• রোববার , ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

শ্রদ্ধায় স্যালুট সুধীন দাশ


প্রকাশিত: ৩:০০ এএম, ৩০ জুন ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৫৮ বার

স্টাফ রিপোর্টার:  বিদায় বেলায় শিল্পী, শিক্ষার্থী ও ভক্ত-গুণগ্রাহীদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সঙ্গীতজ্ঞ সুধীন দাশ। sudhin_www.jatirkhantha.com.bdবৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও নজরুল ইনস্টিটিউটে দুই দফা শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর পোস্তগোলা মহাশ্মশানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয় নজরুলসঙ্গীত ও লালনগীতির শুদ্ধ স্বরলিপি প্রণয়নকারী বরেণ্য এ সঙ্গীত সাধকের। শ্রদ্ধানুষ্ঠানে অংশ নিয়ে শিল্পী-সংগঠকরা জানালেন, সুধীন দাশের কর্মকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে তাকে চিরজাগরূক করে রাখবেন তারা।

মঙ্গলবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুধীন দাশ। এর পর থেকে তার মরদেহ রাখা হয় হাসপাতালের হিমাগারে। বৃহস্পতিবার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার মিরপুরের বাসায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় ধানমণ্ডির নজরুল ইনস্টিটিউটে। সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে সুপর্ণা দাশ ও জামাতা হাসান মাহমুদ স্বপন।

মরদেহ গ্রহণ করেন নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া।নজরুল ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে সুধীন দাশকে শ্রদ্ধা জানান আজাদ রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা, ফেরদৌস আরা, ইয়াসমীন মুশতারী, বুলবুল মহলানবীশ, সালাউদ্দিন আহমেদসহ সুধীন দাশের শিষ্য ও অনুরাগীরা।

শ্রদ্ধায় স্যালুট সুধীন দাশকে-
শ্রদ্ধায় স্যালুট দিয়ে সুধীন দাশকে বিদায় জানিয়ে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নজরুলসঙ্গীতের সুর বিকৃতি রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সুধীন দাশ। এটি তার সবচেয়ে বড় অবদান। প্রথম জীবনে রবীন্দ্র, নজরুল ও অতুলপ্রসাদের গান গাইলেও পরে তিনি শুধু নজরুলসঙ্গীতেই মনোনিবেশ করেন। অন্যদের মধ্যে আজাদ রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা ও শাহীন সামাদ শোকানুভূতি ব্যক্ত করেন।

পরে সুধীন দাশের মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তত্ত্বাবধানে শ্রদ্ধানুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে  শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভারপ্রাপ্ত সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন হিসেবে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করে শিল্পকলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর, উদীচী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংসদ, সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, নজরুলসঙ্গীত শিল্পী পরিষদ, বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পিত।

শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, সুবীর নন্দী, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, লাইসা আহমেদ লিসা, বুলবুল ইসলাম, শারমিন সাথী ইসলামসহ আরও অনেকে।কামাল লোহানী বলেন, ‘পশ্চিম বাংলায় একবার নজরুলের সুর নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল। সঙ্গীতজ্ঞরা তখন তাদের শিক্ষার্থী ও শিল্পীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তোমরা সুধীন দাশের স্বরলিপি অনুসরণ কর। এটা আমাদের এক বড় প্রাপ্তি। সুধীন দাশ আমাদের সবাইকে পথ দেখিয়ে গেছেন।’

শোকানুভূতি তুলে ধরেন সৈয়দ হাসান ইমাম, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, ইয়াসমীন মুশতারী, নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে আগামী ৬ জুলাই বিকেল ৪টায় ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে সুধীন দাশ স্মরণে শোকসভা হবে।