রশিদ লায়েক মন্ত্রীর মিটিয়ে-নানা প্রশ্ন!
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ কানেকশনে পার পেয়ে রশিদ লায়েক মিটিং করলেন বানিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। অথচ দুদিন আগে এই বানিজ্যমন্ত্রী চাল মজুদদার রশিদ লায়েককে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই দুই ব্যক্তি চাল সংকটে নানা কেলেংকারির জনক ও সুবিধাভোগী। ওই চাল’বাজদের আমলনামায় নানা দুর্নীতি’ও প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু তাদের আইনের আওতায় না এনে ওদের সঙ্গেই বানিজ্যমন্ত্রী’র বৈঠক নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, হঠাৎ ওরা ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে গেল কি করে??
যাহোক মন্ত্রী আনুষ্ঠানিক মিটিংয়ে বললেন- যেভাবে পারেন চাল আনেন, দাম কমান। আমি এনবিআর ও কাস্টমসকে বলে দিচ্ছি। কেউ বাধা দেবে না। এছাড়া ভারত থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে চাল আমদানি করতে আমি নিজে কথা বলবো। যে ভাবেই হোক চালের দাম কমাতে হবে। কথাগুলো বললেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার বেলা ১২টায় চাল বাজারের অস্থিরতা নিয়ে সচিবালয়ে মিল মালিক, আমদানিকারক ও আড়তদারদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি ব্যবসায়ীদের এসব কথা বলেন। দীর্ঘ বৈঠকে চাল ব্যবসায়ীরা আমদানিতে তাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা জানান। তাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
চাল ব্যবসায়ে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, চাল আমদানিতে চটের বস্তা ব্যবহারে সরকারি বাধ্যবাধকতায়ও খরচ বাড়ছে। চটের বস্তায় চাল আমদানি করলে প্রতি কেজিতে এক টাকা খরচ বাড়ে। আর প্লাস্টিকের বস্তায় খরচ হয় মাত্র ১৫/১৬ পয়সা। যদি চটের বস্তা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা স্থগিত করা হয় তবে আমদানিতে প্রতি কেজি চালের দাম দুই টাকা কমবে।
ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো তাৎক্ষণিক মেনে নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের চাল সংকট নিরসনে চটের বস্তায় চাল আমদানির সরকারি বাধ্যবাধকতার সিদ্ধান্ত আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত থেকে সরকারিভাবে কীভাবে চাল আমদানি করা যায় এ ব্যাপারে সরকার ভাবছে। এ ছাড়া চালের ট্রাক আটকে থাকার জটিলতা নিরসনে ট্রেনে করে চাল আমদানি করা যায় কি না এ ব্যাপারেও সরকার ভাবছে। বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, চালের দাম কমাতে উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সরকারের খাদ্যবান্ধব যে কর্মসূচি রয়েছে তা আপাতত বন্ধ থাকবে।
বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও খাদ্য সচিব মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক পক্ষের সভাপতি আব্দুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী, অপর গ্রুপের খোরশেদ আলম খান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানসহ বিভিন্ন চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গেলো সপ্তাহ হতে খুচরা বাজারে মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, আঠাশ চাল ৫২-৫৩, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ ও বাসমতী ৬৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে আসছিল। তবে গেলো কয়েকদিন ধরে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানের চালের আড়তে অভিযান চালিয়েছে। পাশাপাশি ভারত, মিয়ানমার, ভিয়েতনামসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে চাল আমদানির কথা বলছে সরকার।