যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বোমাবাজির নেপথ্যে-ম্যানসেল?
যশোর.জেলা প্রতিনিধি : যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে বোমাবাজি ও পুলিশের উপর্যুপরি গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। একই সঙ্গে এমএম কলেজের আসাদ হলে অভিযান চালিয়ে বহিরাগত ১০ জনকে আটক এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- রকি (২২), গাজী হাসান (২০), রাশেদ নিয়াজি (২৪), সুমন হোসেন (২১), মিথুন সরকার (২৬), এএম আকাশ (২২), জেডএ বিজয় (২৫), তিতাস মিয়া (২৩) শাহিন (২২) ও মহিদুল ইসলাম (১৯)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম গান পাউডারসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ১০ হাতবোমা ও ১৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকালে অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে যশোর এমএম কলেজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর ও পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। এরপরপরই পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত্ হোসেন, এমএম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মিজানুর রহমান।
এসময় হঠাৎ করেই মূলগেটসহ প্রবেশপথের পুরোটাই উন্মুক্ত করে দেয় পুলিশ। ফলে শহীদ বেদিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হট্টগোল করে মিনারের পাদদেশে চলে যায়। এর পরপরই শহীদ মিনারের উত্তরপাশে একটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের পর পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। পুলিশ অন্তত ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা নারী, পুরুষ ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। এই ঘটনার পর ভোরে পুলিশ এমএম কলেজের আসাদ হলে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল জানিয়েছেন, শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর এমপি নাবিল আহমেদের সাথে থাকা সন্ত্রাসী ম্যানসেলের নেতৃত্বে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর এমপির গাড়িচালক গুলিবর্ষণ শুরু করে। আর পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের আটক করছে।
এদিকে শহীদ মিনারে বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সকালে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর শপথ গ্রহণ শেষে জোট সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান বলেন, প্রশাসন শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা তীব্র ভাষায় এর নিন্দা জানাই।
তবে পুলিশের এএসপি শাফিন মাহমুদ নিরাপত্তা ত্রুটির অভিযোগকে অস্বীকার করে জাতিরকন্ঠকে বলেন, সেখানে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। শহীদ মিনারের ভেতরে কেউ বোমা ফেলেনি। বোমা পড়েছে কলেজ প্রাচীরের বাইরে। বার হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্যই পুলিশ গুলিবর্ষণ করে।