রাখে আল্লা মারে কে-সেই খাদিজা সুস্থ হয়ে উঠছেন যেভাবে-
সাভার প্রতিনিধি : রাখে আল্লা মারে কে-সেই খাদিজা সুস্থ হয়ে উঠছেন। সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের চাপাতির কোপে মারাত্মক আহত খাদিজা আক্তার নার্গিসের বেঁচে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল। তবে চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম এবং সবার দোয়ায় নার্গিস একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছে।
সোমবার দুপুরে সাভারের পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) নার্গিসের বাবা মাসুক মিয়া জাতিরকন্ঠকে জানান, রাখে আল্লা মারে কে-সেই খাদিজা সুস্থ হয়ে উঠছেন।তিনি জানান, পুলিশ প্রহরায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতাল থেকে নার্গিসকে সাভারের পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) স্থানান্তর করা হয়।
খাদিজার বাবা জানান, মেয়ের খবর শুনে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালেই কাটিয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম ও সবার দোয়ায় তার মেয়ে একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নার্গিস গতরাতে আমাকে বলেছে বাবা তুমি পরিবারের জন্য একাই কষ্ট করে যাচ্ছো। আমি ব্যাংকার হয়ে তোমাদের সেবা করতে চাই। মেয়ের এই অবস্থার জন্য দায়ী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের ফাঁসির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে মেয়েদের কুপিয়ে জখম করার পরও যদি কোনও বখাটের বিচার না হয় তা হলে তাহলে এদেশে বসবাস করাটাইতো অসম্ভব হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী যেমন তার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। ঠিক তেমনি ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের সঠিক বিচারও তিনি করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
এদিকে, সাভার পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপির) নিউরো সার্জন ডা. সাইদ উদ্দিন বলেন, খাদিজার বাম পাশের অংশ এখনও অবশ হয়ে আছে। সব ধরনের থেরাপি দিয়ে তাকে দ্রুত সুস্থ করার জন্য আমরা চেষ্টা করবো। খাদিজার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লেগে যাবে বলেও তিনি জানান।
পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপির) প্রকল্প কর্মকর্তা মো. সোরহাব হোসেন বলেন, নার্গিসের উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তার চিকিৎসার সকল ব্যয় হাসপাতাল বহন করবে বলেও তিনি জানান।
গত ৩ অক্টোবর শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম সিলেট এমসি কলেজের পুকুর পাড়ে সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। প্রথমে তাকে সিলেটে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ভোরে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হয় ও স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৫৫ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আজ নার্গিসকে সিআরপিতে পাঠানো হয়। অন্যদিকে ওই ঘটনার পরপর বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। আর এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর অসুস্থ নার্গিসের চিকিৎসাভার গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।