• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মিরপুরের দারোগা জাহিদের টাকায় হত্যা মামলা নরবড়ে


প্রকাশিত: ৭:৫১ পিএম, ৬ নভেম্বর ১৬ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৩৪ বার

খন্দকার বাদশা  :   মিরপুরের সেই দারোগা জাহিদের টাকায় হত্যা মামলা এবার নরবড়ে অবস্থা। ২০১৫ সালে মিরপুর jut-trader-sujon-www-jatirkhantha-com-bdথানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদের নির্যাতনে স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ী সুজনের নিহত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সুজনের স্ত্রীর সামনেই তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে সেই সময় ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।এ ঘটনায় মামলাও করেছিলেন নিহত ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান সুজনের স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসি।

হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে আসামিপক্ষের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন লুসি, এমনটাই অভিযোগ করছেন সুজনের পরিবারের সদস্যরা। ফলে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ২০১৫ সালে ধানমণ্ডির শংকর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন ঝুট ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান সুজন। সেই বছর ১৫ জুলাই স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসি ও ছোট ছেলে মোশাররফ হোসেনসহ সুজনকে মিরপুর থানায় ধরে নিয়ে যান এসআই জাহিদ। সেখানে নির্যাতনের একপর্যায়ে মারা যান তিনি।

নিজের চোখের সামনেই মিরপুর থানার ভেতরে সুজনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে তখন গণমাধ্যম, পুলিশ এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে জানিয়েছিলেন লুসি। স্বামীর হত্যাকারী হিসেবে জাহিদের বিরুদ্ধে মামলাও করেন তিনি। পরে সুজনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পুলিশও জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

এই ঘটনার দেড় বছরের পর হঠাৎ করেই নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করেন লুসি। এমনকি আসামি এসআই জাহিদ যেন এই মামলা থেকে অব্যাহতি পান এমন সাক্ষ্যও দেন তিনি। লুসি আসামিপক্ষের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুজনের মা শাহিদা বেগম। তিনি বলেন, টাকার লোভে এসআই জাহিদ ও তাঁর মায়ের কাছে বিক্রি হয়েছেন লুসি। এখন নিজের ছেলেমেয়ের খোঁজও নেন না তিনি।

শাহিদা বেগম অভিযোগ করে আরো বলেন,  স্বামীকে নির্যাতন ও হত্যার দৃশ্য নিজের চোখে দেখার পরও, এখন আদালতে তা স্বীকার করেননি লুসি। এমনকি আসামি এসআই জাহিদ যাতে এই মামলা থেকে অব্যাহতি পান এমন সাক্ষ্যও দিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এ কে এম সাজ্জাদুল হক শিহাব বলেন, ‘লুসি প্রথমে মামলাটাকে সমর্থন করেই সাক্ষ্য দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজ অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আসামিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই তিনি অসংলগ্ন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।’

এদিকে মামলা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে সুজনের মায়ের সাথে যোগাযোগের করেন জাহিদের মা। তিনি জমি বিক্রি করে সুজনের মাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে রাজি না করাতে  না পেরে লুসিকেই কিনে নেন এসআই জাহিদ। এনটিভির কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন জাহিদের মা। তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে আমার কাছে আসছে লুসি। কিন্তু আমি  তাকে পাত্তা দেইনি। লুসি আমার কাছে নিজ ইচ্ছেতেই এসেছে।’

এসআই জাহিদের মা আরো বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি আমার ছেলেকে বের হওয়ার সুযোগ দিলে সে তোমাকে দেখাশোনা করবে। তোমার বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে।’ লুসির এমন আচরণ ও এসআই জাহিদের মায়ের কর্মকাণ্ডের পর ব্যবসায়ী সুজন হত্যা মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।