• শনিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শিবির ক্যাডারের জিঘাংসায় বালু ব্যবসায়ী খুন


প্রকাশিত: ২:২৩ এএম, ২২ অক্টোবর ২৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৬ বার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :  চট্টগ্রাম মহানগরে এবার দিনদুপুরে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর নাম আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬)। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও পরিবার বলছে, সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মাইক্রোবাসে এসে গুলি করে চলে যান। আশপাশে লোকজন থাকলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। নিহত আফতাব ইট ও বালুর ব্যবসা করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইসতিয়াক বলেন, চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়ার উদুপাড়া এলাকায় আফতাব তাঁর ব্যবসার জন্য আনা বালু ও ইট রাখেন। বিকেল সোয়া চারটার দিকে মজুতের জন্য এক ট্রাক বালু আনা হয়। এ কারণে আফতাব সেখানে আসেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে একটি নোহা মাইক্রোবাস আসে। প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকে আফতাবকে লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়া হয়। এরপর সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগী মাহমুদ, হাছানসহ চারজন গাড়ি থেকে নেমে গুলি করতে থাকেন। তাঁরা আফতাবের ঊরু ও পায়ে পরপর চারটি গুলি করে চলে যান। আশপাশে লোকজন থাকলেও তাঁদের হাতে অস্ত্র থাকায় কেউ এগিয়ে আসেননি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের লাশঘরের সামনে নিহত আফতাবের ছোট ভাই মো. তানভীর বলেন, সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে তাঁর ভাই ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। ইট ও বালুর ব্যবসা করতে হলে ভাইয়ের কাছে চাঁদাও চান। এ কারণে আদালতে জিডিও করেন দুই মাস আগে। একপর্যায়ে তানভীর বলেন, এসব বলে কি হবে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে না।

ওই সময় তানভীরের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত এলাকা থেকে আসা প্রায় অর্ধশত লোক উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পুলিশ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার না করায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন আফতাবের মা-বাবা। বাবা মোহাম্মদ মুছা লাশঘরের সামনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘আর কত লাশ ফেলবে সাজ্জাদ। আমার ছেলেকে কেন গুলি করল।’

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সাজ্জাদ তাঁর দুই সহযোগীদের নিয়ে গুলি করেন। এ ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে। ভয়ে ভবনমালিকেরা কেউ মামলা করেননি। ওই ঘটনার আগে গত ৩০ আগস্ট একই এলাকায় দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীদের।নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আবদুল মান্নান মিয়া দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, সন্ত্রাসী সাজ্জাদই গুলি করেছে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

কে এই জামায়াত শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ-

বিদেশে পলাতক জামায়াত-শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী হিসেবে এই সাজ্জাদ অপরাধজগতে পা রাখেন। এরপর দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। শেষ গত ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। বায়েজিদ বোস্তামী থানাসংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ। স্থানীয় সূত্র জানায়, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন অনন্যা, শীতলঝর্ণা, কালারপুল, বায়েজিদ থানার সীমান্তবর্তী হাটহাজারীর কুয়াইশ, নগরের চান্দগাঁও হাজীরপুল ও পাঁচলাইশ এলাকায় ১৫ থেকে ২০ জনের বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে বেড়ান সাজ্জাদ।