ম্যারাডোনাই পারে আর্জেন্টিনাকে জাগাতে
দিনা করিম : আর্জেন্টিনায় একটা নতুন ম্যারোডোনা দরকার। যে ম্যারোডোনা কিংবদন্তি ম্যারাডোনাকে হার মানাবে? যে পারবে সাতবারের ব্যর্থতা ভুলিয়ে দিতে জাতি ও কোটি দর্শকদের। আবার খুঁজে আনতে হবে ইশ্বরের হাত।যে হাত জাগাবে আর্জেন্টিনাকে। কিংবদন্তি ম্যারোডেনাকে দিয়েই নতুন করে চেষ্ঠা করতে হবে।
রবার্ট ব্রুসের গল্পটা কি জানা আছে মেসিদের? থাকার কথা, স্কটিশ ইতিহাসের অংশ হলেও কিংবদন্তি ব্রুসের এই গল্প যে সব দেশের শিশুকেই শেখানো হয়। শেখানো হয়, পরাজয়ে লজ্জা নেই। হেরে গেলেও উঠে দাঁড়াতে হয়, নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে যেতে হয়। শেষ বিন্দুটুকু দিয়ে লড়তে হয় নিজের অধিকার আদায় করার জন্য।
আর্জেন্টিনার একমাত্র সম্বল এখন এটি। এ ছাড়া আর কোনোভাবেই সান্ত্বনা পাওয়ার কথা না মেসি-আগুয়েরো-হিগুয়েনদের। সেই কবে ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর আর কোনো বড় প্রতিযোগিতায় শিরোপা হাতে ফিরতে পারেনি তারা। এর মাঝে ৭টি ফাইনাল খেলেছে দলটি, প্রতিবারই খালি হাতে ফিরেছে দলটি। ৪টি কোপা আমেরিকা, ২টি ফিফা কনফেডারেশন কাপ, ১টি বিশ্বকাপ—প্রতিবারই ব্যর্থ ম্যারাডোনার উত্তরসূরিরা।
২৩ বছর! দর্শক সমর্থন চিন্তা করলে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি দল এত দিন ধরে ব্যর্থ—ভাবতেই তো অবাক লাগে! ২৩ বছর, এর মাঝে কত কিছুই না ঘটে গেছে পৃথিবীতে। মঙ্গল অভিযান হয়েছে, বাংলাদেশের একজন নোবেল পেয়েছেন, স্মার্টফোন নামক এক ‘জাদুর কুপি’ মানুষের হাতে এসেছে। আবির্ভাব ঘটেছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের। মানুষ বাইরের জগৎ ভুলে মেতেছে ভার্চ্যুয়াল জগতে।
কিন্তু এই ২৩ বছরে একটি জিনিসেরই কোনো পরিবর্তন হলো না—আর্জেন্টিনার শিরোপা–খরা। সামাজিক গণমাধ্যমের এমন বাড়বাড়ন্তের যুগেও কেউ একবারের জন্য লিখতে পারলেন না, ‘অভিনন্দন আর্জেন্টিনা, আজ বিজয়ী তোমরা’। লিওনেল মেসির আবির্ভাবের পরও দুঃখ কাটল না দলটির। টানা ৩ বছর ৩টি ফাইনাল খেলেও খালি হাতেই ফিরল তারা। এত এত প্রজন্মের এত তারকাও পারল না আর্জেন্টিনার শিরোপা–খরা কাটাতে।
রবার্ট ব্রুসের গল্পের ধৈর্যশীল মাকড়সা সাতবার ব্যর্থ হয়ে অষ্টমবারের চেষ্টায় সফল হয়েছিল তার কাজে। আর্জেন্টিনাও ৭টি ফাইনাল হারল এই ২৩ বছরে। রবার্ট ব্রুসের ওই গল্প ছাড়া আর কোনো দাওয়াই তো দেখা যাচ্ছে না দক্ষিণ আমেরিকান এই দলের জন্য!