‘সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই’
স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে যে আলোচনা হয়েছে তা পূরণ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধান পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। এ নিয়ে তারা (বিএনপি) যতই হইচই করুন না কেন, আগামী নির্বাচন ইসির অধীনে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার নির্বাচনের সময়ে সহায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
বুধবার রাজধানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।এদিকে দুপুরে সচিবালয়ে ‘সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদ’র ৪১তম সভা শেষে সড়কপরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, রাজধানীর সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধ করে বিকল্প হিসেবে হিউম্যান হলারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহাসড়কে মোটরযান এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সেতু ভবনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী পক্ষে থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করতেই পারে। তবে তারা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জবাব পেয়ে গেছেন, পৃথিবীর সব দেশেই বিদ্যমান সরকারই নির্বাচনীকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা যদি দুই তৃতীয়াংশ ম্যাজরিটি নিয়ে সংসদে আসতে পারে, তাহলে মনের মাধুরী মিলিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে পারেন। কিন্তু আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে পরিবর্তনের কোনো প্রকার সুযোগ নেই।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি এখন অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ওই দেশে সফরে গিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিশ্ব জনমতও জোরালো হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুতদের ফিরিয়ে নিতে বলেছেন। এভাবে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র চীন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এগিয়ে আসে, তাহলে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।
এদেশের গণতন্ত্র আমরাই প্রতিষ্ঠা করবো, বিদেশিরা নয়- বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। আমাদের নির্বাচন আমাদের করতে হবে। বাইরের কোনো শক্তি এসে আমাদেরকে গণতন্ত্র দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটাই কথা বলেছেন যা খুব স্বাভাবিক। তিনি বলেছেন- ‘প্রতিবেশি দেশে গণতন্ত্র থাকলে তা ওই দেশ জন্য স্ট্যাবল থাকবে। প্রতিবেশি দেশ স্ট্যাবল হলে তা সেই দেশের জন্য ভালো। সেই জন্য তারা সবাই মিলে পারটিসিপেটরি, ইনক্লুসিভলি নির্বাচনের কথা বলেছেন। উনি এর বাইরে যাননি।’
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জুয়েনা আজিজ, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।