• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

লতিফ সিদ্দিকীর মাথা গরম হজ-তাবলীগের অবমাননা


প্রকাশিত: ৯:৩০ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ১৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৭ বার

 

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
গতকাল রোববার বিকেলে নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক টাঙ্গাইল সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তাঁর বক্তব্যের এই ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

আমি হজ আর তাবলীগ জামাতের দু‘টোর ঘোরতর বিরোধী : লতিফ সিদ্দিকী

এবার ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত করলেন সরকারের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি সরাসরি মুসলমানদের পবিত্র হজের বিরুদ্ধে কথা বললেন। বলেছেন, আমি হজ আর তাবলীগ জামাতের দু‘টোর ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর বিরোধি। তার চেয়েও হজ ও তাবলীগ জামাতের বেশি বিরোধি।

পবিত্র হজ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী  বলেন, আমি কিন্তু হজ আর তাবলীগ জামাতের ঘোরতর বিরোধি। আমি জামায়াতে ইসলামীর বিরোধি। তার চেয়েও হজ ও তাবলীগ জামাতের বেশি বিরোধি। তিনি বলেন, এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোন কাম নাই। এদেও কোন প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে। মন্ত্রি বলেন, এভারেজে যদি বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ লোক হজে যায় প্রত্যেকের ৫ হাজার টাকা করে ৫‘শ কোটি টাকা খরচ হয়।

তিনি হজের শুরু প্রসঙ্গে বলেন, আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কিভাবে চলবে। তারাতো ছিল ডাকাত। তখন একটা ব্যবস্থা করলো যে আমার অনুসারিরা প্রতিবছর একবার একসাথে মিলিত হবে। এরমধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে। তাবলীগ জামাতের সমালোচনা করে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, তাবলীগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদেরতো কোন কাজ নেই। সারাদেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।

তিনি তার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদেও উদ্দেশ্যে বলেন, কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। ‘জয় ভাই’ কে। জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিভিশনে অনুষ্ঠিত ‘টক্ শো’রও সমালোচনা করেন। মন্ত্রীর পবিত্র হজের বিরুদ্ধে এ ধরনের বক্তব্য রাখার পর স্থানীয় প্রবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সংবাদটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ প্রবাসীদেও অনেকেই অভিযোগ কওে বলেন, এর আগেও এ মন্ত্রী একাধিকবার অসংলগ্ন কথা বলেছেন। তাকে এখনও মন্ত্রিসভায় রাখায় তারা প্রশ্ন তুলেছেন।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রীর এধরনের বক্তব্যে বিশ্মিত দলের কর্মী ও সমর্থকরা। সভাস্থলেই অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করলে এক পর্যায়ে মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউ ইয়র্ক সফর করছেন ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন প্রবাসীর মন্ত্রির কাছে প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের কম্পিউটার ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক কানেকটিভিটি কোন পর্যায়ে। আমরা জানতে পেরেছি এ ব্যাপারে জয় ভাই ইন্টারনেটের কানেকশনের কাজ করচেন। এসময় কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে দেখা যায় মন্ত্রি আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে। তিনি এসময় বলেন, জয় ভাই কে। পাশ থেকে এসময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলে উঠেন , সজীব ওয়াজেদ জয়। মন্ত্রি বলে উঠেন, সে করার কে। এসময় প্রশ্নকর্তা বলেন, তার তো এ ব্যাপাওে প্ল্যান রয়েছেই। মন্ত্রি এবার বলেন, ও সেটা বলেন, ওনার একটা প্ল্যান আছে। এসময় মন্ত্রি তার ডান পাশে উপবিষ্ট যুক্তরাষ্ট্র সভাপতি এবং একজন প্রবাসীকে দেখিয়ে বলেন, এধরনের প্ল্যান সিদ্দিকুর রহমান করতে পারে, সেও করতে পারে। জয় একজন কম্পিউটার বা ইনফরমেশন টেকনোলজী সাইন্সটিস্ট। তার নিজস্ব পরিকল্পণা আছে। সরকার জনগনের।

জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন। তিনি তার মায়ের তথ্য উপদেষ্টা। এটাও ঠিক আছে। তিনি একজন শিক্ষক সেটাও ঠিক আছে। তিনি কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননা। সিদ্ধান্ত গ্রহণ কওে সরকার। কার্যকর করে মন্ত্রী। ভাল-মন্দ , ন্যায়-অন্যায় যা কিছু তার দায় মন্ত্রীর। বর্তমান মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর দাযিত্ব। এখানে জয়ের কিছু নাই। মন্ত্রি বলেন, একজন একটি বই লিখেছেন। সে বই এর লেখকের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। যিনি পড়াচ্ছেন এবং পড়ছেন দায়-দায়িত্ব তাদের। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে এসময় মন্ত্রি বলেন, কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন।

মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিদেশে এসেছেন কামলা দিতে এবং সবসময়  কামলাই দিবেন। রাজনীতি করার দরকার কি।  টিভির টক শো‘র সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বরেন, আমরা রাগ হলে দেশে একটা গালি দেই চুৃৃৃনি (অশ্রব্র একটি গালি)। এসময় হলভর্তি প্রবাসীদের বিশ্মিত পিনপতন নীরবতা। মন্ত্রি ওই গালির সাথে মিল রেখে টকশোতে অংশগ্রহণকারিদের ‘টক মারানি’ বলে আখ্যায়িত করেন। মন্ত্রি বলেন , ওয়ান এলিভেন এর পর আমি যাদের কাছে ৪ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিলাম।  ১ লাখ পেয়েছি।  তাদের কোন তদবির আমি এখন রা করিনা।

 

পবিত্র হজ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী।’ তিনি বলেন, ‘এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘এভারেজে (গড়ে) যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায়; প্রত্যেকের পাঁচ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।’
হজ কীভাবে এসেছে, সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল, এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে। তারা তো ছিল ডাকাত। তখন একটা ব্যবস্থা করল যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।’
তাবলিগ জামাতের সমালোচনা করে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘তাবলিগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদের তো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন? জয় ভাই কে? জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও কেউ নন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা টকশো’তে যায়, তারা টক ম্যান। নিজেদের কোনো কাজ না থাকায় ক্যামেরার সামনে গিয়ে তারা বিড়বিড় করে। চু…ভাইদের আর কোনো কাজ নেই।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বারবার উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন মন্ত্রী। এক সাংবাদিককে ধমক দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কি তোমার মতো কথা বলব? আমি আমার মতো কথা বলব। তুমি এখানে আসলা কেন, তোমাকে কে বলেছে আসতে?’
ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হজ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যের পর স্থানীয় প্রবাসীদের মধ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সংবাদটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যে বিস্মিত দলের কর্মী ও সমর্থকেরা। সভাস্থলেই অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করলে একপর্যায়ে মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্ক সফর করছেন আইসিটি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।