সংঘাত সংঘর্ষে ইউপি নির্বাচন-নিহত ১০-গুলি-ভোট জালিয়াতি
জাতিরকন্ঠ ডেস্ক : সংঘাত সংঘর্ষে ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)ভোট সম্পন্ন হয়েছে আজ। সংঘাত সংঘর্ষে ইউপি নির্বাচন আজ নিহত ১০ হয়েছে।
নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষ-গুলি, ভোট জালিয়াতি- ছিনতাই, কেন্দ্র দখলসহ নানা অঘটনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম ধাপ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ ভোটে সারাদেশে একজন আনসার সদস্যসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। হাতিয়ায় সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ধানিসাফা ইউপিতে ভোট ছিনতাইকালে বিজিবির গুলিতে অন্তত ৫ জন (মতান্তরে ৬ জন) সহ ঝালকাঠি সদর, বানারিপাড়া ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরি ও কক্সবাজারের টেকনাফে একজন করে নিহত হয়েছে। বিভিন্নস্থানেসংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চালিয়েছে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ছিল না পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। এজন্য ভোটের কেন্দ্রে কেন্দ্রে পেশিশক্তি মহড়া ছিল। দেড় শতাধিক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছে।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : সরকারি দলের প্রার্থীদের অন্যায় প্রভাব, হুমকি, হামলার কারণে ভোটকেন্দ্রের কাছে ঘেঁষতে পারেননি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা। আওয়ামী লীগের প্রভাব বলয়ে সংঘর্ষ, আতঙ্ক এবং আরো সংঘর্ষের শঙ্কার মধ্য দিয়ে দিন পার করেন নির্বাচনী এলাকার জনগণ। ফলে অনেক ভোটকেন্দ্রেই ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা একদিকে যেমনি ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়েছে, অন্যদিকে প্রতিপক্ষের উপর হামলায় আক্রমণাত্মক ভূমিকায় ছিল।
ঝালকাঠিঃ গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের কালিআন্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুই মেম্বর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে এক মেম্বর প্রার্থীর ভাই আবুল কাশেম শিকদার কাঞ্চন পরে মারা যান। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আনা হলে চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন কেন্দ্রে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ব্যালটে সিল দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঐ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে প্রায় ৩ ঘণ্টা পর আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়। অপরদিকে এর আগে কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের কাফুরকাঠি ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যের বন্দুক থেকে অসাবধানতাবসত গুলি বের হয়ে গৌরাঙ্গ ব্যাপারী নামের এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হন। অপরদিকে সকালে গাঘারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম লিটনের ভাই প্রিন্স প্রতিপক্ষের কোপে গুরুতর আহত হয়ে বরিশাল হাসাপাতালে চিকিত্সাধীন আছে।
বানারীপাড়া (বরিশাল)ঃ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, নিজের রাইফেলের গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে ভোট দানে বাধ্য করা, ভোট কেন্দ্র স্থগিত, পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে ৮ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মৃধা, সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী জেসমিনসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে।
উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের মুরারবাড়ি সদ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে অসাবধানতাবশত নিজের রাইফেলের গুলি পেটে বিদ্ধ হয়ে আল-আমিন নামের এক আনসার সদস্য ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। সে বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের আঃ মালেকের ছেলে। নিহত আনসার সদস্য আল-আমিনের স্ত্রী, ৭ বছরের শিশু পুত্র ও দেড় বছরের কন্যা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।
নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার খালিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষে ভোটের ফলাফলকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৭টার সময় খালিয়াজুরীর আদাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম আবু ইসহাকের ছোট ভাই কাওসার মিয়া (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তাকে কে বা কারা গুলি করেছে তাত্ক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। তবে তার অপর ভাই ছালাক মিয়া জানায়, রাত ৭টার দিকে ভোটের ফলাফল নিয়ে পুলিশের সাথে তর্ক-বিতর্কের সময় সে গুলিবিদ্ধ হয় এবং হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পিরোজপুর (কাউখালী)ঃ কাউখালীতে ব্যালট বাক্স ও পেপার ছিনতাই, গুলি, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রকাশ্য ভোট দেয়া ও ৩টি কেন্দ্রের ভোট বাতিলের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৪৭টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১১টায় কাউখালীর সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী-সমর্থকরা হোগলা বেতকা হাই স্কুল কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায়। এ সময় ছিণতাইকারীদের হামলায় এক সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আহত হন। আর ছবি তুলতে গেলে আরটিভি ও বিজয় টিভি সাংবাদিক লাঞ্ছিত হন। একই ইউনিয়নের বেতকা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র দখল করতে করলে এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীদের সাথে দফায় দফায় জাতীয় পার্টি জেপির কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ওই ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টি জেপির সমর্থিত মহিলা মেম্বার প্রার্থী বেবি খানমের বাড়ি ভাঙচুর করে। পরে এই দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া একই ইউনিয়নে পূর্ব বেতকা ও মেগপাল কেন্দ্রে সংঘর্ষ হলে কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।
