• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

শমসেরের জালিয়াতির নগর শত শত কোটি টাকা লুটপাট


প্রকাশিত: ৮:৪৬ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৭ বার

ACC_logo-www.jatirkhantha.com.bdসাইফুল বারি মাসুম : জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই শ কাঠার বেশি সরকারি জমি নিজের নামে ইজারা দেখিয়ে একটি ‘নগর’ গড়ে তোলেন মিরপুরের শমসের আলী। আর সেই নগরের জমিগুলো প্লট আকারে বিক্রি করে হাতিয়ে নেন শত শত কোটি টাকা। তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিল জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মচারী ও সাব-রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট।

ভূমি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত একটি চক্র সম্পর্কে এ রকম তথ্য মিলেছে একটি মামলার এজাহার থেকে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়-ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ রাজধানীর দারুস সালাম থানায় এই মামলাটি করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রাজধানীর বিশিল মৌজার কয়েকটি দাগে ৪ দশমিক ২৬৬৬ একর (২৫৮.৫৮ কাঠা) জমি ১৯৬০ সালে তৎকালীন গৃহায়ণ অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করে (এলএ কেস নম্বর-১৩/১৯৫৯-৬০)। ১৯৮০ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)।

রাজধানীর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত নকশা ও সুপার ইম্পোজ নকশা অনুযায়ী এ সম্পত্তিতে জাগৃকের জমি ও ডুইপ প্রকল্পের বিভিন্ন প্ল­ট রয়েছে। এ সম্পত্তি কাউকে ইজারা কিংবা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।২০০০ সালের ২০ এপ্রিল এ সম্পত্তির ইজারা দলিল (দলিল নম্বর ২১১৭/২০০০) করে নেন মিরপুরের বিশিল এলাকার শরাফত আলীর ছেলে শমসের আলী।

দলিলে ৯৯ বছরের জন্য চার একর জমির সেলামি দেখানো হয় মাত্র ৬৪ হাজার টাকা। অথচ গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এ সম্পত্তি লিজ বরাদ্দ দেয়নি। জাগৃকের পক্ষে সংস্থাটির তৎকালীন অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. নুরুজ্জামান ‘দলিল বাহক’ হিসেবে ওই দলিলে সই করেন। অথচ দলিল সই করার জন্য জাগৃকের পক্ষ থেকে নুরুজ্জামানকে কোনো ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে মিরপুরের তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার মোখলেসুর রহমান ঠাকুর জমির মৌজা মূল্যের চেয়েও কম দেখিয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি করেন। এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কোনো ব্যক্তিকে লিজ দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও তিনি অন্যদের যোগসাজশে তা করিয়েছেন।

ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তিনি নিজ বা অন্যের স্বার্থে বিনা যাচাইয়ে ওই সম্পদ জালিয়াতিতে শমসের আলীকে সহায়তা করেন।পরবর্তী সময়ে ভুয়া লিজ বরাদ্দপত্র দেখিয়ে নেওয়া ওই সম্পত্তির ওপর ‘শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট’ সাইনবোর্ড টানিয়ে প্লট বিক্রি করে ওই চক্র। এসব প্লটের ওপর এখন গড়ে উঠেছে উপশহর। অর্ধশত প্লটের ওপর ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। আর এ এলাকা এখন পরিচিত ‘শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট’ নামে।