শিল্পমন্ত্রীর আলটিমেটাম- ভিটামিন ‘এ’ বিহীন ভোজ্যতেল তুলে না নিলে ব্যবস্থা
স্টাফ রিপোর্টার: বাজার থেকে ভিটামিন ‘এ’ বিহীন ভোজ্যতেল তুলে নিতে ব্যবসায়ীদের ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, এই সময়ের পর ভিটামিন ‘এ’ ছাড়া ভোজ্যতেল বাজারে পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন ও বিধিমালার ওপর আয়োজিত অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধনকালে এই সময়সীমা বেঁধে দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন। এ সময় তিনি ৭২ ঘণ্টা পর বাজারে বিশেষ অভিযান চালাতে বিএসটিআইকে নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে রিফাইনারি মালিক, ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য দেন শিল্পসচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের পরিচালক লুত্ফর রহমান তরফদার ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন বলেন, ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ একটি আন্তর্জাতিক কর্মসূচি। জাতিসংঘের গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) এবং ইউনিসেফের সহায়তায় বিশ্বব্যাপী দরিদ্র জনগণের পুষ্টিমান উন্নয়নে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও এটি গ্রহণ করেছে। ভোক্তা পর্যায়ে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্যতেলের জোগান নিশ্চিত করতে ‘ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন-২০১৩’ পাস করেছে।
মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকলেও কোনো কোনো রিফাইনারি মালিক আইনটির বিরোধিতা করে আদালতে রিট করেছিলেন। জনস্বার্থে আদালত এ রিট খারিজ করে দিয়েছেন। এখন থেকে যাঁরা আইনটি ভঙ্গ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতীয় স্বার্থে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ভোজ্যতেলের ৬০-৭০ শতাংশই খোলা বা লুজ আকারে বিক্রি হয়। এই অংশটি বাদ দিয়ে কেবল বোতলজাত ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ নিশ্চিত করলে কোনো কাজ হবে না। সে জন্য যারা আমদানিকারক তাদেরও এই প্রক্রিয়ার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, সরকার থেকে ভিটামিন ‘এ’ ও যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। নিজেরা ভিটামিন ‘এ’ কিনলেও প্রতি লিটার ভোজ্যতেলে ২০ পয়সা খরচ হবে। ফলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্যতেল বিক্রি না করার কোনো কারণ নেই ব্যবসায়ীদের।
প্রকল্প পরিচালক লুত্ফর রহমান তরফদার বলেন, দেশের ২২টি রিফাইনারির মধ্যে ১৬টি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। তাদের ১৮ দশমিক ৯ মেট্রিক টন ভিটামিন ‘এ’ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তেলের সঙ্গে ভোজ্যতেল মেশানোর যন্ত্রও দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কোম্পানি বিএসটিআইয়ের পরীক্ষাগারে ভোজ্যতেল পরীক্ষার পর ইতিবাচক ফলাফল পেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্যতেলের নির্দিষ্ট লোগো বোতলের গায়ে ব্যবহার করতে পারবে। সেটি দেখেই ক্রেতারা বুঝতে পারবেন ওই বোতলজাত ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ আছে কি নেই।