এদিকে দুপুর ২টায় কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের তালুকদারহাট দক্ষিণ শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক মেম্বার প্রার্থী ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টা চালালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৬ রাউন্ড গুলি চালায়। ভিন্ন ঘটনায় ওই কেন্দ্রের দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ২ জন আহত হন। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নের মোল্লা বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রবেশ করে সাইকেল প্রতীকে সিল মেরে পালিয়ে যায়। পরে ওই কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয়েছে বলে রিটার্নিং অফিসার জুলহাস কবীর জানান। অপরদিকে ১টার দিকে নৌকার সমর্থকরা বেকুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬টি ককটেল ফাটিয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে গেলে ওই কেন্দ্রে ভোট বাতিল করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া কাউখালী সদরে কিছু প্রকাশে সিল দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রার্থীরা অভিযোগ করেছে। আমরাজুড়ি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়।
স্বরূপকাঠিঃ পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্ট ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগসহ দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট বর্জনকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- সারেংকাঠি ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম, বিএনপির মো. গোলাম মোস্তফা সরদার, সোহাগদলে বিএনপির মো. হুমাউন কবির, সুটিয়াকাঠিতে বিএনপির মো. আতিকুল ইসলাম লিটু, স্বরূপকাঠি সদরে বিএনপির মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার, আটঘর কুড়িয়ানা ইউপিতে বিএনপির মো. জাকির হোসেন নান্টু, সমুদয়কাঠি ইউপিতে জেপির মো. নাজমুল ইসলাম সাঈদ, জলাবাড়িতে জেপির মো. তৌহিদুল ইসলাম ও দৈহারী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. মিজানুর রহমান মিন্টু। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে তাদের এজেন্টেদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীরা প্রকাশ্যে প্রতীকে সিল মেরেছে। এ সব প্রার্থী প্রহসনের এ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
রাজাপুর (ঝালকাঠি)ঃ রাজাপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৪ কেন্দ্রে প্রায় ২০টি কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা-সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি বর্ষণের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সহিংসতায় ওই সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে বিঘ্ন ঘটে। এসব ঘটনায় একাধিক মেম্বর প্রার্থীসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। অধিকাংশ কেন্দ্রেই মেম্বর প্রার্থীদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অপরদিকে বেলা ১১টার আগেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার, কারচুপি, জাল ভোট দেয়া, এজেন্ট বের করে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে উপজেলার সাতুরিয়া ইউপির বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হেমায়েত হোসেন নূরু, শুক্তাগড় ইউপির বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, গালুয়া ইউপির বিএনপি প্রার্থী হাফিজ মিয়া, রাজাপুর সদর ইউপির বিএনপি প্রার্থী জিএম কামরুল আলম সগীর মাতুব্বর সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন করেছে। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং ৫ জন বরিশাল শেবাচিমে ভর্তিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাথমিকভাবে চিকিত্সা নিয়েছেন। এর মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণে দগ্ধ পশ্চিম বড়ইয়ার রুবেল হাওলদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কাঠালিয়া উপজেলায় অনিয়ম, জাল ভোট, কেন্দ্র দখল, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে বিএনপির চার, জেপির এক ও স্বতন্ত্র এক— সর্ব মোট ৬ প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন চলাকালীন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এসকল প্রার্থী ভোট বর্জন করেন। বর্জনকারী বিএনপির প্রার্থীরা হচ্ছে- ১নং চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নে আলী হায়দার মিয়া, ২নং পাটিখালঘাটা ইউনিয়নে মাওলানা ইউসুফ আলী, ৩নং আমুয়া ইউনিয়নে আখতার হোসেন নিজাম মীরবহর, ৪নং কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নে নাসির উদ্দিন মুন্সি। চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের জাতীয় পার্টি জেপির আবদুল মালেক খান ও আমুয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির রুস্তম বেপারী। কাঠালিয়ায় বিভিন্ন কেন্দ্রে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। নলছিটিতে বিজয়ী মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকের বাড়িতে এবং ৫টি কেন্দ্রে হামলায় তিনজন মেম্বার প্রার্থীসহ কমপক্ষে ৩২ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছে।
