• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

লুটপাটের শিরোমনি ড. ইউনুস


প্রকাশিত: ৩:৫০ এএম, ১৫ মার্চ ২৩ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৫ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : ‘শান্তিতে নোবেল জয়ী’ ড. ইউনুসের অবিশ্বাস্য অর্থপাচার ও নানা আর্থিক দুর্নীতি এবং অন্যান্য অপরাধের সুনির্দিষ্ট ও বিস্ময়কর তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই অর্থ পাচার ও দুর্নীতি কতটা ভয়াবহ তার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সহ বিবরণ শুনলে যে কারো চোখ ছানাবড়া হবে। ড. ইউনুস এদেশের মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হাজার হাজার কোটি টাকা কিভাবে বিদেশে পাচার করে আসছেন, সেটি সুনির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশ না করলে জাতির প্রতি এক বড় অবিচার হবে। এছাড়া তিনি গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কিভাবে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন সেই তথ্য সকলের জানা দরকার। দেশের এই অর্থ সম্পদ বিদেশে পাচার করা যে কতটা ভয়ংকর দেশবিরোধী কাজ এবং একমাত্র দেশের শত্রু ছাড়া এ কাজ কেউ করতে পারে না, এই কথা সবাই জানেন। দেশের আদালতে দায়ের করা বেশ কিছু মামলার রায় নিজের পক্ষে আনার জন্য বিচারক এবং কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার অপরাধ দালিলিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ড. ইউনুস পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠানে মধ্যযুগীয় কায়দায় শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন সহ শ্রমিক কর্মচারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ তাদের উপরে নানা ধরনের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। তাঁর পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সমুহে রয়েছে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রতিনিয়ত আইনের লঙ্ঘন এবং নানা ধরনের তুঘলকি কাণ্ড।

আমাদের বিশ্বাস তার এই ভয়াবহ অর্থপাচার, দুর্নীতি ও অন্যান্য অপরাধ এবং শ্রমিক অধিকার মূলক মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য প্রকাশিত হলে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির মত তারও নোবেল পুরস্কার বাতিলের দাবি উত্থাপিত হবে সারা পৃথিবীতে। সামাজিক ব্যবসার নামে তিনি দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন এবং সেই টাকা দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত নামে বিভিন্ন দেশে সম্পদ ক্রয় সহ নানা রমরমা ব্যবসা করছেন। এর কিছু অংশ বিদেশে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজে লবিস্টের পিছনে ঢেলেছেন। এইসব তথ্য প্রকাশিত হলে সবাই শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই ব্যক্তির প্রতি ধিক্কার জানাবে।
১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গ্রামীণ টেলিকম তথা গ্রামীণফোনের লাইসেন্স গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। লাইসেন্স গ্রহণের পূর্বে তিনি সরকারের কাছে অঙ্গীকার করেছিলেন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি গ্রামীণফোনের লাইসেন্স নিতে চাচ্ছেন। অঙ্গীকার করেছিলেন কোন মুনাফার জন্য নয় বরং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে সেবা প্রদানই হবে এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য।

মূলত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীন টেলিকমের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। লাইসেন্স গ্রহণকালে দেশের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অঙ্গীকার করলেও ড. ইউনুস শুধু নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যা যা করণীয় তার প্রতিটিই করেছেন। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে গ্রামীণফোনের অধিকাংশ শেয়ার বিদেশী কোম্পানীর হাতে তুলে দিয়েছেন। অনেকেই মনে করেন এর বিনিময়েই পরবর্তীতে তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ড. ইউনুসের কারণেই প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে নরওয়েজিয়ান কোম্পানি টেলিনর।

