এস এম রহমান.ঢাকা: যৌন নিপীড়ক-যৌন ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্কিত একদল জিনযৌন অপরাধের জিন’ বলে সুনির্দিষ্ট কোনো জিনের প্রমাণ নেই। কিন্তু আবেগ নিয়ন্ত্রণ, বুদ্ধিমত্তা ও যৌন ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্কিত একদল জিনই আসলে কোনো ব্যক্তির এমন অপরাধের প্রবণতার জন্য দায়ী।
একজন যৌন নিপীড়ক পুরুষের অন্য
পুরুষ আত্মীয়রাও এমন নিপীড়কের ভূমিকায় নামতে পারেন! আর পুরুষদের মধ্যে যৌন নিপীড়নের এই স্বভাব থাকবে কি থাকবে না তার ৪০ শতাংশই নাকি জিনগত! সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন সুইডিশ বিজ্ঞানীরা।
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এমন পুরুষের ভাইদের, গড় পুরুষদের তুলনায় এই অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অন্তত পাঁচগুণ বেশি বলেও দাবি করা হয়েছে গবেষণাটিতে। এতে আরও বলা হয়, যৌন নিপীড়ন বা হয়রানির স্বভাবের বিষয়টি মুখ্যত জিনগত এবং বাবার কাছ থেকে ছেলের শেখা, বা ভাইয়ের কাছ থেকে ভাইয়ের শেখার মতো পরিবেশগত প্রভাব এখানে গৌণ।
স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের সাইকিয়াট্রিক এপিডেমিয়োলজির অধ্যাপক নিকলাস ল্যাঙসট্রম বলেন,‘এই গবেষণার অনুসন্ধান এটা নয় যে, একজন যৌন নিপীড়কের ছেলে বা ভাইও আবশ্যকভাবেই যৌন নিপীড়ক হবে। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, পারিবারিক ঝুঁকিটা সব সময়ই থেকে যাচ্ছে।’
ল্যাঙসট্রম আরও বলেন,‘যৌন অপরাধের জিন’ বলে সুনির্দিষ্ট কোনো জিনের প্রমাণ নেই। কিন্তু আবেগ নিয়ন্ত্রণ, বুদ্ধিমত্তা ও যৌন ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্কিত একদল জিনই আসলে কোনো ব্যক্তির এমন অপরাধের প্রবণতার জন্য দায়ী।
১৯৭৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সুইডেনে যৌন অপরাধের জন্য দোষী প্রমাণিত হওয়া ২১ হাজার ৫৬৬ জন পুরুষের নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই গবেষণায়।
দেখা গেছে, যৌন অপরাধে দোষী প্রমাণিত হওয়া ওই পুরুষদের ভাই বা বাবাদের মধ্যে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নিজেরাও এমন অপরাধে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। ধর্ষণ এবং শিশু নিপীড়নের মতো দুই ধরনের যৌন অপরাধের ক্ষেত্রেই এই প্রবণতা একই রকম বলে দেখতে পেয়েছেন গবেষকেরা।
যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস পর্যবেক্ষণ নতুন কোনো বিষয় নয়। এর আগেও এ বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগই ছিল পর্যবেক্ষণমূলক। সুইডিশ এই গবেষণাটিই এ বিষয়ে বিপুল পরিমাণ বাস্তব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ যাবৎ পরিচালিত সবচেয়ে বড় গবেষণাগুলোর একটি।
আর এতদিন ধরে এই অপরাধের প্রবণতাকে ‘নিপীড়নের চক্র’ বা অন্যান্য ‘পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব’ দ্বারা প্রভাবিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই গবেষণার ফল বলছে, যৌন অপরাধের প্রবণতা প্রধানত জিনগত প্রভাবে ঘটে থাকে।