মৎস্যকন্যাদের অজানা অধ্যায়
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার : স্কুলের শিক্ষককে বড় হয়ে মৎস্যকন্যা হতে চান বলে জানিয়েছিলেন কেইটলিন নিলসেন। আর সেই কথা শুনে ক্লাসের অন্য বাচ্চারা হেসেছিল একচোট। তবে সেই ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে জীবনের ৩২ বছর বয়সে এসে নিলসেন তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এখন নিলসেন একটি গোপন সংগঠনের সদস্য। যাঁরা নিজেদের আধা মানুষ, আধা মাছ বলে মনে করেন। এরা নিজেদের ‘মারফোক’ বলে সম্বোধন করেন।
খুব ছোটবেলায় ডিজনির ছবি লিটল মারমেইড দেখার পর থেকেই মৎস্যকন্যা হওয়ার শখ জাগে নিলসেনের। এরপর সব সময় মৎস্যকন্যা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।
আর এই মৎস্যকন্যার জীবন পাওয়ার জন্য সিলিকনের লেজ তৈরি করে নিয়েছেন গোপন সংগঠনটির সদস্যরা। অবশ্য তাঁদের কাছে এটা লেজের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এটি তাঁদের জীবনেরই অংশ।
এ বিষয়ে নিলসন বলেন, ‘আমার সব সময়ই মনে হয়, আমি একটি ত্রুটি নিয়ে জন্মেছি, আর সেটি হলো আমার পা জোড়া। যখন লেজ খুলে ফেলি তখনই বরং অদ্ভুত অনুভূতি হয় আমার। হঠাৎ করে দুটো পা এসে পড়ে, যাদের আমি চাই না। তখন আমার নিজেকে খুব কদাকার মনে হয়।’
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা যুক্তরাষ্ট্রজুড়েই ‘মার’ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেওয়া এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। এরা সবাই দিনের বেশির ভাগ সময় লেজ পরে থাকতে ভালোবাসেন। সিলিকনের এই লেজ তৈরি করতে সময় লাগে প্রায় এক বছর, আর খরচ হয় সাড়ে তিন হাজার ডলারের বেশি অর্থ। এই লেজ পরেই সুইমিংপুল বা সাগরের পানিতে সাঁতার কাটেন ‘মার’রা। এসব মারে’র দাবি, যখনই তাঁদের লেজ পানি স্পর্শ করে, তখনই একধরনের আত্মবিশ্বাস অনুভব করেন তাঁরা। দারুণ এক ভালো লাগায় ভরে ওঠে মন।
একজন পুরুষ ‘মার’ জানালেন, মার হিসেবে জীবনযাপন করার সবচেয়ে দারুণ বিষয় হলো, এর মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করা যায়। স্বপ্নে যেমন করে বাঁচতে ইচ্ছা হয়, সেটাকেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই মার’রা একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজেরা যুক্ত থাকেন। এর মাধ্যমেই পরবর্তী কর্মকাণ্ড ঠিক করেন তাঁরা। শুধু নারীরাই নন, অনেক পুরুষও আছেন এই দলে। আর এই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য ‘মার’ জগতে আলাদা আলাদা নামও থাকে তাঁদের।
গত বছর বিশ্বের শতাধিক ‘মার’ নর্থ ক্যারোলাইনার গ্রিনসবোরে মিলিত হয়েছিলেন। যা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার ম্যানিয়া সম্মেলন। সেখানে তারা বিশাল একটি সুইমিং পুলে সময় কাটান। এভাবেই আনন্দের সঙ্গে মৎস্যকুমার বা মৎস্যকন্যার জীবন কাটিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের অনেক মানুষ। গোপন সংগঠনের ছায়ায় হলেও নিজেদের স্বপ্নকে সত্যি করে বাঁচছেন তাঁরা।