গ্রামীণ টেলিকম বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৩৪.২০ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার যার মাধ্যমে গ্রামীন টেলিকম প্রতিবছর গ্রামীণফোন থেকে হাজার কোটি টাকার উপর ডিভিডেন্ড পায়। কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় গঠিত এই অলাভজনক কোম্পানির কোন শেয়ার মূলধন নেই, কোন ব্যক্তি মালিকানা নেই। আইন অনুযায়ী এর কোন ডিভিডেন্ট অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। অথচ ড. ইউনুস প্রতিবছর গ্রামীণ টেলিকমের হাজার কোটি টাকার উপর ডিভিডেন্ট সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কয়েক হাত ঘুরিয়ে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার করে আত্মসাৎ করছেন।

গ্রামীণ টেলিকম গ্যারান্টি দ্বারা সীমাবদ্ধ একটি অলাভজনক কোম্পানী হওয়া সত্ত্বেও আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবছর বিপুল পরিমান লভ্যাংশ গ্রামীণ কল্যাণ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করছে। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ২৮ ধারার অধীন গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধিত একটি কোম্পানী যার কোন শেয়ার মূলধন নেই। দেশের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার দাতব্য উদ্দেশ্যে এবং কোম্পানীর সদস্যদের মধ্যে কোনরূপ লভ্যাংশ শেয়ার না করার শর্তে ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের লাইসেন্স গ্রহণ করেন। কোম্পানী আইনের ২৮(১) এবং ২৯(১) ধারায় কোন সদস্যকে বা ব্যক্তিকে কোম্পানীর বন্টনযোগ্য মুনাফা লাভের অধিকার প্রদান না করার জন্য সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে যা নিম্নরূপ:

“২৮৷ (১) যদি সরকারের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, সীমিতদায় কোম্পানী হিসাবে গঠিত হওয়ারযোগ্য কোন সমিতি বাণিজ্য, কলা, বিজ্ঞান, ধর্ম, দাতব্য বা অন্য কোন উপযোগিতামূলক উদ্দেশ্যের উন্নয়নকল্পে গঠিত হইয়াছে অথবা গঠিত হইতে যাইতেছে এবং যদি উক্ত সমিতি উহার সম্পূর্ণ মুনাফা বা অন্যবিধ আয় উক্ত উদ্দেশ্যের উন্নতিকল্পে প্রয়োগ করে বা প্রয়োগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং উহার সদস্যগণকে কোন লভ্যাংশ প্রদান নিষিদ্ধ করে, তবে সরকার উহার একজন সচিবের অনুমোদনক্রমে প্রদত্ত লাইসেন্সের মাধ্যমে এই মর্মে নির্দেশ দিতে পারিবে যে, উক্ত সমিতির নামের শেষে “সীমিতদায়” বা “লিমিটেড” শব্দটি যোগ না করিয়াই উহাকে একটি সীমিতদায় কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিকৃত করা হউক, এবং অতঃপর উক্ত সমিতিকে তদনুযায়ী নিবন্ধিকৃত করা যাইতে পারে।”

“২৯৷ (১) কোন কোম্পানী গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানী হইলে এবং উহার কোন শেয়ার-মূলধন না থাকিলে এবং এই আইন প্রবর্তনের পরে উহা নিবন্ধিকৃত হইলে উক্ত কোম্পানীর সংঘস্মারক বা সংঘবিধির কোন বিধানে কিংবা কোম্পানীর কোন সিদ্ধান্তে, কোন ব্যক্তির সদস্য হওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে, তাহাকে কোম্পানীর বন্টনযোগ্য মুনাফা লাভের অধিকার প্রদান করা যাইবে না এবং তাহা করা হইলে উক্ত বিধান বা সিদ্ধান্ত বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। ”

উক্তরূপ সুস্পষ্ট আইনি বিধান থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণফোন লিমিটেড-এ তার ৩৪.২০% শেয়ারের বিপরীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ লভ্যাংশ অর্জন করে তার ৪২.৬৫% লভ্যাংশ গ্রামীণ কল্যাণ নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে আসছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠার সময় প্রতিষ্ঠানটি গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে ৫৩,২৫,৬২,৯৪১/-টাকা (৫৩ কোটি ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৯৪১ টাকা) ঋণ গ্রহণ করেছিল। আইন অনুযায়ী কেবলমাত্র উল্লিখিত টাকাই গ্রামীণ কল্যাণকে ফেরত দেয়ার কথা।

