমিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল শায়খুল হাদীস মাওলানা মকবুল হোসাইনসহ মাহফিলে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন। মাহফিল পরিচালনায় ছিলেন নগর সেক্রেটারি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম ও বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। সার্বিক ত্ত্ববধানে ছিলেন আলহাজ্ব আবদুল আলতাফ হোসেন ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়া।