লন্ডনে তারেকের শহরে বিচারপতি শামসুদ্দিনের ওপর হামলা,অপহরনেরও চেষ্ঠা হয়েছিল-নাদিয়া
লাবণ্য চৌধুরী: সুপ্রিম কোর্টের সদ্য সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। লন্ডনে স্থানীয় সময় বুধবার রাত নয়টা ১০ মিনিটে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। বিচারপতির শামসুদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে নাদিয়া চৌধুরী ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ওই হামলার কথা জানান।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে নাদিয়া তাঁর ফেসবুক লেখেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করবেন। বুধবার লন্ডনে নামার পরপরই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এই শহরে তারেক জিয়া আরামে বসবাস করেন এবং এই মুহূর্তে তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও এখানে অবস্থান করছেন। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার সময় বাবা হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেন যে, বেথনাল গ্রিন এলাকার ইয়র্ক হলে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন করে যাবেন। কারণ সেখানে তাঁর অনেক পরিচিতজন রয়েছেন বলে তিনি জানতে পারেন।’
হামলার ঘটনার বিষয়ে নাদিয়া জানান, ‘সেখানে পাঁচ মিনিটের মতো অবস্থান করেন তাঁরা। সবার অনুরোধে এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন তাঁর বাবা। তিনি সবাইকে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান। আমরা বেরিয়ে আসি। এরপর রাস্তা পার হয়ে ওপারে দাঁড়ানো গাড়িতে উঠতে যাই। এ সময় আমি খেয়াল করি যে, এক ব্যক্তি হেঁটে বাবার খুব কাছে চলে যান। এরপর ইশারায় জিজ্ঞাসা করে যে, তিনিই সে কি না। এরপর ওই ব্যক্তি বিচারপতির কাছে জানতে চায়, আপনি কি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী?
উত্তর না দিয়ে তিনি সেখান থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখন আশপাশ থেকে আরও কয়েকজন ব্যক্তি এসে তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। আমি যতটুকু পেরেছি বাবাকে রক্ষার চেষ্টা করেছি এবং যেটুকু সম্ভব ওই ব্যক্তিদের আঘাত করেছি। কিন্তু তারা বাবাকে ক্রমাগত লাথি মারতে থাকে, একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। আমরা দুজনেই সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি। এ সময় তারা বাবার ফোন কেড়ে নেয়।’
দুঃখ করে নাদিয়া বলেন, ‘আমি দেখতে পাই রাস্তার অপর পাশে ভিড় জমে গেছে এবং সবাই দাঁড়িয়ে তাদের ওপর হামলার দৃশ্য দেখছে। সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়েও আসছে না। এই ঘটনা এমন জায়গায় ঘটেছে যেখানে রাস্তার অপর পাশেরই বড় উৎসব চলছে এবং হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছেন। এর আগে লন্ডনে আমাদের বাড়ির কাছে একইভাবে বাবার ওপর হামলা চালানো হয়েছিল।’ ঘটনাটি স্থানীয় পুলিশকে জানানো হয়েছে বলেও ফেসবুক পোস্টে জানান নাদিয়া।
আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল তিনটায় আরেক স্ট্যাটাসে নাদিয়া যাঁরা যাঁরা এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন, উৎকণ্ঠা দেখিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘অবাক লাগে, আব্বুর সঙ্গে ভেতরে এত মানুষ ছবি তুলল, অথচ হামলার সময় একজনও এগিয়ে এল না।
এমনকি হাইকমিশন থেকে আসা দুই ব্যক্তিও হামলার সময় পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা একটি সাদা গাড়ি নিয়ে এসেছিল এবং অস্ত্র ও জোর দেখিয়ে আমাদের অপহরণও করতে চেয়েছিল ওরা।ওরা বাবাকে গাড়িতে তুলতে চাইছিল। আব্বু ও আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি যে, তারা আব্বুকে অপহরণ করতে চেয়েছিল। যদি আমি আব্বুকে রক্ষা না করতাম তাহলে তারা তাই করত। এ ভয়াবহ ঘটনায় কেউ সাহায্য করেনি।’