পটুয়াখালীঃ মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের রামপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আঃ আজিজ মৃধা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানের সমর্থকদের মধ্যে সংর্ঘষে উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৩ জন জসিম উদ্দিন (৩৫), ইলিয়াস হোসেন (৩০) ও দুলাল খন্দকারকে (৩০) বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের পশ্চিম সুবিদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থী মোঃ ওমর ফারুক ও মোঃ ইসমাইল হোসেন হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়। আহত মোঃ বশির হাওলাদার (২৮), বাচ্চু (৩০), হাবিবুর রহমান (৬০), আঃ ছালাম (৪২), সোহরাব হোসেন (৪০) ও মনিরা বেগমকে (৩৫) মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উভয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সমর্থকদের মধ্যে কেন্দ্রের বাইরে এই সংর্ঘষ হয়। কলাপাড়ার চাকামইয়া ইউনিয়নের ছয় নং ওয়ার্ডের চুঙ্গাপাশা মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট কেন্দ্রে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাত রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে মেম্বার প্রার্থী আজিজুল হক বুদাই, মো. শাহ জালাল হাওলাদার, খলিল হাওলাদার, সাইদুল শিকদার, মোয়াজ্জেম চৌকিদার গুলিবিদ্ধ হয়। পরে পুলিশ ছিনিয়ে নেয়া ব্যালট বাক্সের দুটি ভাঙ্গা ও একটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। এদিকে, টিয়াখালী ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী গাজী আক্কাস উদ্দিন বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সমর্থকদের ভোট কেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ডাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সকাল ১০টায় দখল করে নেয় আওয়মী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। ভোটকেন্দ্র দখল ঠেকাতে পশ্চিম পাড়ডাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসরাত হোসেন আব্বাসকে কুপিয়ে আহত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। চিকনিকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আ. রহমান নয়ার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছে। এসময় নয়ার বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
খুলনাঃ জেলার ৯ উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়নে গোলাগুলি, ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, সংঘর্ষ এবং প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও ভোটারদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার মত ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারী ভোটারের উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত বেশি দেখা গেছে। জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের গাওঘরা কেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুলিতে দলটির বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীর ২ সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খুলনা জেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক মুসফিকুর রহমান সাগরের সমর্থকরা গাওঘরা কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হাদী সরদারের লোকজন তাদের বাধা দেয়। এসময় গুলিতে মমিনুল ইসলাম (৪৮) ও রফিকুল ইসলাম (৪৫) আহত হয়। গণপিটুনিতে অপূর্ব সরকার, কৃষ্ণপদ মন্ডল এবং ওয়াহিদুর রহমান আহত হয়। স্থানীয়রা ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়।
ডুমুরিয়া উপজেলার ৫ নম্বর আটলিয়া ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বদরুজ্জামান তসলিম ডুমুরিয়া থানার এসআই নিমাইয়ের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ আনেন এবং সকাল সাড়ে ৯টায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, এসআই নিমাই চন্দ্র সকাল সোয়া ৯টার দিকে তাকে চুকনগর কেন্দ্র থেকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী স.ম আব্দুল কাইয়ুম খোকা’র সমর্থকরা চাকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক কেন্দ্র, গোবিন্দকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কাঠালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কুলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও সুন্দরবুনিয়া ভোটকেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে কেন্দ্রগুলো দখল করে নেয়। তার বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থককে মারধর করা হয়। উপজেলার মাগুরঘোনা ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মোড়ল ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে সকাল ১০টার দিকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জুলফিকার আলী খান জুলু ও একই উপজেলার টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী বিকাশ মিত্র সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যেই ভোট বর্জন করেন। এ উপজেলার টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিকাশ মিত্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর শেখ ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জন করেন। এর আগে তিনি রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ বন্ধের দাবি জানান।
