• শনিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৪

মীর কাশেমের ফাঁসিরমঞ্চ-তৈরী জল্লাদ শাহজাহান রাজু ও পল্টু


প্রকাশিত: ৬:০৬ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩২১ বার

সাইফুল বারী মাসুম/মোস্তফা কামাল প্রধান  ::  রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাওয়ার প্রেক্ষাপটে মীর কাশেমের ফাঁসির প্রস্তুতি 6চলছে।ইতিমধ্যে ৩ জল্লাদ ফাঁসির মহড়া সম্পন্ন করেছেন। সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ কর্তৃপক্ষ।তাঁরা জাতিরকন্ঠকে বলেছেন, মীর কাশেমের ফাঁসি করতে পুরো প্রস্তুত জল্লাদ শাহজাহান, রাজু ও পল্টু ।এদের সহযোগীতার জন্যে রয়েছেন আরো কয়েকজন।

111এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক জাতিরকন্ঠকে বলেন, সরকারের আদেশ পেলে আমরা রায় কার্যকর করব। এজন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি আছে।

কারাসূত্র জাতিরকন্ঠকে জানায়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ আছে একটি। মঞ্চটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মোম মাখানো দড়িতে বালুর বস্তা দিয়ে প্রাথমিক মহড়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ শাহজাহান, রাজু, পল্টুসহ কয়েকজনকে।

11একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন।শুক্রবার কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন একথা জানিয়েছেন।

খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে আইজি প্রিজনসের মিডিয়া উপদেষ্টা মশিউর রহমান জানান, মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।এরআগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো তার কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি সময় নিয়ে শুক্রবার তার সিদ্ধান্ত জানান।

ইতিমধ্যে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির দণ্ড কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।এরই মধ্যে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করে প্রাথমিক মহড়া দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ দলকেও।
11
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক জাতিরকন্ঠকে বলেন, সরকারের আদেশ পেলে আমরা রায় কার্যকর করব। এজন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি আছে। কারাসূত্র জানায়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ আছে একটি। মঞ্চটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মোম মাখানো দড়িতে বালুর বস্তা দিয়ে প্রাথমিক মহড়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ শাহজাহান, রাজু, পল্টুসহ কয়েকজনকে।

==এই জল্লাদ দল ইতিপূর্বে যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিত আসামি মতিউর রহমান নিজামী, কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করেছিল। এখন সরকারের সিদ্ধান্ত পেলেই দণ্ড বাস্তবায়ন করা হবে।

সূত্র আরও জানায়, দেশের ৬৮টি কারাগারের মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ একটি ব্যতিক্রমী ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন কারাগার। সেখানে বন্দিদের থাকার জন্য রয়েছে ৬তলা বিশিষ্ট ৬টি ভবন। প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে ২১টি করে ওয়ার্ড। এই কারাগারে ফাঁসির আসামিদের জন্য আছে ৪০টি কনডেম সেল, যার একটিতে রয়েছেন মীর কাসেম আলী।
2
এমনিতেই কারাগারটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমন্বয়ে নিরাপত্তা বেষ্টিত। এরপরও যেহেতু এখানে কোনো যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড প্রথমবারের মতো কার্যকর হতে যাচ্ছে, তাই কারাগারে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জেলার নাসির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলীকে ৪০নং কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হয়েছে।

এরআগে বুধবার বিকালে মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন কারাগারে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার পর কারা ফটকে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন- তার স্বামী মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্তের জন্য তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান)-এর জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ছেলে ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে।
mir kasem-hang manch-www.jatirkhantha.com.bd
এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার ছেলে নিখোঁজ বলে পরিবার দাবি করেছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায়ের কপি গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ পৌঁছানো হয়। রাত অনেক বেশি হওয়ায় তখন মীর কাসেম আলীকে তা পড়ে শোনানো হয়নি।

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পড়ে শোনানো হয়।৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর থেকে এ কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তির পর তাকে ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং আটটি অভিযোগে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগ শুধু কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে খুনের দায়ে (১১ নম্বর অভিযোগ) ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।

এছাড়া আরও ছয় অভিযোগে ৫৮ বছর কারাভোগের সাজা বহাল রাখেন। গত ৬ জুন আপিল বিভাগ মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল রেখে ২৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। মীর কাসেম ১৯ জুন ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন। মোট ৮৬ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি উত্থাপন করে ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চান তিনি। এই রিভিউ আবেদনের ওপর ২৪ আগস্ট শুনানি শুরু হয়।

পরে ২৮ আগস্ট শুনানি গ্রহণ শেষ করে ৩০ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য করা হয়। ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজের রায় ঘোষণা করেন