লোকসানে ডুবছে বেসিক ব্যাংক-অর্থমন্ত্রীর গলদঘর্ম অবস্থা
সাইফুল বারী মাসুম : রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনায় এরপর থেকে বেসিক ব্যাংককে পৃথক করে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যাংকটির সমস্যা দূরীকরণে যাতে বেশি সময় দেওয়া যায় সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সরকারি সাতটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য এ সভা হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘ব্যাংকটি (বেসিক) এতটাই সমস্যাগ্রস্ত যে, মূলধন ঘাটতির বিষয়ে আলোচনায় বেসিক ব্যাংক থাকলে অন্য ব্যাংকের বিষয়ে আলোচনাই করা যায় না। সে কারণে আগামীতে বেসিক ব্যাংককে আলাদাভাবে নার্সিং করা হবে।’
বৈঠকে সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বেসিক ব্যাংক থেকে কোনোভাবেই অনিয়ম দূর করতে পারছে না সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ঋণ বিতরণের অনিয়মের কারণে ব্যাংকটি ২০১২ সাল থেকে লাভের পরিবর্তে উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে। ওই বছর দুই কোটি ৭৯ লাখ টাকা মুনাফা ছিল ব্যাংকটির। এরপর থেকে ব্যাংকটি নিয়মিত লোকসান গুনে আসছে।
বেসিক ব্যাংক ২০১৩ সালে ৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ১১০ কোটি দুই লাখ টাকা এবং ২০১৫ সাল ২৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা লোকসান করেছে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়ায় দুই হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ব্যাংকটি ১২ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ছয় হাজার ৭৯৪ কাটি টাকা। ব্যাংকটির ৫২ শতাংশ ঋণই খেলাপি হয়।
২০০৯ সালে আবদুল হাই বাচ্চুকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পর থেকেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পরে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার পরও ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি সরকারি মালিকানাধী এ ব্যাংকটি।