শামীমা আক্তারের ‘রানা প্লাজা’ অবশেষে মুক্ত
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: চলচ্চিত্র ‘রানা প্লাজা’র প্রদর্শনী ও সম্প্রচারে হাই কোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা আপিল বিভাগে স্থগিত হয়ে গেছে।চলচ্চিত্রটির প্রয়োজকের করা এক আবেদনের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনাহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।
এর ফলে ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন ও সম্প্রচারে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন প্রযোজক শামীমা আক্তারের আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।৫০টির বেশি হলে ৪ সেপ্টেম্বর এ চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা আটকে গিয়েছিল।
আপিল বিভাগে প্রয়োজকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এ এম আমিন উদ্দিন ও বি এম ইলিয়াস কচি। সঙ্গে ছিলেন শাহরিয়ার কবির।রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও হাই কোর্ট রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।
বিভিন্ন দৃশ্যের কারণে শামীম আক্তার প্রযোজিত ও নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটি দীর্ঘদিন সেন্সর বোর্ডে আটকে ছিল। শেষ পর্যন্ত গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ‘রানা প্লাজাকে’ সনদপত্র দেয়।এই সিনেমায় ‘ভীতিকর চিত্র’ দেখানো হয়েছে অভিযোগ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম এরপর হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
তার আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি করে গত ২৪ অগাস্ট হাই কোর্ট এ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী ও সম্প্রচারে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেন্সর বোর্ডের দেওয়া সনদের কার্যকারিতাও একই সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়।
সেই সঙ্গে চলচ্চিত্রটির সেন্সর সনদ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
তথ্য সচিব, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান, এফডিসির এমডি ও চলচ্চিত্রটির প্রযোজককে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়।হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে প্রযোজক শামীম আক্তার গত সপ্তাহে চেম্বার আদালতে গেলে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি রোববার আপিল বিভাগে ওঠে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।ধসের ১৭ দিনের মাথায় ১০ মে বিকালে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে রেশমা আক্তারকে জীবিত উদ্ধার করা হলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ওই বছরই রানা প্লাজা ধস ও রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেন পরিচালক নজরুল ইসলাম খান।
এতে পোশাকশ্রমিক ‘রেশমা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী পরী মনি। তার বিপরীতে ‘টিটু’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা সায়মন সাদিক।