‘রোহিঙ্গা গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা’
ডেস্ক রিপোর্টার : মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাখাইন সংকটে উদ্বেগ জানিয়ে সেখানে মানবিক সাহায্যকর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দিতে দেশটির কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ শুক্রবার আল জাজিরা টেলিভিশনের অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হিথার নওয়ার্ট গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, রাখাইনে গণহারে রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র বেসামরিক লোকজন কর্তৃক সহিংসতাসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে বড় ধরনের বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে।
হিথার নওয়ার্ট বলেন, ‘মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রক্তক্ষয়ী হামলা ফের নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে স্থানীয় (রাখাইন) লোকজনের ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর আরও হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো আমরাও আহ্বান জানাই।’
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি গতকাল দাবি করেন, তাঁর সরকার রাখাইন রাজ্যের প্রত্যেকে রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’-এর সঙ্গে আলাপকালে এই দাবি করেন সু চি। তবে তিনি রাখাইনে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের কয়েকটি তল্লাশিচৌকিতে উগ্রবাদীদের হামলার সূত্র ধরে রাখাইন রাজ্যে দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর থেকেই প্রাণভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।
রাখাইনে সহিংসতা থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকায় রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের আসা অব্যাহত আছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল হলেও সংখ্যাটা এখন ৩ লাখের ধারেকাছে বলে মনে করছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। পালিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পরিকল্পিত দমন অভিযানের বিবরণ দিচ্ছে।রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা দুই সপ্তাহ ধরে অব্যাহত থাকায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা অব্যাহত রয়েছে।