• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

সন্তানের মৃত্যু চেয়ে আদালতে বাবা-মা!


প্রকাশিত: ৪:৫৫ এএম, ২৫ জুন ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৮ বার

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার   :   সন্তানের ভালো হোক—এই চিন্তায় সারা জীবন বিভোর থাকেন child-www.jatirkhantha.com.bdবাবা-মা। সন্তান একটু অসুস্থ হলে, বাবা-মা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। প্রার্থনা করেন, নিজের শরীরে হোক সেই রোগ, তবু সুস্থ হোক সন্তান। এমনই-তো সব বাবা-মা। কিন্তু বাবা-মা কোলের সন্তানের মৃত্যু চেয়েছেন—এমন কথা নিশ্চয়ই বিশ্বাস হবে না।

বিশ্বাস না হলেও সত্য এই, আট মাস বয়সী সন্তানের বিনা যন্ত্রণায় মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের একটি আদালতে আবেদন করেছেন বাবা-মা। ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের চিত্তুর জেলায়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিত্তুরের নুথালাচেরুভু মণ্ডল অঞ্চলের বাথালাপুরাম রেলগেট এলাকার মুদি দোকানদার রামানাপ্পা ও সরস্বতী দম্পতির আট মাস বয়সী সন্তান গেনা সাই। জন্মের পর থেকেই সে দুরারোগ্য লিভারের রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা করাতে সঞ্চিত সব অর্থ ও সহায়-সম্পত্তি শেষ করে ফেলেছেন দরিদ্র এই দম্পতি। কিন্তু তাতে গেনার শরীরের কোনো উন্নতি হয়নি।

রামানাপ্পা বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসা করাতে সঞ্চিত সব অর্থই শেষ হয়ে গেছে। এরপরও আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়েও চিকিৎসা করানো হয়েছে। এখন একদম নিঃস্ব। বেঙ্গালুরুতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এখন চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, গেনাকে সুস্থ করতে হলে শিগগির তার লিভার প্রতিস্থাপন করতে হবে। আর এতে খরচ হবে ৫০ লাখ রুপি। অন্তত ছয় বছর ধরে তার চিকিৎসা চলবে। প্রতি মাসে শুধু হাসপাতাল খরচ আসবে ৫০ হাজার রুপি। এত টাকা! এখন কীভাবে সম্ভব। মেয়েটা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। কান্নাকাটি করছে।’

অর্থনৈতিক দুরবস্থা আর চোখের সামনে দুধের শিশুর এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছেন না বাবা রামানাপ্পা ও মা সরস্বতী। তাঁরা এ থেকে মুক্তি চান, যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে চান আদরের সন্তানকেও। আর এ কারণেই তাঁরা নিরুপায় হয়ে হাজির হয়েছেন চিত্তুর জেলা আদালতের বিচারকের কাছে। তাঁরা আবেদন করেছেন, হয় সরকার এই শিশুটির চিকিৎসা ভার বহন করুক, নতুবা বিনা যন্ত্রণায় গেনার মৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হোক।

বাবা-মার এমন অস্বাভাবিক আবেদনের কারণে বিচারক মামলাটি হায়দরাবাদ হাইকোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ সময় আদালতে একজন আইনজীবী শিশুটির চিকিৎসার জন্য পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা করেন।এ বিষয়ে গেনার বাবা রামানাপ্পা বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি হাইকোর্টের সহায়তা নিতেও প্রস্তুত।