• সোমবার , ২০ মে ২০২৪

রাজনীতির মিরজাফর রুহুলদের শিক্ষা!!


প্রকাশিত: ২:৫৭ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ১৮ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৪ বার

শফিক রহমান : জাতিরকন্ঠে ফোন করে এক পাঠক জানতে চেয়েছেন-শুধু বোল্ড আউট থেকে কি জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারদের মতো রাজনীতিকদের শিক্ষা হবে? নাকি তাঁদের সকল ইনিংস থেকে বাদ দিতে হবে? তাঁর আরো প্রশ্ন হলো-রাজনীতির গনতন্ত্রায়ন করতে হলে তো এই ধরনের রুহুল আমিন হাওলাদারদের দেশ বা সমাজ থেকেই বয়কট করা উচিত? তাছাড়া দুদক’ই বা কি করছে?

রাজনীতির বাজারে এতো প্রমাণ থাকার পরও কেনো তাঁরা নিশ্চুপ! তাহলে কি নির্বাচন বানিজ্যে’র মতো নোংরা ব্যবসা চলতেই থাকবে? টাকার কাছে কি বিক্রি হয়ে যাবেন রাজনীতিকরা?? এসব নিয়ে এখনই ভাবার সময় এসেছে। সময় হয়েছে সকলকে কথা বলার। নির্বাচনে মনোনয়ন বানিজ্যে নিজের পকেটভারি করাটা যেন এখানেই শেষ হয়। আর যেন কোনো রুহুল পয়দা না হয় রাজনীতির ময়দানে।

এই জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের নির্বাচন বানিজ্যের বিরুদ্ধে প্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হোসাইন মৌসুমী। এনিয়ে তিনি জাতিরকন্ঠে মুখ খুললে গোমর ফাঁস হয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজনীতির দুষ্ঠু ক্ষত রুহুল তড়িঘড়ি করে মামলা ঠুকে দেন অনন্যা হোসাইন মৌসুমী বিরুদ্ধে। কিন্তু তাতে কি তার শেষ রক্ষা হলো??

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টিকে প্রত্যাশিত আসনে ছাড় দেয়ার কথা থাকলেও মূলত. মনোনয়ন বানিজ্যের জন্য অনেক জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের নাম বাদ দেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। জোটগত নির্বাচনে ন্যুনতম ৫০টি আসন দাবি ছিলো জাতীয় পার্টির। কিন্তু মহাসচিবের রহস্যপূর্ণ ভূমিকার কারণে জাতীয় পার্টির বেশ ক’জন সংসদ সদস্য, মনোনয়ন প্রত্যাশী তালিকা থেকে বাদ পড়েন।

বিশেষ করে, ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, চট্টগ্রাম-৯ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কুমিল্লা-২ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি আমির হোসেনকে মহাজোট থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। অভিযোগ উঠেছে একটি বিশেষ মহলের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে এসব আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিশ্চিত করেননি এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

দলের মনোনয়নে হবিগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুল মুনিম চৌধুরী বাবুর নাম থাকলেও বিপুল অংকের অর্থের বিনিময়ে শেষ মুহুর্তে তার নাম কেটে দিয়ে এই আসনে আতিকুর রহমান আতিককে অন্তর্ভূক্ত করা হযেছে। সূত্র জানায়, মনোনয়ন নিশ্চিত করা হবে বলে মনোনয়ন পাননি এমন অনেক নেতার কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, কাজী মামুনুর রশীদ, মোস্তফা আল মাহমুদ, আলাউদ্দীন মৃধা, ছাত্র সমাজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম রিপনসহ অর্ধশতাধিক নেতার কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য সোমবার বলেন, দলের মহাসচিব প্রায় শতকোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। চাপের মুখে এখন অনেককে টাকা ফেরত দেয়ারও আশ্বাস দিচ্ছেন।

তিনি নিজের ও স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্নার আসন দুটি নিশ্চিত করেছেন সবার আগে। বিপরীতে গোপন সমঝোতা আর আর্থিক সুবিধা নিয়ে দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়নবঞ্চিত করেছেন। এ নিয়ে জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের মহাসচিবের মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে মুখ খুলেছেন জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হোসাইন মৌসুমী।

সোনারগাঁও থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে এ আসনে লিয়াকত হোসেন খোকার মনেনানয়ন নিশ্চিত করা হযেছে। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে অনন্য হোসাইন মৌসুমী ফেসবুকে প্রকাশ্যে পোস্ট দেন। এতে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এই সময়ের শক্তিশালী রাজনৈতিকদল হওয়া সত্বেও পার্টির মহাসচিবের মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে অনেক ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ব্যক্তি স্বার্থে জাতীয় পার্টিকে বিক্রি করে দিয়েছেন মহাসচিব। তার কারণে দল এখন ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। তিনি দ্রুত জাতীয় পার্টি থেকে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বহিস্কারেরও দাবি জানান।