• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

র‌্যাবের ১১ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার নিদেশর্না দেয়ায়-


প্রকাশিত: ১:৩৭ পিএম, ৮ জুন ১৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২১৩ বার

Rabব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শাহানুর আলম নামের এক স্থানীয় ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে র‌্যাবের সন্দেহভাজন ১১ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার জেলার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

ইংরেজি দৈনিক নিউএজ পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, নিহত শাহানুর আলমের ভাইয়ের ১লা জুন দায়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে র‌্যাবের ১১ জন সদস্যর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেন। র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা প্রদানের পর পর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিচারক প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে সরকার শাহানুর হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহভাজন ৯ জন র‌্যাব সদস্যকে বাঁচানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সরকার যদি মনে করে তবে নির্দিষ্ট পদ থেকে প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রত্যাহার করে নিতে পারে। তবে যেই র‌্যাব-১৪’র সদস্যরা শাহানুর আলমকে ক্যাম্পে তুলে নিয়ে গিয়ে নারকীয় উপায়ে হত্যা করলেন সেই র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করার জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনাটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না অথবা প্রয়োজনীয় বদলির ব্যাখ্যাও এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না। মূলত অভিযুক্ত র‌্যাব সদস্যদের রক্ষা করার জন্য সরকার অনেকটাই বিব্রত হয়ে এই ধরনের কাজের আশ্রয় নিয়েছে।

বিচারিক কাজে সরকারি বাধার বিষয়টি স্বাধীন বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ হল কি না তা একবার ভেবে দেখতে হবে। সরকার এমন সময় এই কাজটি করল যখন বিশেষায়িত এই বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূতহত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও জোরপূর্বক অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। বলতে দ্বিধা নেই যে ক্ষমতাসীন সরকার আত্মরক্ষার নামে আইনশৃংখলা বাহিনীর মাধ্যমে সারাদেশে বিচার বহির্ভূতহত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিচারিক কাজে বাধা দেওয়া এবং সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বদলি করে সরকার আবারও বার্তা দিল যে তারা বিশেষায়িত বাহিনীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিচার করতে নারাজ এবং এই বাহিনীর মাধ্যমে বিচার বহির্ভূতহত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো সহসাই থামবে না।

সরকারকে বুঝতে হবে যে আইন সকলের জন্য সমান। কেউ আইনের উর্ধ্বে নন। অপরাধ করলে বিচারের সম্মুখিন হতেই হবে। আইনশৃংখলা বাহিনীর কাজ হল দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, মানুষের নিরাপত্তা বিধান করা। কিন্তু সেই আইনশৃংখলা বাহিনী যদি জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করে, জনগণের রক্ত চুষে খেতে চায়, তখন আর দেশে আইনের শাসন থাকে না, রাষ্ট্র তখন প্রেতাত্মাদের দখলে চলে যায়। সুতরাং এখন সময় আছে সব কিছু গুছিয়ে নেওয়ার। সরকারকে বুঝতে হবে আইনশৃংখলা বাহিনী জনগণের বন্ধু, অবশ্যই প্রাণহরণকারী যমদূত নয়।