মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডস্থ মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বালিকা শাখার শিশু বয়সী এক শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে একজন শ্রমিকের বির’দ্ধে। যিনি ওই বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজে নিয়োজিত। এ ঘটনায় বিদ্যালয় ও এর আশপাশ এলাকায় চলছে তোলপাড়, অভিভাবকদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। যদিও এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও সনাক্তই করতে পারেনিÑ কে ওই শ্রমিক। এদিকে, মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ এ বিষয়ে কিছুই জানে না বলে দাবি করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা এটি। গত শনিবার এ বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। যার প্রধান বিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক এবং সদস্য নির্যাতিতা ও অপর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক। সোমবার প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীকে ওই শ্রমিক স্কুলের ভেতরই ডেকে নিয়ে যায় নির্জন জায়গায়। এরপর চালায় যৌন নির্যাতন। ঘটনাটি এর দু’একদিন বাদে শিক্ষার্থী তার অভিভাবককে এসব জানালে শনিবার অভিযোগ করা হয় অধ্যক্ষের কাছে। রোববার সকালেও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
সরেজমিনে রোববার দুপুরে বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি খোলা মাঠে অভিভাবকদের একটি জটলা দেখা যায়। এখানে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা জড়ো হয়েছিলেন। দুজন গ্রহণ করছিলেন অভিভাবকদের সাক্ষর ও মোবাইল নম্বর। জানা যায়, অপরাধীর শাস্তির দাবিতে অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি প্রদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিভাবকরা। যাতে সংগৃহীত এসব সাক্ষর সংযুক্ত করা হবে। তবে ঘটনার বিস্তারিত কেউ বলতে রাজি হননি।
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতর মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের কড়া প্রহারা। অভিভাবকদের কয়েকজন বলছেন যাতে অভিভাবকরা প্রতিবাদ জানাতে ভেতরে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশি প্রহারা বসিয়েছে। তাদের অভিযোগ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এমনকি ভূক্তভোগীরা যাতে আইনের আশ্রয় না নিতে পারেন সে বিষয়েও ভূমিকা রয়েছে তার।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, এ ধরণের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের সঙ্গে রোববার দুপুরে সরাসরি কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রধান ফটক দিয়ে এ প্রতিবেদক প্রবেশের সময় একজন নিরাপত্তাকর্মী বাধা দিয়ে বলেন, স্যার এইচএসসি পরীক্ষার ডিউটিতে ব্যস্ত, ভেতরে যাওয়া যাবে না।
বিকালে মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমি চাই প্রকৃত অপরাধীর শাস্তিহোক। সেজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। যদিও এখনও অপরাধীকে সনাক্ত সম্ভব হয়নি। তার বির’দ্ধে অভিভাবকদের করা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান অধ্যক্ষ।