দিঘলিয়া উপজেলার ৬ নম্বর যোগীপোল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলবাড়ীগেট বি. কে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১ দিকে বহিরাগতরা কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনিসুর রহমানের পক্ষে প্রকাশ্যে সিল মারে। এ ঘটনার পর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন। এছাড়া একই যোগীপোল ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে ঢুকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা একইভাবে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারতে থাকে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর এ কেন্দ্রেরও ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
ফুলতলা উপজেলার আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের শিরোমনি উত্তরপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ তিনটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনিরুল ইসলামের সমর্থকরা সকাল ১০টার দিকে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে বলে ভোটারদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এর আগে সকাল ৮টায় আটরা শ্রীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটারদের প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সাধারণ ভোটাররা আর কেন্দ্রমুখী হয়নি। তবে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে এই কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা জোর করে ভোট দিতে চাইলে সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
কুমিল্লাঃ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। কেন্দ্র দখল ও সংঘর্ষের ঘটনায় ২টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগে দুপুরের দিকে রাজামেহার ইউপির বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মাস্টার ও এলাহাবাদ ইউনিয়নের বিএনপি চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মাসুদ হাসান নির্বাচন বর্জন করেন।
নোয়াখালীঃ নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৭টি ইউপি নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, পোলিং ও সহকারি পিজাইডিং গুলিবিদ্ধের ঘটনার মধ্যদিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। আর চরকিং ইউনিয়নের চরকিং দাসপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল আউয়াল (৩৫) ও পোলিং অফিসার শাহদাত্ হোসেন (৩০) দুর্বৃত্তের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন।
লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি কেন্দ্র বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া কমলনগর উপজেলার ৪ ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছেন।
চট্টগ্রামঃ মিরসরাইয়ে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আবছারের ব্যানার ও পোষ্টার পুড়িয়েছে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল মোস্তফার (নৌকা) ভাই ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় সোমবার ইছাখালী ইউনিয়নের আবুরহাট বাজারে ইছাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব নুরুল আলমকে লাঞ্ছিত করা হয়। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদে ১০ কেন্দ্রে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে ভোট দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বাঞ্ছারামপুরে ইউপি নির্বাচন চলাকালে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধোর, প্রকাশ্যে ভোট প্রদান, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাঞ্ছারামপুরে উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নে সাতবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সোয়া ১১টায় জাল ভোট দেয়া নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় তাদের হামলায় পোলিং অফিসার হেলাল উদ্দিন আহাম্মদসহ ৫ জন আহত হয়। প্রায় ১ ঘন্টা ভোট গ্রহণ স্থগিত ছিল।
সিলেটঃ বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে রুকনপুর এলাকার কাঁঠালতলী বাজারে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এনাম উদ্দিনের ভাই কয়েছ উদ্দিন এবং জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জবরুল ইসলামের সমর্থক অহিদুল ইসলাম আহত হন। কয়েছ উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক অহিদুল ইসলামকে আটক করে।
বগুড়াঃ জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার সারিয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কামালপুর ইউনিয়নের হাওড়া খালি ও বিবির পাড়া ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোট গ্রহণের গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারে ৩/৪ জন করে সিল মারতে দেখা গেছে । আবার ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার টুকাতে নৌকা মার্কা এজেন্ট ও সমর্থকরা দায়িত্ব পালন করেছে। ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের জোড়গাছা ভোট কেন্দ্রের বাহিরে রাস্তায় প্রতিপক্ষের হামলায় রতন মিয়া (১৬) ও আনজির রহমান (৩০) নামে ২ জন আহত হয়েছেন। জোড়গাছা মাদ্রাসা কেন্দ্রের সামনে রাস্তায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় বিএনপি সমর্থকরা আওয়ামী লীগের ওই ২ জন কর্মীকে পিটিয়ে জখম করে।
সিরাজগঞ্জঃ কারচুপি, ব্যালট পেপার ছিনতাই, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। অনেক ইউনিয়নের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী এজেন্ট পাওয়া যায়নি। বিএনপি অভিযোগ করেছে, হুমকি ধামকির ভয়ে অনেক কেন্দ্রের এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। সকাল ১১টার দিকে ব্রম্মগাছা ইউনিয়নের জানকিগাঁতী কেন্দ্রে সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে জোর পুর্বক ভোট কাটার চেষ্টা করার সময় বিপক্ষরা বাধা দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। ফলে কিছু সময়ের জন্য এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়। দেড়াগাতি রুদ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ভোট লুট করেছে তার সমর্থকেরা। একই সাথে তারা একই কেন্দ্রে ব্যাপক হারে ব্যালট পেপারে ছিল মারে। কারচুপির কারণে এই কেন্দ্রে মেম্বর প্রার্থীর ব্যালট থাকলেও চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হেলাল উদ্দিন জানান, একদল লোক কেন্দ্রের বুথে ঢুকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর একটি ব্যালট বইয়ের ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা মুরি রেখে সকল ব্যালট পেপার নিয়ে গেছে। বিষয়টি তাত্ক্ষণিক কেন্দ্রের পদস্থ কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে র্যাব-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়াও পাঙ্গাসী ইউনিয়নের ব্যাংনাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ক্ষমতাশীল দলের প্রার্থী আব্দুল সালাম জোড়পূর্বক ভোট নেয়ার চেষ্টা করলে অপর ২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা একজোট হয়ে মারপিট করে তাকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে বিজিবি তাকে উদ্ধার করে। সোনাখাড়া ইউনিয়নের গথিতা ও খৈচালা কেন্দ্রে জাল ভোট ও জোরপূর্বক ভোট নেয়াকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
মুন্সীগঞ্জঃ মুন্সীগঞ্জে নানা সহিংসতার মধ্যে দিয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের বাইরে সহিংসতায় বিএনপির ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাতজন আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন রাউন্ড ফাকা গুলি ছুঁড়ে। এদিকে নানা অনিয়মের অভিযোগে বিকাল ৩টার দিকে মধ্যপাড়া, বয়রাগাদি ও বালুরচর ইউপিতে ভোট বর্জন করেছে বিএনপি।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউপির বিএনপি প্রার্থী আব্দুল খালেক শিকদার (৬৫) আহত হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিরাজদিখান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে এই ঘটনায় হামলাকারী আওয়ামী লীগের চেয়পারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেনের সমর্থক মামুনুর রশীদকে (৩৫) ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনা পারভীন জানান, ভোট কেন্দ্রের বাইরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এর প্রার্থীকে মারধর করায় এই শাস্তি দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া বালুচুর ইউপির খাসকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়র কেন্দ্রের বাইরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খাসকান্দি বিদ্যালয় কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। মুন্সীগঞ্জে বালুরচরে ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে তিন পুলিশসহ পাঁচ জন আহত হয়েছে। আহত পুলিশের এএসআই রাজিব ও কনস্টেবল মেহেদি হাসান ও কনস্টেবল জুয়েলকে স্থানীয়ভাবে চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। দুপুরে সিরাজদিখান উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। ৫ নম্বর ওয়ার্ড কেন্দ্রে দুই মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের এই সংঘর্ষে টেঁটা, জুইত্যা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। মুন্সীগঞ্জের সহকারি পুলিশ সুপার মো. সামছুজ্জামান বাবু জানান, ইট পাটকেলের আঘাতে পুলিশ সদস্য আহত হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের ভোট কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষে একজন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের বাইরে দু’ ইউপি মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। আহত সঞ্জিত চন্দ্রকে (৪০) স্থানীয়ভাবে চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার সুভাস চন্দ্র জানান, কেন্দ্রের বাইরের ঘটনা, এতে কেন্দ্রে কোন সমস্যা হয়নি। পুলিশ তাত্ক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দায়িত্বরত এসআই মো. রুবেল হোসেন জানান, মালখানগর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফুটবল মার্কার হযরত ও তালা মার্কার প্রদীপের সমর্থকদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির হয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে একজন প্রত্যক্ষদর্শী আহত হয়।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে তিনটি ইউনিয়নে নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। এজেন্ট বের করে দেয়া, জোর করে সিল মারাসহ নানা অভিযোগে ওই ৪টি ইউনিয়নের ৫ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও সতন্ত্র প্রার্থী।
মঙ্গলবার সকাল সোয় ৮টার দিকে সিরাজদিখান সরদ ইউনিয়নের ৮নং সিরাজদিখান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইকবাল হোসেন ও তার দলবল কেন্দ্রটি দখল করতে হামলা চালায়। এ সময় উপস্থিত বিএনপি প্রার্থী আব্দুল খালেক সিকদার এর প্রতিবাদ করতে গেলে তার উপর হামলা চালায় অওয়ামী লীগের লোকজন।
