রমজানে বৃটেনের হাসপাতালগুলো মুসলিমদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের আহ্বান
লাবণ্য চৌধুরী.ঢাকা: রমজান শুরুর সাথে সাথে বৃটেনের হাসপাতালগুলো সেদেশের মুসলমানদের অনুরোধ জানিয়েছে তারা যেন কিডনী বা লিভারের মতো শারিরীক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানে এগিয়ে আসে।
বৃটেনে প্রায় ২৭ লাখ মুসলিম বসবাস করে। কিন্তু অন্য ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানে মুসলিমদের অংশগ্রহণ অনেক কম। ফলে মুসলিম রোগীদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরুন মুসলিম রোগী নাজমার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। সেখানকার ডাক্তার আদনান শরীফ জানান দ্রুত তা পরিবর্তন করা দরকার। কিন্তু এজন্য তার হয়তো ৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ উপযুক্ত কিডনী পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের মুসলিম রোগীদের অঙ্গ পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। অনেক রোগীই অপেক্ষা করতে করতে মারা যান। কারণ তাদের দরকারী কিডনী শেষ পর্যন্ত মেলে না। আমার হিসেবে এরকম সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
বৃটেন জুড়েই অমুসলিমদের তুলনায় মুসলিমদের একটি উপযুক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পেতে এক বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। কারণ কিডনী বা লিভার নেয়ার আগে সেটি জেনেটিকভাবেও দাতা কর্তৃপক্ষের সাথে মিলতে হয়। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুসলিমদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানে উৎসাহিত করছে। অন্ততপক্ষে সদ্য মৃত আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে প্রত্যঙ্গগুলি সংগ্রহ করে দান করতে বলা হচ্ছে।
তবে এটা যে শুধু যুক্তরাজ্যের সমস্যা তা নয়। গেলো বছর এপ্রিলে ইসলামী চিন্তাবিদরা পাকিস্তানের করাচিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে অনেকে যেমন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দানে সম্মতি দিয়েছেন আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন শেষ বিচারের দিন কাঠগড়ায় এমন অঙ্গ প্রত্যঙ্গহীন শরীর কাজে লাগবে কি-না?
অনেকদিন ধরেই বৃটেনে মুসলিমদের মধ্যে এ ধরনের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছেন ইয়াসির মোস্তফা। তিনি বলেন, কোরআনে এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা নেই। ইসলাম বিশেষজ্ঞদের এ নিয়ে নানা মত আছে।
যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করেন রেহানা সিদ্দিক। তিনি বলেন, সংকটের সময় অনেক মুসলিম পরিবারের মধ্যেও তিনি কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করেছেন। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের বিষয়ে মুসলিম পরিবারের মধ্যে ২ রকমের মত রয়েছে।
আর এই সংকটের একজন ভুক্তভোগী বৃটেনের পুলিশ কর্মকর্তা পারভেজ হোসাইন। একটি কিডনি পেতে যার ৩ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। গ্লোবাল অবজারভেটরি অন ডোনেশন এ্যান্ড ট্রান্সপ্লানটেশনের হিসেব অনুযায়ী সারা পৃথিবীতেই মুসলিমদের ভেতরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের হার অনেকটাই সীমিত।