• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উৎপাদিত কয়লা বিক্রি না হওয়ায় দুই মাস কয়লা উৎপাদন বন্ধ রাখার জন্য উৎপাদনকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনা মাইনিং কোম্পানি সিএমসিকে পত্র দিয়েছে বড় পুকুরিয়া কোল মাইন কোম্পানি লিমিটেড। আর এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় শ্রমিকদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে শ্রমিক অসন্তোষ।

গত বৃহস্পতিবার সিএমসিকে এই পত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, কয়লা বিক্রির মৌসুমে কয়লা বিক্রি করতে না পেরে শতকোটি টাকার লোকশানে পড়েছে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি।

টন প্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা কম দামে কয়লা বিক্রির ঘোষণা দিয়েও গ্রাহক পাচ্ছে না খনি কর্তৃপক্ষ। কয়লা বিক্রির ভরা মৌসুমে বিক্রি না করায় এই লোকশানে পড়তে হয়েছে বলে জানান অনেকে।

কয়লার প্রধান গ্রাহক ভাটা মালিকেরা বলছেন, ভরা মৌসুমে খনি কর্তৃপক্ষ কয়লা বিক্রি না করায় ভাটা মালিকরা বাধ্য হয়ে আমদানিকৃত কয়লার ওপর নির্ভর করতে হয়। ফলে ভরা মৌসুমে কয়লা বিক্রি করলে খনিকে এই লোকসানে পড়তে হতো না।

কয়লা ইয়াডে কয়লা ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ মে. টন। বর্তমানে কয়লা ইয়াডে মজুদ কয়লার পরিমাণ ৫ লাখ মে. টন। এতে কয়লা ইয়াডটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কয়লা খনিতে কর্মরত শ্রমিকেরা জানায়, কয়লা ইয়াডে ধারণ ক্ষমতার অধিক কয়লা মজুদ হওয়ায় কয়লার স্তুপে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে কয়লার মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা ঘটছে। খনি কর্তৃপক্ষ পানি সেচ দিয়ে কোনো রকমে কয়লা ইয়াডকে রক্ষা করছে।

বড় পুকুরিয়া কোল মাইন কোম্পানি লিমিটেডে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা ও ভাটা মালিকেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়লা বিক্রির ভরা মৌসুমে খনি থেকে কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা বিশেষ বরাদ্ধে কয়লা বিক্রি করে নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করলেও খনিটিকে ফেলেছে লোকশানের মুখে।

এদিকে, খনির কয়লা ইয়াডে কয়লা রাখার জায়গা না থাকায় কয়লা উত্তোলন বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে খনিটির উৎপাদনকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনা মাইনিং কোম্পানি সিএমসিকে পত্র দিয়েছে বড় পুকুরিয়া কোল মাইন কোম্পানি লি.। এতে খনিতে কর্মরত মাইনিং শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক অসস্তোষ দেখা দিয়েছে।

খনি শ্রমিকেরা জানায়, যেখানে আমাদের একদিনও ছুটি মঞ্ছুর করা হয় না সেখানে আমরা কেন ২ মাস বা ৩ মাস বসে থাকবো। তাদের দাবি আমাদেরকে বসিয়ে রাখলে পুরো বেতন দিতে হবে।

এ বিষয়ে বড় পুকুরিয়া কোল মাইন কোম্পানি লিমিটেডে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উৎপাদন বন্ধ রাখা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।