• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সন্ত্রাসরোধে ২৪ ঘণ্টা-সেল-সন্ত্রাসী দমনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে


প্রকাশিত: ৬:৫৪ পিএম, ২৭ এপ্রিল ১৬ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১২ বার

এস রহমান  :  এবার অপরাধীর বাঁচন নাই। সন্ত্রাসরোধে ২৪ ঘণ্টা চাল থাকবে সন্ত্রাস সেল।এর asaduzzaman-khan-kamal-www.jatirkhantha.com.bdমাধ্যমে অপরাধীদের পাকরাও করতে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা দেয়া দেয়া হবে।একই সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে।

এখন থেকে সন্ত্রাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানে সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটের সঙ্গে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া ২৪ ঘণ্টা সারা দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরাধ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক সেল খোলার কথাও জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত, গ্রেফতার এবং এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন তারা। আমরা তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। একই ধরনের প্রস্তাব আমরাও করেছি। তারা আমাদের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এখন থেকে এসব বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যেসব খুনের ঘটনা ঘটেছে তার একটি বড় তালিকা বৈঠকে বার্নিকাট আমাদের দিয়েছেন। তাদের দেশে আমাদের যারা মারা গেছেন, তাদের একটি তালিকা আমরা তাকে দিয়েছি। এসময় তিনি (বার্নিকাট) বাংলাদেশে আইএস উপস্থিতির কথা বললে জবাবে বলেছি, বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই। যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলো অভ্যন্তরীণ অপরাধ। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো যোগসূত্র নেই।

মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে বেশির ভাগ সময় বার্নিকাট জুলহাজের হত্যা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।গত সোমবার রাজধানীর কলাবাগানেরবাসায় মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনার দুদিনের মাথায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট। এসময় সেখানে পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

1স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বার্নিকাট জানান, সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে কথা বলতে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।তিনি বলেন, ‘এই মাত্র আপনাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করেছি। তারা আমাদের শক্তিশালী সহযোগী। কিন্তু তাদের বা আমাদের কারও একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’

জুলহাজ মান্নান হত্যার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এরপর তিনি বলেন, ”জুলহাজ আমাদের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সঙ্গে কাজ করছিলেন। তিনিই আপনাদের সংস্কৃতির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি জানান কীভাবে আপনাদের সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। এখানে মার্কিন দূতাবাসে কাজ শুরুর জন্য তিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলহাজ কর্মীদের ভালোবাসতেন। তিনি একজন উৎফুল্ল সহকর্মী ছিলেন। আর যতটা জেনেছি, তাতে বোঝা যায় তিনি বড় পরিসরে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ কাজ করতেন। তিনি আমার অফিস থেকে গিয়েও কাজ করতেন। তিনি ইউএসএআইডির স্বপ্নপূরণে কাজ করতেন। গণতন্ত্র ও সুশাসন নিয়ে কাজ করতেন। তিনি মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করতেন। তিনি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করতেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে মার্কিন দূতাবাস পরিবার ও জুলহাজের পরিবারকে সান্ত্বনা দেয়ার কথা বলেন।’জুলহাজ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে বলতে চাই তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা কোনও মানুষের জন্য প্রত্যাশিত নয়। আপনি যা কিছু বিশ্বাস করেন,যা কিছু লেখেন, আপনাকে যে কেউ ভালোবাসুক অথবা আপনি স্রষ্টার বন্দেগী করেন বা না করেন-তার কোনো কিছুর কারণে আপনাকে হত্যা করা হবে এটি প্রত্যাশিত নয়।’ স্বাধীন মত প্রকাশ করার জন্য কাউকে হত্যা করা হবে, নিরাপত্তা না থাকা কেমন সংস্কৃতি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বার্নিকাট।

তিনি বলেন, ‘জুলহাজের হত্যাকাণ্ডের মতো যেসব হত্যার ঘটনা ঘটছে, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার একটি তালিকা দিয়েছি। এই ঘটনাগুলোর তদন্ত বিষয়ে আশানুরূপ কোনো অগ্রগতি নেই। বাংলাদেশে এখন অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’রাষ্ট্রদূত জানান, হত্যা-সন্ত্রাসের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথ্য আদান-প্রদান করতে চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদবিরোধী সকল সহযোগিতার ক্ষেত্রে একসঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি যে  আমার সরকার বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।’সহযোগিতার ধরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বার্নিকাট বলেন, ‘আমাদের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত আছে, সেগুলো আমরা বাংলাদেশকে দেব। তদন্তে একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে সেগুলো বিনিময় করব।’