শাহআলী থানা পুলিশের ফুট সামারি-চা বিক্রেতাকে হত্যা: ৪ পুলিশ দোষী
সাইফুল বারী মাসুম : চাঁদা না পেয়ে চা বিক্রেতাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য দায়ী। আর এই ঘটনার শাহ আলী থানার অফিসার ইনচার্জও (ওসি) দায় এড়াতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গঠিত এক সদস্যের তদন্ত কমিটি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদর দফতরের উপ-কমিশনার (শৃঙ্খলা) টুটুল চক্রবর্তী রবিবার পুলিশ কমিশনারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জাতিরকন্ঠ’কে বলেন, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটি রবিবার রিপোর্ট দিয়েছে।
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, একই ঘটনায় পুলিশের মিরপুর বিভাগের পক্ষ থেকে আরো একটি কমিটি করা হয়েছে। মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাসুদ আহমদ খানকে প্রধান করে দুই সদস্যের ওই কমিটি এখনো রিপোর্ট দেয়নি। শিগগিরই তারা প্রতিবেদন দেবেন বলে আশা করেন তিনি।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার সময় সেখানে দায়িত্ব পালন করা চার জন পুলিশ সদস্য উপ-পরিদর্শক মোমিনুর রহমান খান এবং নিয়াজ উদ্দিন মোল্লা, সহকারি উপ-পরিদর্শক দেবেন্দ্র নাথ এবং কনস্টেবল জসিম উদ্দিনকে দায়ি করা হয়েছে। ঘটনাটি এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য শাহ আলী থানার তত্কালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শাহীন মণ্ডল দায় এড়াতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার কায়ুমুজ্জামান জাতিরকন্ঠ’ কে বলেন, মিরপুর বিভাগের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো রিপোর্ট দেয়নি। তবে খুব শিগগিরই তারা রিপোর্ট জমা দেবে বলে। ঘটনাটির পরপর ডিএমপির পক্ষ থেকে শাহ আলী থানার পাঁচ জন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর একদিন পর শাহ আলী থানার তত্কালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শাহীন মণ্ডলকেও দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
পুলিশের দাবি, গত বুধবার রাতে শাহ আলী থানার পুলিশের সোর্সরা মিরপুর ১ নম্বরের চিড়িয়াখানা লেকের পাড়ে কিংশুক সমবায় সমিতির পাশে চা-দোকানি বাবুল মাতুবরের (৫০) কাছে যান। তখন কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সোর্স দেলোয়ারের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় বাবুল কেরোসিন তেলের জ্বলন্ত চুলার ওপর পড়ে যান। এতে বাবুলের সারা শরীর পুড়ে যায়।
ঘটনাস্থলের অদূরে থাকা শাহ আলী থানার এসআই মমিনুর রহমান, এসআই নিয়াজউদ্দিন মোল্লা ও এএসআই দেবেন্দ্র নাথ উপস্থিত ছিলেন। তারা ইচ্ছা করলে এগিয়ে গিয়ে বাবুলকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। এ ক্ষেত্রে তারা কর্তব্য পালনে অবহেলা ও গাফিলতি করেছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।