ময়মনসিংহঃ ময়মনসিংহের ফুলপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের বনোয়াকান্দা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের ৪টি ব্যালট পেপার বই খুঁজে না পাওয়ায় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। পয়ারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এনামুল কবিরকে ইমাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। পরে দুই ঘণ্টা পর ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পায় এনামুল কবির। তার আটকের খবর পেয়ে তারাকান্দা উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ বাসস্ট্যান্ডে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা মহসড়ক অবরোধ করে।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে রূপসি ইউনিয়নের পাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ায় তালা মার্কার মেম্বার প্রার্থীর লোকজন কল্পনা আক্তার (২৫) নামের এক নারীকে রিকশা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে সে পায়ে গুরুতর আহত হয়। অপরদিকে রামভদ্রপুর ইউনিয়নের আশাবট ভোট কেন্দ্রে ভোট শুরুর আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারার জন্য বুথের গোপনীয়তা তুলে দেয়ার চেষ্টা চালায়। বেলা আড়াইটার দিকে একই ইউনিয়নের মিচকিপাড়া ভোট কেন্দ্রে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগে মেম্বার প্রার্থী ফজুলুল হক ও হাছেন আলীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে হাছেন গ্রুপের ৩ জন আহত হয়। তারা হলেন, নজরুল ইসলাম (২৩), তোফাজ্জল হোসেন (৩০) ও রিপন মিয়া (২)। তার মধ্যে রিপনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শেরপুরঃ নালিতাবাড়ি উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণকালে ব্যাপক সংঘর্ষ, জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারা, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ফাঁকা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। গতকাল বেলা দেড়টার দিকে রূপনারায়ণ কুড়া ইউনিয়নের কাউয়া কুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা সমর্থকরা জোরপূর্বক ভোট কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে সিল মারার সময় প্রতিপক্ষের লোকজনদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। সংঘর্ষে নূর আহম্মদ নামে এক ব্যক্তি আহত হয়। ঘটনার পর পরিস্থিতি অনুকূলে রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বী ৩ চেয়ারম্যানকে নিজের গাড়িতে তুলে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এছাড়াও গাছগড়া কেন্দ্রে নৌকা সমর্থকরা জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারে বলে ঐ কেন্দ্রের ভোটাররা অভিযোগ জানায়। অপরদিকে বেলা পৌনে তিনটার দিকে যোগানীয়া ইউনিয়নের গেড়ামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরকার সমর্থকরা ৫০০ ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ২০ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে।
গোপালগঞ্জঃ টুঙ্গিপাড়ায় জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের গুয়াধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে বেলা ৩টার দিকে বাসু দেব মন্ডল (ফুটবল প্রতীক) ও সঞ্চয় পাটোয়ারী (মোরগ প্রতীক)-র সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়। সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পাটগাতি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের চিংগুড়ি গ্রামে বিজয়ী মেম্বার অরবিন্দু চৌধুরী ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থী সুবল বিশ্বাস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে বিজয়ী অরবিন্দুসহ ১০ জন আহত হয়েছে।
ফরিদপুরঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নে কাপড় ও বাঁশ দিয়ে তৈরি নৌকা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার ২১ মার্চ গভীর রাতে যোগিবরাট মাদ্রাসার সামনে তিন রাস্তার ওপর টানানো নৌকা প্রতিপক্ষের লোকজন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের আ‘লীগ প্রার্থী এস এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে এলাকায় এসে তার ভাগ্নে বিদ্রোহী প্রার্থী রঞ্জুর পক্ষে ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ সব অভিযোগের ব্যাপারে রঞ্জু বলেন, মিজানুর রহমান টাকা দিয়ে নৌকা প্রতীক কিনে দলের নেতাকর্মীর সমর্থন না পেয়ে তিনি নিজেই নৌকায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সহানুভূতি আদায়ের ব্যর্থ চেষ্টা করছেন।
টাঙ্গাইলঃ গোপালপুরে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাঙ্গামা, বাড়িঘর ভাঙচুর, বিদ্রোহী প্রার্থীকে মারপিট করার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে হেমনগর বাজারে নৌকা প্রতীক প্রার্থী আনিসুর রহমান হীরার কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের রওশন খান আইয়ুবের কর্মীদের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। আনিসুর রহমান হীরা অভিযোগ করেন দল থেকে বহিষ্কৃত প্রার্থী রওশন খান আইয়ুবের কর্মীরা তার বাসাবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। অপরদিকে রওশন খান আইয়ুব অভিযোগ করেন নৌকা প্রতীক প্রার্থী আনিসুর রহমান হীরার কর্মীরা হামলা চালিয়ে তার ৬ কর্মীকে মারধর করেছে। সংঘর্ষের ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানা আহত হন। তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়। এদিকে নৌকা মার্কার কর্মীদের হামলায় হাদিরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম নিক্সন এবং হোসাইন মোহাম্মদ রাসেল আহত হন।