• শনিবার , ১৪ জুন ২০২৫

যখন উঠে দাড়াই চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম: রমেশ


প্রকাশিত: ৫:০১ পিএম, ১৩ জুন ২৫ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭ বার

‘বিমান ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটে গিয়েছিল, আমি যখন উঠে দাঁড়াই, আমার চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ।

ইন্ডিয়া থেকে মীরা নায়ার : আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ বলেন, ‘‘বিমান ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটে গিয়েছিল, আমি যখন উঠে দাঁড়াই, আমার চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।” উঠেই আমি দৌড়তে শুরু করি। শুক্রবার সকালে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী রমেশ এভাবেই তাঁর প্রাণ রক্ষা ও বিমান ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা জানাচ্ছিলেন দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন প্রতিনিধিকে।

৪০ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ জানান, ২০০৩ সাল থেকে তারা ব্রিটেনে থাকেন। তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানেরা সেখানেই রয়েছেন। তিনি ভারতে এসেছিলেন আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর সঙ্গে বৃহস্পতিবার লন্ডনে ফিরছিলেন তাঁর ভাইও। তাঁকে আর খুঁজে পাননি তিনি। রমেশ জানিয়েছেন, বিমানের অন্য দিকের আসনে জায়গা পেয়েছিলেন তাঁর ভাই। তাঁর কোনও খোঁজ পাননি তিনি।

রমেশ বলেন, বিমান ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটে গিয়েছিল। আমি যখন উঠে দাঁড়াই, আমার চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। উঠেই আমি দৌড়তে শুরু করি। আমার চারপাশে বিমানের অনেক টুকরো দেখতে পেয়েছিলাম। তার পর কেউ আমাকে টেনে ধরে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলল। আমি হাসপাতালে চলে এলাম।

শুক্রবার সকালে রমেশ আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ডাক্তারদের জানিয়েছেন, তাঁর আসনটি খুলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই কারণে হয়তো তিনি বাঁচতে পেরেছেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে রমেশ বলেন, গোটা বিমান ভেঙে পড়ল। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনিতে আমার সিটটা খুলে এসেছিল। তাই হয়তো আমি বেঁচে গেলাম। রমেশ বলেন, আমি যে দিকে পড়েছিলাম, সেখানে হোস্টেলের একতলার ফাঁকা জায়গা ছিল কিছুটা। সেখান দিয়ে আমি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি; এসময় আমার বাঁ হাত একটু পুড়ে যায়।

জানা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ বিমানের ইকোনমি ক্লাসের ১১এ আসনে বসেছিলেন রমেশ। তাঁর আসনটি ছিল আপৎকালীন দরজার কাছেই। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। যেখানে বিমানটি ধাক্কা খেয়েছিল, সেটি ডাক্তারদের একটি হোস্টেল। আচমকা বিমান এসে আছড়ে পড়ে, ঢুকে যায় বিল্ডিংয়ের ভিতরে। বিমানের বহু দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। তা শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওই বিমানে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫২ জন ব্রিটিশ, সাত জন পর্তুগিজ এবং এক জন কানাডিয়ান নাগরিক। গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী এই বিমানেই লন্ডনে যাচ্ছিলেন। তাঁরও মৃত্যু হয়েছে।