শাহরুখ-জুহি’র কলকাতা নাইট রাইডার্সে মরিসাশ কেলেংকারি
নিজস্ব সংবাদদাতা নয়াদিল্লি: শাহরুখের কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৯০ কোটি টাকার শেয়ার ৯ কোটি বিক্রির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। নাইট রাইডার্সে কালো টাকার লেনদেন নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর প্রশ্নের মুখে পড়লেন শাহরুখ খান। ইডি কাল শাহরুখের বয়ান নথিভুক্ত করেছে। ইডি সূত্রের খবর, ২০০৮-’০৯ সালে নাইট রাইডার্স স্পোর্টস সংস্থার শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে শাহরুখকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডি সূত্রের বক্তব্য, শাহরুখ তাঁদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। ইডি-র চাহিদা মতো বেশ কিছু নথিও তুলে দিয়েছেন শাহরুখ।জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহরুখকে সমন করা হয়েছিল আগেই। এর পরে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খুলে তিনি বিজেপি নেতাদের তোপের মুখে পড়েন।
অনেকে কটাক্ষ করেন, ইডি-র সমন পেয়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন শাহরুখ। আর এখন দিওয়ালির ঠিক আগে শাহরুখকে জিজ্ঞাসাবাদের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ইডি কর্তাদের দাবি, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই শাহরুখকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবং এই প্রথম নয়, ২০১১-তেও ১০০ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা নয়ছয়ের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে।
কী সেই অভিযোগ? শাহরুখের রেড চিলিজ সংস্থা, জুহি চাওলা ও তাঁর স্বামী জয় মেটার মালিকানাধীন নাইট রাইডার্স স্পোর্টস সংস্থার শেয়ার জয় মেটারই মালিকানাধীন আর একটি সংস্থাকে বিক্রি করা হয়। সি আইল্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস নামে ওই সংস্থাটির জন্ম ‘কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য’ হিসেবে পরিচিত মরিশাসে। বাজার দর অনুযায়ী সে সময় নাইট রাইডার্সের প্রতি শেয়ারের দাম হওয়া উচিত ছিল ৭০ থেকে ৮৬ টাকা। সেই শেয়ারই ১০ টাকা দরে হাতবদল হয়। যদিও বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন বলে, সেবি নির্ধারিত দামের কমে বিদেশি কোনও সংস্থাকে শেয়ার বিক্রি করা যাবে না।
আইন ভাঙার অভিযোগ প্রথমে অস্বীকার করেছিল নাইট রাইডার্স। তাদের যুক্তি ছিল, ঠিক দামেই শেয়ার বেচা হয়েছে। গত বছর নভেম্বরে ইডি নিরপেক্ষ অডিট সংস্থাকে দিয়ে ওই লেনদেন খতিয়ে দেখে। সেই অডিট সংস্থাও রায় দেয়, অনেক কম দামে শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এমনকী, জুহি চাওলার কাছে নাইট রাইডার্সের যে শেয়ার ছিল, তা-ও জয় মেটার সংস্থাকে একই ভাবে কম দামে বিক্রি করা হয়।নাইট রাইডার্স সংস্থার তরফে অবশ্য যুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাদের সংস্থাটি নতুন। লাভের বিষয়ে নিশ্চয়তা নেই। তাই লাভ করার ক্ষমতার ভিত্তিতে শেয়ারের বাজার দর ঠিক না করে সংস্থার মোট সম্পত্তির ভিত্তিতে শেয়ারের দাম নির্ধারণ হওয়া উচিত।
কী বলছেন ইডি কর্তারা? তাঁদের যুক্তি, নাইট রাইডার্সের তথ্য অনুযায়ী মরিশাসের ওই সংস্থাকে শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে ৯ কোটির মতো লেনদেন হয়েছিল। কিন্তু শেয়ারের ঠিক দর অনুযায়ী, প্রায় ৮০-৯০ কোটির শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র ৯ কোটি দিয়েই মরিশাসের একটি সংস্থা এ দেশের একটি সংস্থার ৮০-৯০ কোটির শেয়ার কিনে ফেলেছে। কালো টাকার লেনদেনের ক্ষেত্রেই এই ভাবে কম দামে শেয়ার কেনাবেচা করা হয়।