রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা বিভাগের সর্বাধিনায়ক আইনসহ চার বিল পাস হলো সংসদে
সংসদ রিপোর্টার : সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ-বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হওয়ার ঘোষণা বাস্তবায়ন করার বিধান সম্বলিত ‘প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (সর্বাধিনায়কতা) আইন, ২০১৬ বিল সংসদে পাস হয়েছে।
দশম সংসদের দশম অধিবেশনে মঙ্গলবার সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন।
বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, জনমত ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ২৬ জানুয়ারি নবম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হয়।
বিলের ২ ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ সমূহের প্রধান হবেন এবং তিনি সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে তার ওপর ন্যস্ত প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণের মাধ্যমে প্রয়োগ করবেন। রাষ্ট্রপতির সাধারণ নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণ তাদের অধীনস্থ বাহিনীর উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
বিলের ৩ নং অনুচ্ছেদে ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯ রহিত করা হয় এবং একইসঙ্গে উক্ত অর্ডিন্যান্স বলে কৃত সকল কার্যক্রম এই আইনের অধীনে কৃত, গৃহীত বা সূচিত হয়েছে বলে সংরক্ষণ দেওয়া হয়।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধনী) আইন ২০১১ দ্বারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহ সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় কার্যকারিতা হারায়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ অধ্যাদেশটি উক্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত। অধ্যাদেশটির অধীন বিধানসমূহের কার্যকারিতা জনস্বার্থে বহাল ও অক্ষুণœ রাখার লক্ষ্যে নতুন আইন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিল প্রণয়ন করা হয়েছে। কার্যকারিতা হারানো অধ্যাদেশটির স্থলে এ সংক্রান্ত নতুন আইনরে খসড়া বিল মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।
এর আগে আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট আইনী শূন্যতা সমাধানকল্পে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেন। পরে সংবিধানের ৯৩(২) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা পূরণকল্পে বাতিল ঘোষিত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরণ (বিশেষ বিধান) আইন ২০১৩ প্রণীত হয়।
এছাড়া একই কারণে ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিসেস ল’ এমেন্ডম্যান্ট অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮ রহিত হয়ে যাওয়া আইন বলে উক্ত সময়ে সম্পন্ন বা চলমান কার্যক্রমকে সংশোধিত আইনে সূচিত, কৃত ও গৃহীত হয়েছে মর্মে সংরক্ষণ দিয়ে ‘প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (কতিপয় আইন সংশোধন) আইন, ২০১৬ বিল গতকাল সংসদে পাস হয়। বিলের উদ্দেশ্য ও কার্যকারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিসেস ল’ এমেন্ডম্যান্ট অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮ দ্বারা বিদ্যমান নেভী (এক্সটেনশন অর্ব সার্ভিস) এ্যাক্ট ১৯৫০, আর্মি এন্ড এয়ান ফোর্স রি-সার্ভিস এ্যাক্ট ১৯৫০, এয়ার ফোর্স (এক্সটেনশন অর্ব সার্ভিস) এ্যাক্ট ১৯৫২, এয়ার ফোর্স এ্যাক্ট ১৯৫৩, নেভী অর্ডিন্যান্স ১৯৬১’র কতিপয় সংশোধন সাধন করা হয়েছিল। অধ্যাদেশটির অধীন বিধানসমূহের কার্যকারিতা জনস্বার্থে বহাল ও অক্ষুণœ রাখার লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।