• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

র‌্যাব নিয়ে টাগ অব ওয়্যার- ‘এবার অর্থ আত্মসাতে ১৮ র‌্যাব প্রত্যাহার’


প্রকাশিত: ৩:৪৭ এএম, ২০ মে ১৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮১ বার

স্টাফ রিপোর্টার: ২০ মে ২০১৪:

র‌্যাব-৩-এর একটি কোম্পানির এক মেজরসহ ১৮ কর্মকর্তাকে সম্প্রতি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিয়মবহির্ভূত কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে র‌্যাবের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সদর দপ্তরে সংযুক্তির বিষয়টি স্বীকার করলেও এর কারণ স্পষ্ট করেননি। বিষয়টিকে ‘রুটিন রদবদল’ বলেছেন কেউ কেউ।
এই ১৮ জনকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অফিশিয়াল সংবাদ সাইট ডিএমপি নিউজে গতকাল সোমবার সকালে ‘এবার অর্থ আত্মসাতে ১৮ র‌্যাব সদস্য প্রত্যাহার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিকেলে আবার সংবাদটি প্রত্যাহার করে নেয় ডিএমপি নিউজ। সন্ধ্যায় র্যাবের পক্ষ থেকে ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য পাঠানো হয়।
ডিএমপি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাব-৩-এর সিপিসি-৩-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আলী আহসানসহ ১৮ জনকে প্রত্যাহার করেছে সদর দপ্তর। ওই কর্মকর্তারা কুমিল্লা থেকে চার ব্যক্তিকে আটক করেন। ওই চারজনের কাছে দেড় লাখ টাকা ছিল। কিন্তু জব্দ তালিকায় দেখানো হয় ৬০ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ৯০ হাজার টাকা তাঁরা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। এ ঘটনায় আটককৃতদের পরিবার র্যাব সদর দপ্তরে অভিযোগ করলে তদন্তে সত্যতা বেরিয়ে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিপিসি-৩-এর সব সদস্যকে সদর দপ্তরে প্রত্যাহার করা হয়।
র‌্যাব সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে র্যাব-৩-এর খিলগাঁও ক্যাম্পের (ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-৩) সদস্যরা চার তরুণকে আটক করেন। তাঁরা হলেন তানভির আহম্মেদ, মো. সজিব, মো. সোহাগ ওরফে রনি সাহা ও মো. কামাল। অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা নিয়ে নেন র‌্যাব সদস্যরা। পরে তাঁদের ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে ১৪ মে মাদক আইনে মামলা দিয়ে মুগদা থানায় সোপর্দ করা হয়। মামলার জব্দ তালিকায় ৩৭ হাজার টাকা ও ২৬০টি লাল ও সবুজ রঙের ট্যাবলেট এবং একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার দেখানো হয়। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
ওই চারজনকে গ্রেপ্তারের পর মুগদা থানায় মামলাটি করেন র্যাব-৩-এর এএসআই সৈয়দ মাহমুদ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৪ মে ভোররাতে মুগদা থানাধীন অতীশ দীপঙ্কর সড়ক থেকে চারজনকে ইয়াবাসহ আটক করে র্যাব। মামলায় বলা হয়, ধৃত আসামিরা ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাঁরা অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে ইয়াবাগুলো নিজেদের কাছে রেখেছিলেন।
এ বিষয়ে র‌্যাবের  দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলেননি। মুঠোফোনে ও র্যাব সদর দপ্তরে গিয়েও তাঁদের কোনো বক্তব্য মেলেনি। তবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এ টি এম হাবিবুর রহমান বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেছেন, বাহিনীর ‘অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে’ তাঁদের সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ডিএমপি নিউজের প্রতিবাদে র‌্যাবের বক্তব্য: ডিএমপি নিউজের সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বক্তব্যে বলা হয়, ‘ওই সংবাদটি উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট। একটি সরকারি সংস্থা তথা একটি স্বনামধন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে অপর একটি বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার শুধুমাত্র বাহিনীসমূহের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ন করে না। বাহিনীতে কর্মরত সদস্যদের মনোবল ও কর্মস্পৃহাকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের এহেন কর্মকাণ্ডের কারণে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় সকলকে।’
র্যাবের বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘র্যাব সব সময় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাবের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তা গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় র্যাব সদস্যদের প্রয়োজনে এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিটে সংযুক্ত-বিযুক্ত করা হয়।’ র্যাব-৩-এ কর্মরত কিছু সদস্যকে এ রকম সংযুক্ত করাকে কেন্দ্র করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে সবাইকে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়।