লিও মেসি ঈশ্বরের অবিশ্বাস্য এক উপহার
ইএসপিএন থেকে নীপা খন্দকার: মেসি ও তুরানের মধ্যে খুব দ্রুতই বেশ ভালো জমে উঠেছে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ছেড়ে তাঁর বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া নিয়ে কম কথা হয়নি। গত জুলাইয়ে আরদা তুরান যখন বার্সায় যোগ দিচ্ছিলেন, তখনো কাতালান ক্লাবটির দলবদল নিষেধাজ্ঞার ছয় মাস বাকি। তুরান জানতেন, অ্যাটলেটিকোর সেরা খেলোয়াড় একজন হয়ে বার্সাতে নাম লেখালেও জানুয়ারির আগে মাঠে নামার সুযোগ মিলবে না। শুধু তা-ই নয়, বার্সার একাদশে নিয়মিত জায়গা করে নেওয়াও তো কঠিন চ্যালেঞ্জ।
তবু তুরান দ্বিতীয়বার ভাবেননি। অ্যাটলেটিকোর হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বার্সার হয়ে সেই সুযোগ আরও বেশি মিলবে। বেতন আর তারকাখ্যাতিও বাড়বে। কিন্তু এসব কিছুই নয়, তুরানকে ‘প্রাণের ক্লাব’ ছেড়ে আসতে প্রলুব্ধ করল একটা নাম। যে নামের পাশে তিনি খেলার স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখেন, তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে গোল করছে সেই খেলোয়াড়টি। তুরানের স্বপ্ন পূরণ হলো গতকাল। লিওনেল মেসির প্রথম গোলটি তিনিই করিয়েছেন।
চার দিন আগে কোপা দেল রেতে অভিষেক হয়েছিল, আর গতকালই প্রথম লিগে বার্সেলোনার হয়ে মাঠে নামলেন এই তুর্কি মিডফিল্ডার। প্রথমবার লিগে মাঠে নামলেন মেসির পাশেও। নেমেই বাজিমাত! দল জিতেছে ৪-০ গোলে, হ্যাটট্রিক করে তাতে মেসিই মূল নায়ক। তবে তুরানের অবদানও তো কম নয়। মেসিকে দিয়ে প্রথম গোলটি করিয়েছেন। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের হ্যাটট্রিক গোলটাতেও ভূমিকা রেখেছে তুরানের দুর্দান্ত এক ডামি।
তো কেমন লাগল মেসির সঙ্গে একসঙ্গে খেলতে পেরে? এর আগে প্রতিপক্ষ দলে থেকে দেখেছেন, এবার কেমন লাগল টানা দুই ম্যাচে পাশাপাশি থেকে মেসিকে খেলতে দেখে? এমন প্রশ্নের জবাবে মুগ্ধতাই ঝরল তুরানের কণ্ঠে। তুর্কি পত্রিকা সাবাহকে বার্সার নতুন নাম্বার সেভেন বললেন, ‘লিও মেসির মতো কাউকে দেখিনি। ও ঈশ্বরের অবিশ্বাস্য এক উপহার। মাঠে ও ওর কাজগুলো যখন করে, দেখতে বেশ ভালো লাগে। ঈর্ষা থেকে বলছি না—আমার আসলেই ভালো লাগে, যখন ধরুন, ও কাউকে নাটমেগ (প্রতিপক্ষের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল নিয়ে যাওয়া) করে।’
ভালো লাগা তো আছেই, সঙ্গে মেসির সঙ্গে তাঁর রসায়নটাও যেন জমে উঠেছে। মাত্র দুটি ম্যাচই গেছে, এখনই কিছু বলা মুশকিল। তবে মাঠে মেসি-তুরানের মধ্যে যুগলবন্দী বার্সা সমর্থকদের আরও ভালো কিছুরই আশা জাগাচ্ছে। কাল প্রথম মেসির গোলে সহায়তা করলেন। কে জানে, এটি হয়তো আরও অনেকগুলোর শুরু। আর মেসি যেভাবে খেলেন, তাতে ব্যাপারটা যে একমুখী হবে না সেটি তো নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায়। শুধু নেবেন না, মেসি দেবেনও।
তুরান কাল ম্যাচ শেষে জবাব দিলেন বার্সায় তাঁর যোগ দেওয়ার কারণ নিয়ে সব প্রশ্নেরও। মেসির সঙ্গে খেলার কারণ তো আগেই জানিয়েছেন, এবার জানালেন বার্সেলোনা কোচের ভূমিকার কথাও, ‘লুইস এনরিকে আমার বল ধরে রাখার ক্ষমতার জন্য, আর আমার জয়ের ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতার জন্য দলে চেয়েছিলেন। আমি সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই কেন আমাকে দলে নেওয়া হয়েছে।