রাষ্ট্রপতির সেকেন্ড হোম তুলকালাম-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে সেনসেটিভ বিষয়
শফিক রহমান : মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রপতির সেকেন্ডহোম নিয়ে তুলকালাম কান্ড চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান আলোচনার বিষয় রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের দ্বৈত নাগরিকত্ব। মালয়েশিয়ায় তার ‘সেকেন্ড হোম’ দাবি করে চলছে গুঞ্জন। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির দ্বৈত নাগরিকত্বের গুঞ্জনটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে রিলেটেড কোনো কাজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নয়।
রাষ্ট্রপতি মালয়েশিয়ার নাগরিক কি না এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাছে জানতে চাইবে কি না, এমন প্রশ্ন উপদেষ্টা বলেন, “আমি স্পেকুলেশনের (অনুমানের) ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে জানতে চাইব না।‘সেকেন্ড হোম’ থাকার পর কি রাষ্ট্রপতি হওয়া যায় কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টাকে জিজ্ঞেস করুন।
বিষয়টি সংবেদনশীল জানিয়ে এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না বলেও জানিয়েছেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, এটার মধ্যে আইনগত দিক আছে, রাষ্ট্রপতির নিজের ব্যাপার আছে। এটা নিয়ে নাড়াচাড়া করা আমার কাজ নয়। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, এটা নিয়ে চাইলে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু করতে পারে। এটা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী জুলকারনাইন সায়েরের এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের বিদেশে সম্পদ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে।
এর আগে জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে রাষ্ট্রপতির পাসপোর্ট,দুবাই ব্যবসার কার্ড, সংশ্লিষ্ট কিছু ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সেকেন্ড হোম রাষ্ট্রপতি’।
এদিকে সীমান্তে হত্যা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের পথে বড় বাধা সীমান্ত হত্যা। এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভালো করার অন্তরায়।সর্বশেষ গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামের এক কিশোর বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। এ সময় ওই কিশোরের বাবা মহাদেব সিংহসহ আরেকজন আহত হন।
গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে স্বর্ণা দাস নামে আরেক কিশোরী নিহত হন। এ ঘটনার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কড়া প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়।উল্লেখ্য, সীমান্ত হত্যা বন্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না এই হত্যাকাণ্ড।
সীমান্তে হত্যা নিয়ে আরও এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করে। যখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় বলা হতো, তখনও সীমান্ত হত্যা হতো।রোহিঙ্গা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত দুই থেকে আড়াই হাজার রোহিঙ্গা যুক্তরাষ্ট্রে গেছে। বছরে ২০ হাজার করে ১০ বছরে ২ লাখ রোহিঙ্গাকে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।