• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

মিতু হত্যায় নির্দেশদাতা কে সেই বড়ভাই ! এসপি বাবুল কি কিছু লুকোচ্ছেন-নানা প্রশ্ন?


প্রকাশিত: ৫:৫৫ এএম, ২৭ জুন ১৬ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩১৬ বার

 
এস রহমান   :   কন্ট্রাক্ট কিলিং এ হত্যা করা হয় এসপি বাবুলের স্ত্রী মিতুকে। এর নির্দেশদাতা ও mitu marder-wasim-www.jatirkhantha.com.bdপরিকল্পনার পেছনে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার এক আত্মীয় জড়িত। কিন্তু এরা কারা তা এখনও বলছে না পুলিশ। কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ের জন্য মুসা দুই লাখ টাকা পেয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত গ্রেফতারকৃত আরেক আসামি আনোয়ার হোসেন ব্যাকআপ হিসেবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এদের দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার। বিকাল ৪টা থেকে ওয়াসিম এবং রাত সোয়া ৮টা থেকে আনোয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে দুজনই বলেন, টাকার বিনিময়ে তারা খুন করেন।

সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, মিতু হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেওয়া দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন ওয়াসিম ও আনোয়ার। দুজনই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা। এরমধ্যে ওয়াসিম নিজে মিতুকে গুলি করেন। আর আনোয়ার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য।sp-Babul-road-

ইকবাল বাহার জানান, ‘ঘটনার মোটিভ (উদ্দেশ্য) এখনো উদ্ধার করা যায়নি। তবে আটকরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র, এরা ভাড়াটে পেশাদার খুনি। এটা একটা টার্গেট কিলিং। হত্যাকাণ্ডে ৭-৮ জন অংশ নেয়। দুজন গ্রেফতার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ দুজনকে কখন, কোথায়, কীভাবে আটক করা হয় ‘তদন্তের স্বার্থে’ তা জানানো হয়নি।

এদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেফতার সবাই এসপি বাবুলের সোর্স হিসেবে কাজ করেন। আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এমন দুজনের বাইরেও আরও কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে রয়েছেন সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া তিনজন। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সূত্র বলছে, সমন্বয়কারী ছিলেন আবু মুসা। তার সহযোগী ছিলেন নবী, ওয়াসিম এবং আনোয়ার। ছেলে নিয়ে হেঁটে জিইসি মোড়ে যাওয়ার সময়ই মোটরসাইকেলে করে আসা নবী প্রথমে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে মিতুকে। সর্বশেষ ওয়াসিম গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

বাবুল কোনোভাবেই জড়িত নয়

মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে— এমনটি মানতে নারাজ এসপি বাবুল আক্তারের শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মোশারফ হোসেন। গতকাল তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ১০ মিনিটের কথা বলে ডিবি বাবুলকে নিয়ে গিয়েছিল। তবে সময় পেরিয়ে যেতে থাকলে আতঙ্গে ভুগছিলাম। এক সময় দেখি তার মোবাইল ফোন বন্ধ। তবে ডিবি অফিস থেকে বের হয়েই সে আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল বাবা আমি রিলিজ হয়েছি। তবে বাবুল এ ঘটনায় জড়িত এটা আমি কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারব না।
বাবুলকে মধ্যরাতে ডেকে আনার রহস্য

বাবুলকে মধ্যরাতে ডেকে আনার ঘটনায় নানা রহস্য সৃষ্ঠি হয়েছে।প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি বাবুল জড়িত? তিনি কি কোন তথ্য লুকাচ্ছেন? তাছাড়া যারা সরাসরি হত্যায় জড়িত ছিল তারা সবাই বাবুলের সোর্স।এক্ষেত্রে বাবুল অনেক ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু।পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বাবুল আক্তার একে তো পুলিশের এসপি, এর বাইরে তিনি চাঞ্চল্যকর মামলার বাদী।

এমন মাপের একজন কর্মকর্তাকে মধ্য রাতে বাসা থেকে ডেকে আনার মধ্যে বিশেষ কিছু ইঙ্গিত করে। নইলে দিনের বেলাতেও তাকে ডাকা যেত। প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।

পরে এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনাটি চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় ফেলে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।