আয়াস মিত্র .মেক্সিকো: ‘দিনে কুড়ি বার। সপ্তাহে মোট কতবার হয়, নিজেরাই হিসেব করুন!’ প্রায় ভাবলেশহীন মুখে বলল মেয়েটি। দিনে কুড়ি বার ধর্ষণ! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। মেয়েটি মেক্সিকোর এক বছর তেইশের যুবতী। মাত্র ১২ বছর বয়সে নারী পাচার চক্রের হাতে পড়ে সে। আর তখন থেকেই শুরু তাঁর জীবনের ভয়াবহ অধ্যায়ের।
কৈশোর থেকে যৌবনে পৌঁছে মেয়েটি শিখে নিয়েছে কষ্ট এড়িয়ে বেঁচে থাকার উপায়। সকাল দশটা থেকে মধ্যরাত, এক শহর থকে আর এক শহরে গিয়ে জুটেছে সেই একই লাঞ্ছনা, একই যন্ত্রণা। যন্ত্রণায় কেঁদে উঠলেও তাঁর কাছে আসা মানুষগুলোর থেকে সহানুভূতি জোটেনি। কেনই বা জুটবে সহানুভূতি! তারা তো নগদ খরচ করে ফুর্তি করতে এসেছে।
তাই নিজের যন্ত্রণা এড়িয়ে যাওয়ার অন্য উপায় বেছে নিয়েছিল সে। “আমি আমার দু’চোখ বুজে নিতাম, যাতে আমি আমার শরীর-মনের যন্ত্রণা আর অনুভব না করতে পারি।” “আমি ৪৩,২০০ বার ধর্ষিত হয়েছি।” খুব সহজে তাঁর জীবনের এই নির্মম সত্যটা জানালো মেয়েটি।
২০০৮ সালে নারী পাচার চক্রের বিরুদ্ধে মেক্সিকো পুলিশের একটি অভিযানে তাঁর এই অভিশপ্ত জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তখন তাঁর বয়স ১৬। কিন্তু তখনই সে এক সন্তানের মা। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। কিন্তু ওই চার বছরের কথা মনে পড়লে এখনও চোখে জল আসে।
এখনও আতঙ্কিত হয়ে ওঠে বছর তেইশের মেয়েটি। তাঁর কাছে শৈশব মানে শুধুই যন্ত্রণা, শুধুই ধর্ষণ। মেয়েটির নাম নাই বা জানলেন। যদি পারেন তো শুধু ওঁর কষ্টটা অনুভব করে সমাজের এই ব্যাধি নির্মূল করতে সচেষ্ট হন। যাতে এদেশেও নির্ভয়া কাণ্ডের পূনরাবৃত্তি না হয়।