কিন্তু মাত্র ৫৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিপরীতে গ্রামীণ টেলিকম সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কোম্পানী আইনের উপরোক্ত ২৮(১) এবং ২৯(১) ধারার সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘণ করে গ্রামীণ কল্যাণকে বার্ষিক ৪২.৬৫% লভ্যাংশ হিসেবে এ যাবৎ ৫০০০ কোটি টাকার উপরে প্রদান করেছে। বিগত ১৩/০৪/২০১১ ইং তারিখে এই দুই কোম্পানি একটি বেআইনি ও অবৈধ চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে শর্ত ছিল গ্রামীণ টেলিকম প্রতিবছর তার লভ্যাংশের ৪২.৬৫ % গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদান করবে। কোম্পানি আইনের বিধান এবং লাইসেন্সের শর্তের পরিপন্থী কোন চুক্তি করা যায় না। এ ধরনের অবৈধ চুক্তির কোন কার্যকারিতা নেই। যদিও ২০১১ সালের চুক্তির এক দশকেরও বেশি সময় আগে থেকেই গ্রামীণ টেলিকম বেআইনিভাবে গ্রামীণ কল্যাণকে উক্তরূপ লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে।

২০০৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত লভ্যাংশ শেয়ারের স্টেটমেন্ট নিম্নরূপ:

২০১৭ সালের পর থেকে গ্রামীণফোন থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ এর পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সে হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদানকৃত লভ্যাংশ এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম অদ্যাবধি গ্রামীণ কল্যাণকে আনুমানিক ৫০০০ কোটি টাকার বেশি লভ্যাংশ প্রদান করেছে। কিন্তু গ্রামীণ কল্যাণ থেকে গৃহিত উক্ত ৫৩.২৫ কোটি টাকার ঋণ এখনও পরিশোধ হয়নি। গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদানকৃত এই লভ্যাংশ যে অবৈধ তা গ্রামীণ টেলিকমের নিরীক্ষকগণ বহু আগেই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সর্তক করেন। উক্তরূপ বে-আইনী লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়ে ২০১৭ সালের একটি ম্যানেজমেন্ট রিপোর্টে গ্রামীণ টেলিকমের নিরীক্ষকগণ উল্লেখ করেন-

“During the year under audit Grameen Telecom received a dividend of Taka 8,080,912,158 against their holding of 34.20% in the shares of Grameen Phone Limited. Out of total receipt of dividend of taka 8,080,912,158, taka 3,446,672,270 was distributed to Grameen Kalyan as dividend, although Grameen Kalyan does not have any holdings in the shares of Grameen Phone Limited….
Recommendation: We recommend that these types of treatments should be discontinued otherwise problem may arise in future.”

গ্রামীণ টেলিকম তার লভ্যাংশের ৪২.৬৫% হিসেবে যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে অবৈধভাবে গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদান করেছে, সেই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ কি করেছে এর কোন উত্তর কারো কাছে নেই। প্রথমত, গ্রামীণ টেলিকমের তার লভ্যাংশ থেকে এই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদানের কোন আইনি ক্ষমতা নেই। এটি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। দ্বিতীয়ত, গ্রামীণ কল্যাণের এই অর্থ গ্রহণ করার কোন আইনি অধিকার নেই। এই অর্থ সম্পূর্ণরূপে তার জন্য অবৈধ। তৃতীয়ত, এই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ কোথায় খরচ করেছে সেই তথ্য গ্রামীণ কল্যাণ দিতে পারেনি। এছাড়া গ্রামীণ কল্যাণের এমন কোন প্রকল্প নেই যেখানে এই অর্থ ব্যয় হতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে এটি উদঘাটিত হয়েছে যে, গ্রামীণ কল্যাণে ৫০০০ কোটি টাকার উপরে যে অর্থ প্রেরণ করা হয়েছিল, সেই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণের হাতে নেই। সেটি কয়েক হাত ঘুরে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে।

অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকমের বাকি লভ্যাংশ অর্থাৎ ৫৭.৩৫ % লভ্যাংশ যার পরিমাণ ৭০০০ কোটি টাকার বেশি, সেই অর্থেরও প্রায় ৯০ ভাগ নামে-বেনামে অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই অর্থ কয়েক হাত ঘুরে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে। সেই অর্থ দিয়ে ড. ইউনুস নিজের ব্যক্তিগত নামে বিভিন্ন দেশে সম্পদ ক্রয় সহ নানা রমরমা ব্যবসা করছেন। এর কিছু অংশ বিদেশে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজে লবিস্টের পিছনে খরচ করেছেন।

গ্রামীণ কল্যাণ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ড. ইউনূসের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা বেআইনিভাবে প্রদান করছে। মোঃ নাজমুল ইসলাম (বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত একটি হিসাব থেকে দেখা যায় ৩১.১২.২০১০ থেকে ২২.০৮.২০১৩ সাল সময়ের মধ্যে গ্রামীণ টেলিকম শুধুমাত্র গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ১৪১৩.৫৮ কোটি টাকা ডোনেশন প্রদান করেছে যা পরবর্তী সময়ে কয়েক হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। বেআইনিভাবে হস্তান্তরিত উক্তরূপ অর্থ নানান হাত বদলের পর সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে। বিদেশে এই অর্থের একমাত্র সুবিধাভোগী ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

এটি পরিষ্কার যে, কোম্পানি আইন এবং লাইসেন্স অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম একটি অলাভজনক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনুস বেআইনিভাবে গ্রামীণ টেলিকম থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন। অথচ কোম্পানি আইন অনুযায়ী এই কোম্পানি থেকে এক টাকাও ড. ইউনুস নিজের অনুকূলে কিংবা অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্থানান্তর করতে পারেন না। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের বিষয়টি আড়াল করার জন্যই ড. ইউনুস অত্যন্ত সুচতুর ভাবে বহির্বিশ্বে সামাজিক ব্যবসার সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন।

ড. ইউনুস গ্রামীণ টেলিকম থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের মাধ্যমে লেয়ারিং সৃষ্টি করে বিদেশে পাচার করেছেন। এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ধারা ৪ এর বিধান মোতাবেক একটি গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ।

গ্রামীণ কল্যাণকে হাজার হাজার কোটি টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা সত্ত্বেও এবং বাকি লভ্যাংশ নামে বেনামে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করা সত্ত্বেও গ্রামীণ টেলিকম তার কোন লভ্যাংশ বন্টন হয় না মর্মে মিথ্যা বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে বার্ষিক রিটার্ন প্রদান করে আসছে যা কোম্পানি আইনের ৩৯৭ ধারার বিধান মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কোম্পানি আইনের ৩৯৭ ধারা নিম্নরূপ:
“৩৯৭। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের আওতায় আবশ্যকীয় বা এই আইনের কোন বিধানের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে প্রণীত কোন রিটার্ন, প্রতিবেদন, সার্টিফিকেট, ব্যালান্স শিট, বিবরণী অথবা অন্য কোন দলিলে কোন গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে ইচ্ছাকৃত কোন তথ্য, বিবরণ বা বিবৃতি দেন, যাহা সম্পর্কে তিনি জানিতেন যে উহা মিথ্যা, তাহা হইলে তিনি অনধিক পাঁচ বৎসর মেয়াদের কারাদণ্ডে এবং তদসহ অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন, এবং উক্ত কারাদণ্ড যে কোন প্রকারের হইতে পারে।”

কোম্পানি আইনের ৩৯৭ ধারার বিধান অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. ইউনুস এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ এই অপরাধের দায় এড়াতে পারেন না। আইনের উল্লেখিত বিধান অনুযায়ী তারা সকলেই পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন।

(চলবে)