লালুর ভেলকি:ভোটে জিতলে ‘তাড়ি’ চালু
আন্তজার্তিক ডেস্ক রিপোর্টার : এবার লোকসভা ভোটে জিতলে তাড়ি চালু করবে লালুপ্রসাদ’রা। এটা তাদের মুখের কথা নয়-একেবারে লোকসভা ভোটের ইস্তাহারেই তা প্রকাশ করেছে তারা। জানা গেছে, বিধানসভা নির্বাচনে লালুপ্রসাদের দল আরজেডি আজ নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে পাটনায়-। তাতে আগামী ২০২০ সালে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট। ‘প্রতিবদ্ধতা পত্র’ নামে ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে ছিলেন তেজস্বী যাদব, মনোজ ঝা, রামচন্দ্র পূর্বে-সহ দলের বিভিন্ন নেতা।
আরজেডি এই ইস্তাহারে তাড়ি বিক্রির অনুমতি থেকে সংরক্ষণ, জাতিগত জনগণনার কথা বলেছে। মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট সংক্রান্ত পরামর্শ কার্যকর করা এবং সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে সংরক্ষণের কথাও বলেছে। তেজস্বীর দাবি, ‘‘জনসংখ্যার হিসেবে দেশে সংরক্ষণের শতাংশ বাড়াতে হবে।’’নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৬ সালে রাজ্য জুড়ে মদ বন্ধ করেন। সেই সঙ্গে তাড়ি বিক্রিও বন্ধ করা হয়। সে সময়ে সরকারে অন্যতম শরিক ছিল আরজেডি। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তেজস্বী। নীতীশের সিদ্ধান্তের সমর্থন করেছিলেন লালু। উল্টো পথে হেঁটে আরজেডির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে লেখা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে রাজ্য জুড়ে তাড়ি বিক্রি বৈধ করা হবে।
তেজস্বী বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এলে আগের মতোই তাড়ি বিক্রি এবং খাওয়া যাবে। সমস্যা হবে না।’’ বিহারে পাসি সম্প্রদায় তাড়ি বিক্রি করে থাকে। মহাদলিত এই সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে নীতীশের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি। তাড়ি বিক্রি বন্ধ হওয়ায় পাসি সম্প্রদায়ের লোকেরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের কাছে টানতে আরজেডি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যে মদ নিষেধের আইনের বিরোধী যাঁরা তাঁদেরও কাছে টানতে লালুপ্রসাদের দলের এই সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আসলে তাড়ি হচ্ছে-‘বাংলা মদ’ এক ধরনের পানীয়। একে অনেকে তাড়ি/ তারি/অনেকে পচানি বলে। এই তারি বা বাংলা মদ বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। ভদকা যেমন রাশিয়ার, শ্যাম্পেন যেমন ইতালির ইত্যাদি। তেমনি এই বাংলা বাংলার একটি ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য হাজার বছরের বাংলার সংস্কৃতির একটি উপাদান। রাজা বাদশারা যদিও এটি খেতেন খুব উচ্চ মরগিয় উপাদান দিয়ে তৈরি করা। একে আদর করে বলা হত শুরা। এটি সেই প্রাচীন আমল হতেই বাংলার প্রাচীন আদিবাসীরা খেয়ে আসছিল।
ওদিকে রাজ্যে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরিতে সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণি পাশ যুবকেরা সুযোগ পাবে বলেও ইস্তাহারে আশ্বাস দিয়েছে আরজেডি। বর্তমানে মাধ্যমিক পাশ ছেলেরাই এই সুয়োগ পায়। এতে রাজ্যের বড় অংশের বেকার যুবক আরজেডিকে সমর্থন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে প্রবাসী বিহারিদের জন্য হেল্পলাইন চালুর কথাও বলেছে আরজেডি। তবে গরিবদের জন্য সরকারি চাকরিতে ১০% সংরক্ষণ নিয়ে কিছুই বলেনি আরজেডি।