লন্ডনে আগুন-কমরু পরিবারের স্বজনদের কে স্বান্তনা দেবে?
শ্রীমঙ্গল থেকে মিতা নূর : লন্ডনে টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় কমরু পরিবারের স্বজনদের কান্না থামছে না। স্বজনরা ভাবছেন কমরু পরিবারের সবাই মারা গেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, আগুন লাগার পর হতে ভোর তিনটা পর্যন্ত কমরু মিয়া মোবাইল ফোনে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেন। কিন্তু এর পর থেকে কমরু মিয়ার সঙ্গে বাহিরের টেলিফোন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পশ্চিম লন্ডনের নর্থকেনসিটনের গ্রিনফেল টাওয়ারে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় মধ্যরাতের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের খৈসাউড়া গ্রামের মো. কমরু মিয়া নামের প্রবাসীর পরিবারের পাঁচজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রবাসী পরিবার এখনো দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। তারা ভাবতেই পারেননি যে লন্ডনের মত জায়গায় স্বজনরা আগুনে পুড়ে মারা যাবে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সিলেটের ঘরে ঘরে এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে প্রবাসী কমরু মিয়ার চার সদস্যের পরিবার পুড়ে যাওয়ার ঘটনা এবং বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা কন্যা তামিমার আকুতি অনেকের মনে দাগ কেটেছে। ঘটনার নির্মমতায় মৌলভীবাজারের অনেকেই কেঁদেছেন।
যদিও লন্ডন পুলিশ এখনো কমরু মিয়া নামের ওই প্রবাসী পরিবারের কোন সন্ধান দিতে পারেনি। তবে মৌলভীবাজারে তার স্বজনদের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে তারা অকুস্থলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মরা গেছেন। কমরু মিয়ার আত্মীয় পরিজনদের সূত্রে জানা যায়, কমরু মিয়া তার পরিবারের চার সদস্য সহ দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তবে তার বড় ছেলে সুজন মিয়া (৫০) ও দুই বিবাহিতা মেয়ে দেশে গ্রামের বাড়িতে থাকেন।
বিভিন্ন সূত্র জানা যায়, আগুন লাগার পর হতে ভোর তিনটা পর্যন্ত কমরু মিয়া মোবাইল ফোনে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেন। কিন্তু এর পর থেকে কমরু মিয়ার সঙ্গে বাহিরের টেলিফোন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। হতভাগ্য পরিবারটি ওই ভবনের সপ্তদশ তলার ১৪৪ নম্বর ফ্লাট এ বসবাস করতেন।
তারা আগুন থেকে বাঁচার জন্য বাথরুমের ভিতর আশ্রয় নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। অগ্নিকাণ্ডে কমরু মিয়া (৮৫), তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৬০), ছেলে আব্দুল হানিফ (২৯), আবদুল হামিদ (২৬), ও মেয়ে হুসনা বেগম তানিমা (২২) মারা গেছেন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিলেটের মৌলভীবাজারের একাটুনা ইউনিয়নের বিরইনবাদ গ্রামে কমরু মিয়াদের বাড়ী। তাদের এই নির্মম পরিণতিতে গ্রামের বাড়িতে কান্নার রোল পড়েছে। পড়শি ও স্বজনরা এসে বাড়িতে ভিড় করেছেন। কারো মুখে কোন কথা নেই। মাঝে মধ্যেই কান্নার রোল পড়ে।