শাহজালালে সোনা চোরাচালানি সিন্ডিকেটে বিমানের রাঘববোয়ালরা বহাল তবিয়তে
এস রহমান.ঢাকা: হয়রত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমান বন্দরে প্রায় অর্ধ শতাধিক সোনা চোরাচালানি সিন্ডিকেট চিহ্নিত হয়েছে।এই চক্রের অন্যতম সহযোগী বিমানের গোয়েন্দা শাখার চিহ্নিত বেশ কয়েক জন চোরাকারবারী। এদের সঙ্গে রয়েছে কয়েক মানি এক্সচেঞ্জ ও জুয়েলারী ব্যবসায়ী’ও। বিমানের রাঘববোয়াল সোনা চোরাচালানি সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী ১৯ কর্মকর্তা কর্মচারি এখনও বহাল তবিয়তে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়,স্বর্ণ চোরাচালানে বিমানের গোয়েন্দা শাখার একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে তদন্তে তথ্য মিলছে।এই চক্রটি বিমানের অভ্যন্তরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করে সোনার বার চোরাচালান।সম্মিলিত সিন্ডিকেটের সহায়তার সোনার চালান পাচার হয়ে যায় দেশের ওপারে। এর আগে বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার লোকজন ধরা পড়ে স্বর্ণ চোরাচালানে। গ্রেফতার হয় রাঘববোয়াল চোরাচালানি এ্যানি উদ্দিন ভঁূইয়া ও মাসুদ।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে চোরাচালানের স্বর্ণ বহনের অভিযোগে গত এক বছরে বিমানের চারটি উড়োজাহাজ জব্দ করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। উদ্ধার করা হয়েছে ৯০ কোটি টাকার স্বর্ণবার। এরমধ্যে তিনটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ বিমানের ১৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। একটি ঘটনায় তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে মামলা হবে। তবে জব্দ করা বিমানের চারটি উড়োজাহাজই বিমান কর্তৃপক্ষের নিকট জিম্মায় দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিমানের উড়োজাহাজ জব্দ করার প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল। ফ্লাইট নম্বর বিজি ০৫২। ‘অরুণার আলো’ নামের বিমানের এ উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ১০৫ কেজি স্বর্ণবার। এগুলো রাখা ছিল ওই উড়োজাহাজের টয়লেট কমোডের পেছনে। এ ঘটনায় একই বছরের ৪ এপ্রিল বিমান বন্দর থানায় মামলা হয়। আসামি করা হয় বিমানের এয়ারক্রাফট মেকানিক এ্যাসিস্ট্যান্ট আনি উদ্দিন ভুঁইয়া ও এয়ারক্রাফট মেকানিক মাসুদকে।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি। দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী এ উড়োজাহাজ ( ফ্লাইট নম্বর বিজি-০৪৮) থেকে উদ্ধার করা হয় ৬৩ কেজি ওজনের ৩২ কোটি টাকার স্বর্ণবার। এ ঘটনায় বিমানের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি। দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী এ উড়োজাহাজ (ফ্লাইট নম্বর-বিজি-০৪৬) থেকে উদ্ধার করা হয় ১৪ কেজি স্বর্ণবার। এ ঘটনায় বিমানের দুই কর্মচারীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩০ মে বিমানের দুবাই-সিলেট-ঢাকা রুটের উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৩ কেজি স্বর্ণবার। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক ড. মইনুল খান জানান, গত ৩০ মে স্বর্ণ চালান আটকের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট পাওয়ার পরই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেনকে।