যাত্রীদের রক্ষাকারী ‘ভূত’ খোপরি বাবা’র অদ্ভূত সব কান্ডকিত্তি!
ডেস্ক রিপোর্টার : ইতিপূর্বে এ দশের মানুষ পাথর, গাছ, এমনকী কুকুরকেও দেবজ্ঞানে পুজো করেছে। বাকি ছিল ভূত। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সেই অভাবটাও পূরণ করে ফেলেছেন মানালি-লেহ্ হাইওয়ের যাত্রীরা।
বাংলার এক প্রাচীন প্রবাদ— দশচক্রে ভগবান ভূত হয়ে যান। কিন্তু কোন মন্ত্রবলে ভূত ভগবান হয়ে ওঠে, তা কিন্তু জানা যায় না। ইতিপূর্বে এ দশের মানুষ পাথর, গাছ, এমনকী কুকুরকেও দেবজ্ঞানে পুজো করেছে। বাকি ছিল ভূত। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সেই অভাবটাও পূরণ করে ফেলেছেন মানালি-লেহ্ হাইওয়ের যাত্রীরা।
মানালি-লেহ্ হাইওয়ের এক আজব জায়গা গাটা লুপস। এখানে পর পর ২২টি হেয়াপবিন বাঁক নিয়েছে সড়ক। লেহ্-লাদাখের শুকনো আবহাওয়া আর ন্যাড়া পাহাড়ে এমনতিই জায়গাটাকে অপ্রাকৃত বলে মনে হয়।
এই জায়গাতেই খানিকটা জমি ইট দিয়ে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে ‘খোপড়ি বাবা’-র মন্দির। উঁকি দিলে দেখা যায়, এক মড়ার খুলিকে চাদর জড়িয়ে রাখা রয়েছে। লোকবিশ্বাস— এই ২২টি বাঁকওয়ালা মরুজগতে খোপড়ি বাবাই নাকি বিপন্নের রক্ষক। তিনিই নাকি দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করেন যাত্রীদের।
খোপড়ি বাবা-র খুলিটির মালিক কে? কোথা থেকেই বা এই খুলি এসে জুটল? এই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন। স্থানীয় পরিমণ্ডলে বেশ কিছু কাহিনি ঘুরপাক কায়। কারো মতে, এই খুলিটি এক ড্রাইভারের, যে নিজের জীবন বিপন্ন করে বাসযাত্রীদের জীবন বাঁচিয়েছিল। দুর্ঘটনায় সে আহত হয়। এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
তার এই শেষ দশায় কেউ তার পাশে ছিল না। কেউ তাকে দেখতেই পায়নি। কিন্তু মৃত্যুর বেশ কিছুকাল পরে তার খুলি ও কিছু হাড়গোড় পাওয়া যায়। এবং তার পর থেকেই গাটা লুপস-এ দুর্ঘটনা কমে আসে। লোকশ্রুতি ছড়ায়— খোপড়ি বাবাই রক্ষা করছেন এই দুর্গম এলাকাকে।
খোপড়ি বাবা-কে সন্তুষ্ট করা খুবই সহজ। এক বোতল মিনেরাল ওয়াটার ও এক প্যাকেট সিগারেট হলেই চলে যায়। মানালি-লেহ্ হাইওয়ের অনৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝখানে খোপড়ি বাবার মন্দির ঘিরে মিনেরাল ওয়াটারের বোতলের স্তূপ এক আশ্চর্য দৃশ্য রচনা করে, যার তুলনা সারা দেশেই পাওয়া অসম্ভব।