শ্রীদেবীর রক্তে মদের আলামত
মুম্বাই থেকে আনা মাই : নানা তদবিরে শ্রীদেবীর মামলা বন্ধ করতে যাচ্ছে দুবাই পুলিশ। যদিও শ্রীদেবীর লাশের ময়নাতদন্তে রক্তে মদের আলামত মিলেছে। এদিকে শ্রীদেবীর মৃত্যুরহস্যর নেপথ্যে পারিবারিক কলহ থাকতে পারে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশী তদন্তে সেটিও উঠে এসেছে। জানা গেছে, শ্রীদেবী এবং তাঁর দুই মেয়ে জাহ্নবী ও খুসির সঙ্গে সৎ ভাই অর্জুনের সম্পর্ক নাকি একেবারেই ভাল ছিল না।
ওদিকে তদবিরের কারণে শেষমেষ মামলা ছাড়াই শ্রীদেবীর মরদেহ দুবাই পুলিশ আজ হস্তান্তর করতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্র মতে, শ্রীদেবীর মৃত্যু মামলা বন্ধ করছে দুবাই পুলিশ। এই মামলায় বনি কপূরকে ক্লিনচিটও দিয়েছে তারা। দেহ ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বনি কপূর। তাঁকে সাহায্য করতে ইতিমধ্যেই দুবাই পৌঁছে গিয়েছেন বনি কপূরের প্রথম পক্ষের ছেলে অর্জুন কপূর। মুম্বই পুলিশকে রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ প্রস্তুত থাকার কথা বলা হয়েছে বলে খবর।
বনি কপূরের প্রথম পক্ষের ছেলে অর্জুন কপূর দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেখানেই বাবা বনি কপূরকে শ্রীদেবীর দেহ মুম্বইতে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সাহায্য করতে গিয়েছেন তিনি। শ্রীদেবী এবং তাঁর দুই মেয়ে জাহ্নবী ও খুসির সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্ক নাকি একেবারেই ভাল ছিল না। তবে শ্রীদেবীর মৃত্যু সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়েছে বলেই খবর। অনিল কপূরের বাড়িতে জাহ্নবী ও খুশির সঙ্গে গত সোমবারই দেখা করেছিলেন অর্জুন।কোনও রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, শ্রীদেবীর স্বামী বনি কপূর হোটেলের বাথটবে শ্রীদেবীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখেন। কোনও রিপোর্টে প্রকাশ, এক হোটেল কর্মী দরজায় ধাক্কা দিলেও শ্রীদেবী দরজা না খোলায় পরে দরজা ভাঙতে হয়। আদতে ঠিক কী হয়েছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।
অচৈতন্য হয়ে বাথটাবের জলে পড়ে গিয়ে, দম আটকে মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর। ময়নাতদন্ত এবং ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে তেমনটাই জানাচ্ছে দুবাই পুলিশ।
দুবাইয়ের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের দাবি, শ্রীদেবীর রক্তের নমুনায় পাওয়া গিয়েছে অ্যালকোহলও। দাবি, ‘দুর্ঘটনায় ডুবে’ মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
ইংরেজি এবং আরবিতে লেখা ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এর দুটি কপিও টুইট করেছে খালিজ টাইমস। সেই কপি কতটা প্রামাণ্য তা অবশ্য এখনও কারো কাছে স্পষ্ট নয়। ইংরেজি কপিটিতে— ‘দুর্ঘটনার ফলে’ শ্রীদেবীর ডুবে মৃত্যু (অ্যাক্সিডেন্টাল ড্রাউনিং) হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ড্রাউনিং বানানটিও সেখানে ভুল (DROWNING-এর বদলে DRAWNING লেখা আছে)।
ময়নাতদন্ত এবং ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর দুবাই পুলিশ এবং দুবাই মিডিয়া অফিসও শ্রীদেবীর ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে টুইট করেছে। সেই সরকারি টুইটে কিন্তু কোথায় ‘অ্যাক্সিডেন্টাল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি।ময়নাতদন্ত এবং ফরেন্সিক রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়েছে দুবাইতে ভারতীয় কনসুলেট জেনারেলের হাতে।
খলিজ টাইমস-এর খবর অনুযায়ী, শ্রীদেবীর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নয়, মদ্যপ অবস্থায় বাথটবের জলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর। এর পরেই সোমবার দেহ ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধেবেলা ফিরতে পারে অভিনেত্রীর দেহ। দুবাইয়ের সরকারি আইনজীবীর অনুমতির পরই দেহ মুম্বইয়ে ফেরানো সম্ভব।
এই ঘটনায় দুবাই পুলিশ শ্রীদেবীর স্বামী বনি কপূরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শুধু বনি নন, দুবাই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে অভিনেত্রীর পরিবারের অন্য সদস্য এবং যে হোটেলে অভিনেত্রীর দেহ মিলেছে সেখানকার কর্মীদেরও।দুবাই পুলিশের তরফে ভারতীয় দূতাবাসকে জানানো হয়েছে, আরও একটি ছাড়পত্র পাওয়ার পর তবেই ছাড়া যাবে অভিনেত্রীর দেহ। সে ক্ষেত্রে ঠিক কখন দেহ ভারতে পৌঁছবে সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।