মৃত্যু বেড়ে ৪৩-স্বজনের আর্তনাদ করতোয়া তীরে
পঞ্চগড় প্রতিনিধি : এভাবেই মানুষ খুঁজছে স্বজনের লাশ। পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পর বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয় মৃতের ছবি। সেই ছবি মেলানোর চেষ্টা করছেন লাশ খুঁজতে আসা স্বজনেরা। সোমবার সকাল থেকে পঞ্চগড়ে বোদা উপজেলায় করতোয়া নদী পাড়ে ভিড় করেছেন নিখোঁজদের স্বজনেরা। চলছে তীর্থযাত্রীদের নৌকা ডুবির ঘটনায় মরদেহ শনাক্তের প্রক্রিয়া।ভোর থেকে নদী তীরে শুরু হয় ফায়ার সার্ভিসের দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান। অভিযানে আরও ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪৩ জনে। এখনও নিখোঁজ অনেকে।
উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহীর ডুবুরি দলের ইউনিটও। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে শালডাঙ্গা, দেবীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে একের পর এক মরদেহ।
নিখোঁজদের সন্ধানে ভোর থেকেই নদী পাড়ে ভিড় করেন স্বজনেরা। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আউলিয়ার ঘাট এলাকার পরিবেশ।তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, বিভিন্ন জায়গায় মরদেহের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। নিখোঁজ সবার সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।দিনাজপুরের খানসামায় আত্রাই নদী থেকে শিশুসহ ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, করতোয়া নদীতে তীর্থযাত্রীদের নৌকা ডুবির ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন শিশু আর বাকি ৫ জন নারী। প্রথমে দেবীগঞ্জের মিস্ত্রীপাড়া পরে মাড়েয়া, আউলিয়া ঘাট এবং দিনাজপুরের খানসামা থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার হয়।উল্লেখ্য, রোববার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়ার ঘাটের কাছে করতোয়ায় নদীতে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে শতাধিক মানুষ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করে।
এ সময় মাঝি নৌকাটি ঘাটে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে নৌকা ডুবে যায়। নৌকার যাত্রীদের অনেকেই সাঁতরে তীরে ওঠেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন উদ্ধারকাজে যোগ দেন এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু করেন।